করিমগঞ্জ (অসম), ১৫ অক্টোবর (হি.স.) : গার্হস্থ্য বিবাদ সম্পর্কিত সালিশি সভায় আপস মীমাংসার প্রায় ৩০ মিনিট পর করিমগঞ্জ জেলা সদর সংলগ্ন পশ্চিম কানিশাইলে জনৈক গৃহবধূ জাহানারা খানম চৌধুরীর মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। ঘটনাকে খুন বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে পুলিশ অভিযুক্ত স্বামী জিয়াউর রহমানকে আটক করছে।
করিমগঞ্জ শহর সংলগ্ন পশ্চিম কানিশাইলে গৃহবধূর মৃতদেহ উদ্ধারকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে! ঘটনাকে খুন সন্দেহ করে পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে করিমগঞ্জ সদর থানায় এফআইআর দায়ের করা হয়েছে ইতিমধ্যে অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করে সদর থানার পুলিশ আটক করেছে অভিযুক্ত স্বামী জিয়াউর রহমানকে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
প্রাপ্ত খবরে প্রকাশ, বিয়ের ছয় বছরের মাথায় স্বামীর ঘরে মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে উত্তর করিমগঞ্জের ফকিরবাজারের জাব্দা গ্রামের মকসুদ আহমেদ চৌধুরীর মেয়ে জাহানারা খানম চৌধুরীর। ছয় বছর আগে শহর সংলগ্ন পশ্চিম কানিশাইলের প্ৰয়াত আব্দুল হান্নানের ছেলে জিয়াউর রহমানের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল জাহানারার।
যৌতুকের দাবিতে স্বামীর ঘরে লাগাতার নির্যাতনের শিকার হতেন বলে অভিযোগ মেয়ের বাবার পরিবারের। এছাড়াও সন্তান না হওয়ায় স্বামী ও শ্বাশুড়ির হাতে নির্যাতিত হতেন গৃহবধূ! এ সব ঘটনাকে কেন্দ্র করেই গতকাল রাতে ঝগড়ার সূত্রপাত বলে জানান মেয়ের বাবার বাড়ির লোকেরা।
তাঁরা বলেন, গতকাল এ নিয়ে বিবাদ ঘটলে মেয়ের স্বামীর ঘরে উপস্থিত ছিলেন তাদের বিয়ের ঘটক আব্দুল শুকুর। তিনি রাত ১১টা নাগাদ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে চলে যান। সালিশি সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছিল, এই মেয়েকে আর তাঁরা রাখবেন না! ঘটক বলেছিলেন, রাতটা পার হোক সকাল হলে মেয়ের বাবার পরিবারের লোকদের এনে সমাধান করা হবে। এই বলে তিনি চলে আসেন রাত ১১টায়। তার ৩০ মিনিট পর গৃহবধূর বাবা তার মেয়েক ফোন করলেও কথা বলতে পারেনি! তখনি তাঁদের সন্দেহ জাগে! এর পর থেকেই তাঁরা ফোনে বারবার চেষ্টা করেও ফোন পাননি মেয়ের।
উপায়ন্তর হয়ে রাত ১২:১৭ মিনিটে মেয়ের শ্বাশুড়ির মোবাইলে ফোন করেন তাঁর বাবার বাড়ির লোকেরা। তখন শ্বাশুড়ি মনোয়ারা বেগম ফোনটা না ধরে প্রতিবেশী জনৈক মহিলা ফোন ধরে বলেন, আপনারা তাড়াতাড়ি এখানে আসুন, ফোনে বলা যাবে না। তৎক্ষণাৎ মেয়ের বাবার বাড়ির লোকেরা কানিশাইলে চলে যান। গিয়ে দেখতে পান মেয়ে তাঁর শয্যাকক্ষের বিছানার উপর মৃত অবস্থায় রয়েছে, পাশাপাশি ঘরের সিলিং ফ্যানে একটি উড়না ঝুলে রয়েছে।
খবর দেওয়া হয় সদর থানায়। খবর পেয়ে দলবল নিয়ে পুলিশ গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে প্রাথমিক তদন্ত সেরে আজ শনিবার ভোর পাঁচটা নাগাদ মৃতদেহ নিয়ে আসে করিমগঞ্জ সিভিল হাসপাতালে ময়না তদন্তের জন্য।
এদিকে মেয়ের স্বামী জিয়াউর রহমান, শ্বাশুড়ি মনোয়ার বেগম সহ আরও তিনজনকে অভিযুক্ত করে সদর থানায় এফআইআর দায়ের করেন মেয়ের বাবার বাড়ির লোকেরা। অভিযোগ স্বামী, শ্বাশুড়ি সহ আরও তিনজনের সহযোগে ঘটক আসার পর হত্যা করা হয়েছে তাঁদের মেয়েকে।
এদিকে স্বামী জিয়াউর রহমানকে আটক করা হলেও বাকি অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবি তুলেছেন তাঁরা। সদর পুলিশের বক্তব্য. ময়না তদন্তের রিপোর্ট আসলে বোঝা যাবে হত্যা, নাকি আত্মহত্যা!