BRAKING NEWS

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে রুদ্ধশ্বাস জয় ভারতের

মেলবোর্ণ, ২৩ অক্টোবর (হি.স.) : টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ঐতিহাসিক জয় ভারতের। প্রথম ম্যাচে কোহলির ব্যাটে ভর করে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ৪ উইকেটে জয় ছিনিয়ে নিল ভারত। কোহলির বুদ্ধিদিপ্ত ব্যাটিং-এ গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে লজ্জাজনক হারের বদলা নিল ভারত। ৫৩ বলে ৮২ রান করে ম্যাচের সেরা হলেন বিরাট কোহলি।

রবিবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে খেলতে নামে ভারত । আবহাওয়ার পূর্বাভাস ছিল ভারত পাক ম্যাচে বাঁধা সৃষ্টি করে পারে বৃষ্টি। কিন্তু বৃষ্টি না হলেও মেলবোর্ণের আকাশ ছিল মেঘলা। তাই ফ্যাক্টর ছিল টসে জেতা। মেলবোর্নে ম্যাচ শুরুর আগেই ভারতের পক্ষে খুশির খবর। টসে জিতলেন রোহিত শর্মা। যে হেতু বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে ম্যাচে, তাই আগে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধা করেননি রোহিত।

টসে জিতে পাকিস্তানকে প্রথমে ব্যাট করতে পাঠায় ভারত। ভারতের পেস মোকাবিলা করতে ওপেন করতে নামে বাবর ও রিজওয়ান। আবহাওয়াকে কাজে লাগিয়ে প্রথম ওভারে আগ্রাসী বোলিং করেন ভুবনেশ্বর। মাত্র ১ রান দিয়ে প্রথম ওভার শেষ করেন ভুবনেশ্বর। দ্বিতীয় ওভারে অর্শদীপকে বল করতে পাঠায় রোহিত শর্মা। শুরুতেই বাবরের উইকেট তুলে নেয় অর্শদীপ। দ্বিতীয় ওভার বল করতে এসে অর্শদীপ তুলে নেয় রিজওয়ানের উইকেট। রিজওয়ান আউট হন ব্যাক্তিগত চার রানে। ৪ ওভার শেষে পাকিস্তানের স্কোর ছিল ২ উইকেটে ১৫ রান। ম্যাচের শুরুতেই ভুবনেশ্বর ও অর্শদীপের স্যুইং-এ নাস্তানবুদ হন পাকিস্তানের ব্যাটাররা। কিছুটা পেস ঝড় সামলে হাল ধরেন মাসুদ ও ইফতিকার। ৬ ওভারের শেষে ২ উইকেট হারিয়ে রান ছিল ৩২। ৫০ রানে পৌঁছতে ৯ ওভার অপেক্ষা করতে হয় পাকিস্তানকে। কিন্তু তারপর ঝড় তোলেন ইফতিখার আহমেদ। অক্ষর প্যাটেলের ওভারে তিনটে ছক্কা হাঁকান ইফতিকার। মোট ২১ রান ওঠে সেই ওভারে। এর পরই মাসুদ ও ইফতিকারের ছন্দময় ব্যাটিং-এ আঘাত হানেন মহম্মদ সামি। ১৩ ওভারের মাথায় সে তুলে নেয় ইফতিকারের উইকেট। ৩৪ বলে ৫১ রান রানে এলবি ডাব্লিউ হন তিনি। দলের রান দাঁড়ায় ৩ উইকেটে ৯১। ইনিংসে ছিল ৪টি ছয় এবং ২টি চার। দ্রুত দুই উইকেট পড়ার পর আবার দলকে লড়াইয়ে ফেরান পাক ব্যাটার। তৃতীয় উইকেটে ৭৬ রান যোগ হয়। কিন্তু ইফতিখার আউট হতেই পরিকল্পনাহীন ব্যাটিং বিপদে ফেলে পাকিস্তানকে। দুটো বাজে শট খেলে উইকেট ছুড়ে দেন শাদাব খান (৫) এবং হায়দার আলি (২)। দুই ওভারে ৩১ রান তোলার পরই পরের ৭ বলে ৩ উইকেট হারায় পাকিস্তান। ১৮ ওভার শেষে পাকিস্তানের রান সংখ্যা দাঁড়ায় ৭ উইকেটে ১৩৫। শেষ ওভারে বল করতে যান ভুবনেশ্বর কুমার। তুলে নেন আফ্রিদির উইকেট। ২০ ওভার শেষে পাকিস্তানের রান দাঁড়ায় ৮ উইকেটের বিনিময়ে ১৫৯ রান। জোড়া অর্ধশতরান করেন ইফতিখার আহমেদ এবং শান মাসুদের। ৫১ করেন ইফতিখার, ৫২ রানে অপরাজিত থাকেন শান। পাকিস্তানের ইনিংসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন মাসুদ। তিনটে করে উইকেট নিয়েছেন অর্শদীপ সিং এবং হার্দিক পাণ্ডিয়া।

