ত্রিপুরায় সমস্ত উন্নত চিকিত্সা পরিষেবা প্রদানে পরিকাঠামো উন্নয়নে সরকার অগ্রাধিকার দিয়েছে : মুখ্যমন্ত্রী

আগরতলা, ১৫ অক্টোবর (হি. স.) : ত্রিপুরার স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নয়নে সরকার নিরন্তর প্রয়াস জারি রেখেছে। ত্রিপুরার অভ্যন্তরেই সমস্ত ধরনের উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার জন্য স্বাস্থ্য পরিকাঠামোগুলির উন্নয়নে সরকার অগ্রাধিকার দিয়েছে। ত্রিপুরার প্রত্যেকটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রকে হেলথ অ্যান্ড ওয়েলনেস সেন্টারে রূপান্তরের কাজ চলছে। আজ আগরতলার রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনের ২ নং হলে আয়ুষ্মান ভারত প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনার চতুর্থ বর্ষপূর্তি এবং আয়ুষ্মান ভারত ডিজিটাল মিশনের প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত রাজ্যভিত্তিক অনুষ্ঠানে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা।

তাঁর কথায়, আয়ুষ্মান ভারত প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনা সারা বিশ্বের মধ্যে অন্যতম একটি বৃহৎ স্বাস্থ্যবীমা প্রকল্প। এই প্রকল্পের সফল বাস্তবায়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিশ্বের দরবারে প্রশংসিত হয়েছেন। এই প্রকল্পে যোগ্য সুবিধাভোগী পরিবারকে চিকিৎসার জন্য বার্ষিক ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ক্যাশলেস সহায়তা প্রদান করা হয়, যা আর্থিকভাবে দুর্বল শ্রেণীর মানুষের জন্য চিকিৎসা পরিষেবার ক্ষেত্রে অনেকটাই স্বস্তি নিয়ে এসেছে।

এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্য পরিষেবার ক্ষেত্রে ত্রিপুরা অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় কোনও অংশেই পিছিয়ে নেই। ভালো পরিষেবার জন্য চিকিৎসক এবং রোগীর মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে উঠা অত্যন্ত জরুরি। সেই সঙ্গে চিকিৎসকদের উপর রোগী ও তার পরিজনদের আস্থা রাখতে হবে। বিশ্বাস রাখতে হবে তাদের চিকিৎসা পরিষেবার উপর। পাশাপাশি হাসপাতালে আসা রোগী ও তার পরিজনদের সাথে ভালো ব্যবহার করতে হবে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের।

ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজটিকে রিমস বা নিগ্রিমসের মতো করে মানোন্নয়ন করা, এইমস হাসপাতাল গড়া, ডেন্টাল কলেজ স্থাপনের বিষয়ে সরকারের প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি তাঁর ভাষণে মুখ্যমন্ত্রী সুস্থ শৈশব ও সুস্থ কৈশোর অভিযান কর্মসূচির সফল বাস্তবায়নে আশাকর্মী ও স্বাস্থ্যকর্মীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে বলেও অভিমত ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ত্রিপুরায় উন্নত স্বাস্থ্য পরিকাঠামো গড়ে তোলার বিষয়ে সরকার বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। আইজিএম এবং এজিএমসি হাসপাতালে স্থাপন করা হয়েছে অক্সিজেন প্ল্যান্ট, যা উত্তর পূর্বাঞ্চলের মধ্যে সর্ববৃহৎ। মহিলা ক্ষমতায়নে ত্রিপুরা সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ সম্পর্কেও মুখ্যমন্ত্রী এদিন তার বক্তব্যে তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠানে আয়ুষ্মান ভারত প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনার সাফল্যের এবং আয়ুষ্মান ভারত ডিজিটাল মিশনের উপর একটি তথ্যচিত্রও প্রদর্শিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে আয়ুষ্মান ভারত প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনায় উপকৃত সুবিধাভোগীদের সাথে মতবিনিময় করেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিকে, মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তরের লোগোর উদ্বোধন করা হয়েছে।

এদিন ত্রিপুরায় আয়ুষ্মান ভারত প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনায় জেলাস্তরে সফল বাস্তবায়নের জন্য বিভিন্ন জেলার ডিস্ট্রিক্ট প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সহ এই যোজনায় আওতাভুক্ত সুবিধাভোগীদের সংবর্ধিত করা হয়েছে। ত্রিপুরায় আয়ুষ্মান ভারত প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনা বাস্তবায়নে শ্রেষ্ঠ প্রকল্প রূপায়ণকারী জেলা, সর্বাধিক আয়ুষ্মান কার্ড ইস্যু, রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি করেছেন এমন আরোগ্য মিত্র ইত্যাদি বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাফল্যের নিরিখে পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে।

তাছাড়া আয়ুষ্মান ভারত ডিজিটাল মিশনের অধীনে সর্বাধিক আভা কার্ড ইস্যু, ন্যাশনাল কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স স্ট্যান্ডার্ড, লক্ষ্য কর্মসূচির সাফল্যের নিরিখে রাজ্যের বিভিন্ন স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানকেও পুরস্কৃত করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী সহ অন্যান্য অতিথিগণ তাদের হাতে পুরস্কার তুলে দিয়েছেন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *