নিউ ইয়র্ক, ২২ অক্টোবর (হি.স.): লক্ষাধিক আরশোলা ও কয়েকশো পশুপাখি পুষে গ্রেফতার হলেন নিউ ইয়র্কের এক মহিলা । তাঁর হেফাজত থেকে উদ্ধার হল এক লক্ষ আরশোলা। পশুপ্রেমী এই মহিলা আরশোলার পাশপাশি বাড়িতে পুষতেন অন্যান্য বহু পশুপাশি। নিজের বাড়িটাকেই তিনি বানিয়ে ফেলেছিলেন এক চিড়িয়াখানা। আর এই পশুপ্রেমই কাল হল তাঁর। জোর করে নানান ধরনের প্রাণীকে আটকে রাখার অভিযোগে গ্রেফতার করা হল তাঁকে। ঘটনাটি ঘটেছে নিউ ইয়র্কে।
জানা গেছে, নিউ ইয়র্কের এই মহিলার নাম কারিন কিজ। ৫১ বছর বয়সি ওই মহিলা নিজেকে সমাজকর্মী এবং পশুপ্রেমী হিসাবে দাবি করেন। গোপণসূত্রে পাওয়া খবরের ভিত্তিতে নিউ ইয়র্কের পুলিশ গত মঙ্গলবার হানা দেয় কারিনের বাড়িতে। বাড়িতে গিয়েই চক্ষু চরকগাছ পুলিশকর্মীদের। তাঁর বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় ১ লক্ষ আরশোলা, নানান প্রজাতির ১৫০ টি পাখি, ১১৮টি খরগোশ, ১৫ টি বিড়াল, ৭টি কচ্ছপ এবং ৩টি সাপ। কারিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, পশুপাখি, কীট-পতঙ্গদের অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে জোর করে আটকে রেখেছিলেন তিনি। বাড়িময় ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল তাদের মলমূত্র। দুর্গন্ধের কারণে উদ্ধারকারীরা সেখানে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। এতটাই সেখানে দূষণ ছিল যে উদ্ধারকারীদের বিশেষ পোশাক পরে ওই বাড়িতে ঢুকতে হয়েছিল। জোর করে পশুপাখিদের আটকে রাখার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে কারিনকে।
কারিনের ঘনিষ্টরা জানিয়েছেন, ছোটবেলা থেকেই তাঁর কীট-পতঙ্গ পশুপাখিদের নিয়েই থাকতে ভালবাসত। বিভিন্ন জায়গা থেকে সংগ্রহ করতেন বিভিন্ন ধরনের প্রানী। নিকটবর্তী একটি পশু সংগ্রহশালা বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে সেখানকার পশুপাখিগুলি যাতে ‘ঘরছাড়া’ না হয়ে যায়, তাই তাদের আশ্রয় দিয়েছিলেন নিজের বাড়িতে।
স্থানীয় প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, কারিন কিজের বাড়িতে কীট-পতঙ্গ পশুপাখি রাখার মতন প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো ছিল না। অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের মধ্যে প্রানীগুলোকে জোর করে আটকে রাখা হয়েছিল। সেখানে আর কয়েকদিন রাখলে প্রানীগুলির মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারত বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তাঁরা। এই ঘটনায় কারইনকে গ্রেফতার করেছে নিয় ইয়র্কের পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলি প্রমাণিত হলে তাঁর জেল পর্যন্ত হতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে। কারিনের বাড়ি থেকে পশুপাখিগুলি উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়ার জন্য পশু চিকিৎসক এবং বিশেষজ্ঞদের ডাকা হয়েছিল। তাঁরা আরশোলা, কচ্ছপ, সাপ, খরগোশ, পাখি এবং বিড়ালগুলিকে নিয়ে গিয়েছেন।কারিনের বাড়িতে যে এত সংখ্যক পশুপাখি, কীট পতঙ্গ রয়েছে তা জানতেন না বলে দাবি করেছেন প্রতিবেশীরা।