১৬০ রানের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ইনিংসের সূচনা করতে মাঠে নামেন কে এল রাহুল ও রোহিত শর্মা। ইনিংস শুরুর দ্বিতীয় ওভারেই উইকেট পতন হয় ভারতের। ৪ রান করে নাসিমের বলে আউট রাহুল। ভারতের রান তখন ১ উইকেটের বিনিময়ে ৭ রান। এরপরই স্লিপে সহজ ক্যাচ দিয়ে বিপক্ষের হাতে উইকেট তুলে দেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা। মাত্র ৪ রান করে রোহিত আউট হন রউফের বলে। ২ উইকেটের বিনিময়ে ভারতের রান দাঁড়ায় ২ উইকেটে ১০। ভারতের তৃতীয় উইকেটের পতন ঘটে ৫ ওভারে। রউফের বলে ১০ বলে ১৫ রান করে আউট হন সূর্যকুমার যাদব। ভারতের রান দাঁড়ায় ৩ উইকেটে ২৬। চাপের মুখে পরে যায় ভারত। পরের ওভারের শেষ বলে রান পতন হয় চতুর্থ উইকেটের। রান আউট হন অক্ষর প্যাটেল। ভারতের রান দাঁড়ায় ৬ ওভার শেষে ৪ উইকেটের বিনিময়ে ৩১। ১০ ওভার শেষে ভারতের রান দাঁড়ায় ৪ উইকেটে ৪৫ রান। জয়ের জন্য ভারতের দরকার ১০ ওভারে ১১৫ রান। ভারতের একের পর এক নির্ভরযোগ্য ব্যাটারদের উইকেটের পতন হলেও চীনের প্রাচীরের মতন এক দক ধরে রাখেন ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক বিরাট কোহলি। ১৫ ওভারে কোহলি ৫০ রান করেন মাত্র ৪৩ বলে। পরে উইকেট হারায় হার্দিক পাণ্ডিয়া ও দীনেশ কার্তিকের।

একটা সময় মনে হচ্ছিল ম্যাচ ভারতের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। কিন্তু বিরাট ধৈর্য না হারিয়ে ঠান্ডা মাথায় ব্যাটিং চালিয়ে যান মেলবোর্নের মাঠে। শেষ ওভারে ভারতের প্রয়োজন ছিল ১৬ রান। নওয়াজের প্রথম বলেই উইকেট হারায় হার্দিক পাণ্ডিয়ার। আবার চাপে পড়ে যায় ভারত। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি পাকিস্তানের। বোলিং-এ খেই হারিয়ে ফেলেন নওয়াজ। সেই সুযোগে ১৬০ এর লক্ষ্য মাত্রা পেরিয়ে যায় ভারত। বিরাট কোহলি ৫৩ বলে ৮২ রান করেন। এর মধ্যে রয়েছে ৪ টি ৬ এবং ৬ টি ৪। ম্যাচের সেরা নির্বাচিত হন বিরাট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *