নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৭ ডিসেম্বর৷৷ বিগত দিনের সমস্ত রেকর্ড ও কর্মচারীদের প্রত্যাশাকেও ছাপিয়ে গিয়ে এক ধাপে ১২ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা ঘোষণা করার জন্য মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা নেতৃত্ত্বাধীন রাজ্য সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছেন ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা সাংসদ বিপ্লব কুমার দেব৷ কর্মচারী স্বার্থে এই বলিষ্ঠ পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য ফোনে মুখ্যমন্ত্রী ও উপ-মুখ্যমন্ত্রীর সাথে কথা বলেন এবং ধন্যবাদ জানান তিনি৷ সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে সমস্ত নিয়মিত সরকারী কর্মচারী, পেনশনার সহ অন্যান্য কর্মচারীরাও এর সুফল পাবেন৷ এর ফলে, ২০১৮ থেকে এ যাবদ, কেন্দ্রীয় সরকারী কর্মচারীদের সাথে রাজ্যের কর্মচারীদের ডিএ-র ব্যবধান নেমে দাঁড়ালো মাত্র ৯ শতাংশ৷ করোনা পরিস্থিতিতে ৩ শতাংশ ও দ্বিতীয় ধাপে ৫ শতাংশ সহ বর্তমান সরকারের সময়ে ২০ শতাংশ মহার্ঘ্য ভাতা পেলেন রাজ্যের সরকারী কর্মচারী ও পেনশনাররা৷
উল্লেখ্য ২০২২-২৩ অর্থবছরের সর্বশেষ বাজেটেই অর্থ মন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মণ সরকারি কর্মচারীদের খাতে এর জন্য পর্যাপ্ত অর্থ সংস্থান রেখেছিলেন৷ বিপ্লব কুমার দেব উল্লেখ করেন, ভারতীয় জনতা পার্টি মানুষের প্রত্যাশা ও প্রতিশ্রুতি পূরণে দায়বদ্ধ৷ দেশের যশস্বী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দিশা নির্দেশনায় ত্রিপুরা সরকার সামাজিক ভাতা ২ হাজার টাকা থেকে শুরু করে সমস্ত নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির ১০০ শতাংশ পূরণ করাই শুধু নয়, এর চাইতেও অতিরিক্ত অনেক কাজ করেছে৷ এই বর্ধিত মহার্ঘ ভাতার সুফল শুধু মাত্র কর্মচারীরাই নয়, বাজার ও অর্থনীতি চাঙ্গা হলে সাধারণ মানুষও এর ইতিবাচক সুফল পাবেন৷
কমিউনিস্টদের ভূমিকার নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, করোণা পরিস্থিতিতে হিমশিম অবস্থায় যখন বিভিন্ন রাজ্য সহ কমিউনিস্ট শাসিত কেরালাতেও কর্মচারীদের প্রায় ৫০ শতাংশ বেতন কেটে নেওয়া হচ্ছিল, তখন এই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও ত্রিপুরা সরকার রাজ্যের শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন কাটার বদলে ৩ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা দিয়ে গোটা দেশে প্রশংসা কুড়িয়েছিলো৷ কিন্তু রাজনৈতিক স্বার্থ সিদ্ধির লক্ষ্যে কমিউনিস্টরা এর জন্য একটি প্রশংসা বাক্যও উচ্চারণ করেনি৷ উপরন্তু নানা কায়দায় মানুষকে বিভ্রান্ত করতে প্রচেষ্টা চালায়৷ বাজেটে অর্থ সংস্থান না থাকা সত্ত্বেও, সংকীর্ণ রাজনৈতিক স্বার্থ আদায়ে, নানা কায়দায় কর্মচারীদের অসত্য প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিভ্রান্ত ও বঞ্চিত করে রাখা হয়েছিল৷
