নলহাটিতে স্কুলের বেঞ্চ পাচারের অভিযোগে বিক্ষোভ

নলহাটি, ৯ নভেম্বর (হি. স.) : ছাত্রদের জন‍্য স্কুল বেঞ্চ পাচারের অভিযোগ তুলে ক্ষোভে ফেটে পড়েন এলাকাবাসী। তাঁদের দাবি, আগেও স্কুল থেকে ল‍্যাপটপ ও কম্পিউটার ডালা চুরি গেছে। এবার বেঞ্চ চুরি। ঘটনাটি ঘটেছে গত শুক্রবার রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ নলহাটি এক ব্লকের কোগ্রাম উচ্চবিদ্যালয়ে। শুক্রবারের পর রবি, সোমবার ও মঙ্গলবার টানা ছুটি থাকায় স্কুল বন্ধ ছিল। বুধবার স্কুল খুলতেই কোগ্রাম ও পাশের সেরগ্রাম থেকে স্থানীয় মানুষ ও অভিভাবকেরা বিক্ষোভে সামিল হন। ঘটনাস্থলে নলহাটি থানার পুলিশ ছুটে এসে জনতার উত্তেজনা প্রশমিত করে পরিস্থিতি সামাল দেয়।

এক অভিভাবক তথা এলাকার বাসিন্দা মনসুর সেখ বলেন, শুক্রবার রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ স্কুলের একটি বেঞ্চ কাজল সেখ তার বাইকের পেছনে চাপিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন এবং ওই স্কুলের নাইট গার্ড অনিল মাল বেঞ্চটি পেছন থেকে ধরে নিয়ে যাচ্ছিলেন। তার পেছন পেছন ছেলেরা ছুটে যাচ্ছিলেন। বেঞ্চটি কাজল সেখের বাড়ি নিয়ে যাওয়া হয়। ঘটনাচক্রে কাজল সেখ কোগ্রাম উচ্চ বিদ‍্যালয়ের পরিচালন সমিতির সভাপতি আলি আহমেদ ওরফে কচির ভাই। এব‍্যাপারে কাজল সেখের ভাই তথা সিভিক পুলিশ গ্রামবাসীদের হুমকি দেয় বলে এলাকাবাসির দাবি। ঘটনার পর স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতি আলি আহমেদ সাহেবকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, আমি ঘটনাটি শুনে আমার ভাইকে বকেছি। ভাই নাইট গার্ডের কাছে দেড় হাজার টাকা পেত। সেই কারণে বেঞ্চটা জিম্মি রাখতে চাওয়াটা তার অন‍্যায় হয়েছে। নাইটগার্ডের বিরুদ্ধে এর আগেও অনেক অভিযোগ ওঠে। তার জন‍্য একবার তাকেও সরানো হয়। আমি কোনো অন‍্যায় বরদাস্ত করি না। আজকে এলাকার লোকেরা স্কুলে চড়াও হয়। একটা কাজে ফেঁসে যাওয়ায় স্কুলে ডাকা মিটিংয়ে যেতে পারি নি। কালকে মিটিং হবে। সব শুনে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এদিকে ওই নাইটগার্ডকে স্কুলে আসতে মানা করা হয়েছে। কিন্তু এখানে এলাকাবাসির প্রশ্ন একই কাজে দুই জন দোষী। এক নাইট গার্ড এবং স্কুলের সভাপতি আলি আহমেদের ভাই কাজল সেখ। তাই একজনকে ছেড়ে অন‍্যজনকে যেন শাস্তি না দেওয়া হয়। পুরো ব‍্যাপারটা নিয়ে স্কুলের নাইটগার্ড অনিল মালকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, আমি এই সমস্ত অভিযোগ সত‍্য মিথ‍্যা কিছুই বলবো না। কালকে মিটিং আছে। সেখানে যা বলার বলবো। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মহম্মদ কাপাতুল্লাহ দুই মাস হল দায়িত্ব পেয়েছেন। তিনি বলেন, বুধবার এই বেঞ্চ চুরি যাওয়া নিয়ে বৈঠক ছিল। কিন্তু সভাপতি আসতে না পারায়, বৃহস্পতিবার মিটিং ডাকা হয়েছে। সেখানে অভিভাবকরা তাঁদের কথা বলবেন। তারপর পরিচালন সমিতি ব‍্যবস্থা নেবে। এলাকার তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি আব্দুল আমিন বলেন, খবর পেয়ে আমি গেছিলাম। সভাপতি বৃহস্পতিবার আসবেন। তারপর বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কোনো সমস‍্যা নেই। সব মিটে যাবে।