হাফলঙ (অসম), ৪ ডিসেম্বর (হি.স.): নিখিল ভারত বঙ্গ সাহিত্য সন্মেলনের মুখ্য উদ্দেশ্যই হচ্ছে সকলের ভাষা সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকার পাশাপাশি ভাষা সংস্কৃতির উন্নয়নে কাজ করে যাওয়া। হাফলঙে অনুষ্ঠিত নিখিল ভারত বঙ্গ সাহিত্য সন্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে উপরোক্ত মন্তব্য করেন বরাক উপত্যকার ভাষা গবেষক সংস্কৃতিবিদ তথা অধ্যাপক ডাঃ অমলেন্দু ভট্টাচার্য।
নিখিল ভারত বঙ্গ সাহিত্য সন্মেলনের শতবর্ষ পূর্তি উপলক্ষে রবিবার বেলা ১১ টায় হাফলং জেলা গ্রন্থাগার প্রেক্ষাগৃহে সাহিত্য অধিবেশনে ভাষা গবেষক সংস্কৃতিবিদ তথা অধ্যাপক ডাঃ অমলেন্দু ভট্টাচার্য বলেন, নিখিল ভারত বঙ্গ সাহিত্য সন্মেলনের উদ্দেশ্য হচ্ছে আমরা যে অঞ্চলে থাকব সেই অঞ্চলের ভাষা সংকৃতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকার পাশাপাশি ভাষা সংস্কৃতির উন্নয়নে কাজ করে যাব। নিখিল ভারত বঙ্গ সাহিত্য সন্মেলনের শতবর্ষ পূর্তি অনুষ্ঠানে হাফলং জেলা গ্রন্থাগার ভবনে এদিন প্রথমে দীপ প্রজ্জ্বলন করে অনুষ্ঠানের সূচনা করে শতবর্ষে নিখিল ভারত বঙ্গ সাহিত্য সন্মেলন ও ডিমা হাসাও জেলায় বাংলা সাহিত্য চর্চা শীর্ষক সাহিত্য অধিবেশনে মুখ্য বক্তা হিসেবে উপস্থিত থেকে এ অঞ্চলের বাংলা সাহিত্যের সঙ্গে ডিমাসা রাজত্ব ও ডিমাসা রাজাদের ইতিবৃত্ত তুলে ধরেন। তিনি বলেন হিড়ম্ব রাজসভা এক বৈচিত্রময় রাজসভা ছিল। এখানে রাজারা গান রচনা করেছিলেন। হিড়ম্ব রাজসভায় গীতি নাট্য চর্চা হত।
ডাঃ অমলেন্দু ভট্টাচার্য বলেন, এ অঞ্চলে বাংলা সাহিত্যের চর্চা শুরু করে ছিলেন হিড়ম্ব রাজারা। সাহিত্য চর্চায় অভিযাত ছিল হিড়ম্ব রাজসভা। তিনি বলেন বাংলা সাহিত্য চর্চায় রানী চন্দ্র প্রভা দেবীর প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞ থাকা উচিত। বাংলা সাহিত্য চর্চার ক্ষেত্রে রানী চন্দ্র প্রভাদেবীই আদি মাতা বলে মন্তব্য করেন ভাষা গবেষক সংস্কৃতিবিদ তথা অধ্যাপক ডাঃ অমলেন্দু ভট্টাচার্য। এদিন নিখিল ভারত বঙ্গ সাহিত্য সন্মেলনের শতবর্ষ পূর্তি উদযাপন ও নিখিল ভারত বঙ্গ সাহিত্য সন্মেলনের ত্রয়োদশ অধিবেশনে প্রথম পর্যায়ে হাফলং শাখার মুখপত্র নিসর্গ উন্মোচন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ডাঃ অমলেন্দু ভট্টাচার্য নিখিল ভারত বঙ্গ সাহিত্য সন্মেলনের হাফলং শাখার সভাপতি অধ্যাপক শ্যামানন্দ চৌধুরী সাহিত্যিক বহিম চন্দ্র লাংথাসা আ ফা ম ইকবাল ও জেলার প্রবীন সাংবাদিক সূর্য থাওসেন।
এদিন অনুষ্ঠানের শুরুতেই মোদের গরব মোদের আশা সমবেত সঙ্গীত পরিবেশন করেন নিখিল ভারত বঙ্গ সাহিত্য সন্মেলন হাফলং শাখার সদস্য বৃন্দ। তারপর স্বাগত ভাষণ প্রদান করেন শাখা সচিব রজত কান্তি নাথ। অধ্যাপক শ্যামানন্দ চৌধুরী সভার উদ্দেশ্য ব্যাখা করেন বক্তব্য রাখেন। এদিন নিখিল ভারত বঙ্গ সাহিত্য সন্মেলন শতবর্ষ পূর্তি উপলক্ষে ও হাফলং শাখার ত্রয়োদশ অধিবেশনে সংবর্ধনা প্রদান করা হয় মাহুরের কাজল কান্তি দাস সাহিত্যিক বহিম চন্দ্র লাংথাসা ও আ ফা ম ইকবাল পঙ্কজ কান্তি মালাকার সহ জেলার পাঁচজন সাংবাদিক যথাক্রমে সূর্য থাওসেন শিবন প্রসাদ নাথ বিপ্লব দেব পঙ্কজ দেব ও সামসুল আলমকে নিখিল ভারত বঙ্গ সাহিত্য সন্মেলনের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। তাছাড়া এদিন বিকেল চারটা থেকে হাফলং জেলা গ্রন্থাগার প্রেক্ষাগৃহে স্থানীয় শিল্পীরা সঙ্গীত পরিবেশন করার পাশাপাশি লামডিংয়ের সঙ্গীত শিল্পী অহেলী দাস সঙ্গীত পরিবেশন করেন।

