কেন্দ্রীয় সরকার দেশের পিছিয়ে পড়া অংশের জনগণের কল্যাণে কাজ করছে : কেন্দ্রীয় প্রতি মন্ত্রী

আগরতলা, ৫ জানুয়ারি (হি. স.) : কেন্দ্রীয় সরকার দেশের পিছিয়ে পড়া অংশের জনগণের কল্যাণে কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সারা দেশের সাথে ত্রিপুরা রাজ্যেরও জাতি, জনজাতি, অন্যান্য পশ্চাদপদ শ্রেণী ও সংখ্যালঘু অংশের জনগণের উন্নয়নে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের সূচনা করেছেন। সারা দেশে সবকা সাথ, সবকা বিকাশ নীতিতে এই সমস্ত প্রকল্প রূপায়িত হচ্ছে। গুর্খাবস্তিস্থিত জনজাতি কল্যাণ দপ্তরের কনফারেন্স হলে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে আজ কেন্দ্রীয় সামাজিক ন্যায় ও ক্ষমতায়ন প্রতিমন্ত্রী রামদাস আটাওয়ালে একথা বলেন।

তাঁর কথায়, ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষ থেকে এখন পর্যন্ত ত্রিপুরার তপশিলি জাতিভুক্ত ২১ হাজার ৪৬২ জন ছাত্রছাত্রীকে পোস্টমেট্রিক স্কলারশিপ দেওয়া হয়েছে। এজন্য ৪২.২২ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। ১০ হাজার ছাত্রছাত্রীকে প্রিমেট্রিক স্কলারশিপ দেওয়া হয়েছে। এজন্য ২ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা ব্যয় হয়েছে। তেমনিভাবে অন্যান্য অংশের পিছিয়ে পড়া জনগণের উন্নয়নেও কেন্দ্রীয় সরকার সমভাবে কাজ করে গেছেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী জনধন যোজনায় ২০১৪ সাল থেকে ত্রিপুরার ৯ লক্ষ ৪২ হাজার দুঃস্থ পরিবারকে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মুদ্রা যোজনায় ২০১৫ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ত্রিপুরার ২৩ লক্ষ ৭৯ হাজার দুঃস্থ ব্যক্তিকে স্বল্প সুদে ঋণ দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনায় ২ লক্ষ ৮৪ হাজার পরিবারকে বিনামূল্যে গ্যাস সিলিন্ডার দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী জনআরোগ্য যোজনায় ১ লক্ষ ৯৩ হাজার পরিবার সুবিধা পেয়েছে।

তাঁর দাবি, আজ সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা, এসসি, এসটি, ওবিসি কল্যাণ দপ্তরের আধিকারিকদের সাথে এই অংশের জনগণের উন্নয়ন কর্মসূচি নিয়ে এক পুনপর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার পর্যালোচনা থেকেই এই সমস্ত তথ্যগুলি জানা যায়। এই সমস্ত তথ্য থেকে এটা পরিষ্কার যে এই পাঁচ বছরে ত্রিপুরার আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া জনগণের জন্য যেরূপ উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন হয়েছে বিগত আর কোনও সরকারের সময়ে এত অল্প সময়ে বিপুল পরিমাণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন হয়নি।

তিনি বলেন, বর্তমানে ত্রিপুরার সামাজিক উত্থানও ব্যাপকভাবে ঘটেছে। যারজন্য বিভিন্ন সামাজিক অপরাধও কমেছে। বাল্য বিবাহ রোধ হয়েছে। নেশামুক্ত আত্মনির্ভর ত্রিপুরা গড়ে উঠছে। ত্রিপুরার বয়স্ক ব্যক্তিদের ও দিব্যাঙ্গজনদের উন্নয়নের প্রসঙ্গে তিনি জানান, ত্রিপুরায় বর্তমানে বয়স্ক ব্যক্তিদের সুরক্ষার জন্য ৪টি হোম রয়েছে।
কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী জানান, কেন্দ্রীয় সরকার থেকে বয়স্ক ব্যক্তিদের সুরক্ষার জন্য ত্রিপুরার প্রতিটি জেলায় ১টি করে বৃদ্ধাশ্রম গড়ে তোলার জন্য সহায়তা দেওয়া হবে। এজন্য তিনি বিভিন্ন এনজিওকে এই কর্মসূচি বাস্তবায়নে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। ত্রিপুরার ১১ হাজারেরও বেশি দিব্যাঙ্গজন ব্যক্তিদের বিভিন্ন চলন সামগ্রী দিয়ে সহায়তা দেওয়া হয়েছে বলেও তিনি সাংবাদিকদের জানান।তাঁর বক্তব্য, সার্বিকভাবে ত্রিপুরার জনগণের আর্থিক অবস্থার উন্নয়নে এই ৫ বছরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করে গেছেন। আগামীদিনেও আরও নতুন নতুন প্রকল্প উদ্ভাবন করে ত্রিপুরার উন্নয়নে কাজ করা হবে। সারা দেশের মধ্যে ত্রিপুরাকে একটি আদর্শ রাজ্য হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করা হবে। আধুনিক প্রযুক্তি বিদ্যা কাজে লাগিয়ে ত্রিপুরায় আরও উন্নত পাইলট প্রজেক্ট কার্যকরি করা হবে। এইসব কর্মসূচি রূপায়ণের জন্য তিনি ত্রিপুরার জনগণকে সরকারের পাশে থাকার আহ্বান জানান। ড. বি আর আম্বেদকরের আদর্শ, নীতি অনুসরণ করে আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া জনগণের কল্যাণে আরও উন্নত প্রকল্প রূপায়ণের চিন্তা ভাবনাও করা হচ্ছে। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *