লক্ষ্মীপুর (কাছাড়, অসম), ২৫ ডিসেম্বর (হি.স.) : কাছাড় জেলার লক্ষ্মীপুর মহকুমার অন্তর্গত জিরিঘাটে নির্মীয়মাণ একটি বাড়ির ওপর লাগোয়া টিলাভূমি ধসে এক মহিলা সহ দুই শ্রমিকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। হতভাগ্য দুই শ্রমিককে জিরিঘাটের কদমটিলা গ্রামের কৃষ্ণ রায় (২৯) এবং জিরিঘাটের বাহাদুরপুরের পদ্মা মুড়া ওরফে সাজন্তি বলে শনাক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি গুরুতরভাবে আহত অবস্থায় তিনজনকে উদ্ধার করা হয়েছে। আহতদের শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভরতি করা হয়েছে।
দিঘলী বাহাদুরপুর গ্ৰাম পঞ্চায়েতের সভাপতি সুবীর সরকারের কাছে জানা গেছে, জিরিঘাট কলোনির বাসিন্দা জনৈক রমণ দাসের গৃহ নির্মাণকাজ চলাকালে আজ রবিবার শেষ বিকেল প্রায় পাঁচটার দিকে ভয়ানক এই ভূমিধসের ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। বাড়ি চত্বরে গৃহ নির্মাণের কাজ চলছিল। আচমকা লাগোয়া টিলা থেকে ধস নেমে কর্তব্যরত মোট চার শ্রমিক এবং গৃহকর্তা মাটিচাপা পড়েন। এর মধ্যে কৃষ্ণ রায়ের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আরও তিন শ্রমিককে গুরুতর জখম অবস্থায় উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু নিখোঁজ ছিলেন সাজন্তি নামের এক মহিলা শ্রমিক। পরে রাতের দিকে তার মৃতদেহ মাটির নীচ থেকে উদ্ধার করেন পুলিশ ও স্থানীয় জনতা। সেখানে কাজের তদারকিতে অবস্থানরত গৃহকর্তা রমণ দাসকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।
রমণ দাসের গৃহ নির্মাণ করতে বাড়ির ভেতরে বিদ্যমান টিলাভূমি কাটার কাজ চলছিল। দু’টি এসকেকেভেটর দিয়ে মাটি কাটার কাজ শুরু করা হয়। এর মধ্যে ঘটে যায় এই অঘটন। মাটি কাটার সময় বিকেল প্রায় পাঁচটার দিকে হঠাৎ টিলা ধসে পড়ে। রমণ দাস, কৃষ্ণ রায়, সাজন্তি মুড়া সহ মোট পাঁচজন মাটির নীচে চাপা পড়েন। রমণ এবং আরও দু-জনের কোমড় পর্যন্ত ধসে আটকে পড়ায় তাদের তড়িঘড়ি জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু বাকি দু’জন মাটি চাপায় নিখোঁজ হয়ে যান। সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয়রা উদ্ধার কাজে নেমে ঘণ্টা-খানেকের মধ্যে সন্ধ্যার দিকে কৃষ্ণ রায়ের নিথর দেহ উদ্ধার করেন স্থানীয় লোকজন। এর প্রায় দু-ঘণ্টা পর উদ্ধার হয় পদ্মা মুড়ার নিথর দেহ।
উদ্ধারকৃত দুটি মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ। ভূমিধসের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গোটা জিরিঘাট এলাকায় চাঞ্চল্য বিরাজ করছে।