ত্রিপুরা সরকারের এই উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপের ফলে কর্মচারীমহলের স্বতঃস্ফূর্ততার পাশাপাশি গোটা রাজ্যে যখন একটা আনন্দ আবহ বিরাজ করছে, তখন আবারো গণতন্ত্র উদ্ধারের ব্যানারে কংগ্রেস ও সিপিআইএম আনুষ্ঠানিক ভাবে এক হয়ে প্রতিবাদের নামে রাজ্যে প্রবাহমান উন্নয়নধারায় প্রতিবন্ধকতা তৈরীর অপপ্রয়াস করছে৷ দীর্ঘ সময়, ম্যাকি রাজনৈতিক বিরোধীতার নাটক মঞ্চস্ত করে, পর্দার আড়ালের বাম কংগ্রেস মিতালি এখন জন সমক্ষে প্রকাশ্য৷ এভাবেই, খুবই সস্তায় রাজ্যের মানুষকে আস্থা ও বিশ্বাসকে অপমান করে রেখেছিলো তারা৷ আর তাই, বিগত দিনে কংগ্রেসের প্রকাশ্য বিরোধ ও ব্যক্তি স্বার্থ লাভালাভে বামেদের বশ্যতা স্বীকার, এই রাজ্যে কমিনিষ্টদের ক্ষমতায় বসিয়ে রেখে বিরোধী দলের কর্মী সমর্থকদের জীবন হানি সহ চির বঞ্চনার মাধ্যমে ভবিষ্যৎ অন্ধকারে নিমজ্জিত করে রেখেছিল৷ সম্প্রতি ঘটনাক্রম থেকে এখন রাজ্যের মানুষের কাছে তা স্পষ্ট৷ কমিউনিস্ট ও কংগ্রেসের এই ন্যাতিবাচক পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানান শ্রী দেব৷ পাশাপাশি তাদের শুভ বুদ্ধি উদয় হোক বলেও, আশা ব্যক্ত করেন৷
উল্লেখ্য প্রথম ধাপে ৩ শতাংশ ও দ্বিতীয় ধাপে ৫ শতাংশ সহ আজ ঘোষিত ১২ শতাংশ মিলিয়ে বর্তমান সরকারের সময়ে ২০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা পেলেন রাজ্যের সরকারী কর্মচারী ও পেনশনাররা৷ ১ ডিসেম্বর থেকে তার লাভ পাওয়া যাবে৷ বর্তমান সরকার কর্মচারীদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কতটা আন্তরিক তা এর মাধ্যমে প্রমাণিত৷ স্বচ্ছ নিয়োগ নীতির পাশাপাশি বর্তমান সরকারের সময়ে ইতিমধ্যেই প্রায় ৫.৫ লক্ষের অধিক কর্মসংস্থান হয়েছে৷ নিয়মিত পদে বড় মাত্রায় নিয়োগ প্রক্রিয়াধীন৷ কিন্তু কমিউনিস্টরা নানা কায়দায় রাজ্যের শিক্ষক কর্মচারীদের বঞ্চিত করে এসেছে৷ প্রতিশ্রুতি খেলাপ করাই ছিল তাঁদের মজ্জাগত৷ কিন্তু বর্তমান শাসক দল ও সরকার রাজ্যের মানুষের প্রত্যাশার প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও প্রতিশ্রুতি পূরণে অঙ্গীকারবদ্ধ৷ জনতার কল্যানে বিজেপি দল ও সরকার সর্বদা সচেষ্ট৷
উল্লেখ্য, এদিনের রাজ্য সরকারের এই বলিষ্ঠ সিদ্ধান্তের ফলে, ১২ শতাংশ ডিএ/ডিআর এর সুবিধা পাবেন৷ এর পাশাপাশি পার্ট টাইম ইন্সট্রাক্টর , কমিউনিটি হেলথ গাইড এর মত পদে কর্মরতদের সান্মানিক এক ধাপে প্রায় ৫০ শতাংশ বেড়েছে৷ এছারাও ডিআরডব্লিউ, পার্মানেন্ট লেবারার, মান্থলি রেটেড ওয়ার্কার্স, প্রধান পুরোহিত, গ্রাম্য চৌকিদার সহ ১৭ ক্যাটাগরির কর্মীরাও উপকৃত হয়েছেন৷ এর ফলে উপকৃত হবেন ১,০৪,৬০০ জন নিয়মিত কর্মচারী ও ৮০,৮০০ পেনশন প্রাপক পরিবার৷ এতে রাজ্য সরকারের অতিরিক্ত ব্যয় হবে ১,৪৪০ কোটি টাকা৷ নতুন বছরের আগেই কল্পতরু ত্রিপুরা সরকার৷