BRAKING NEWS

বিজয়া সম্মেলনে বিজেপি হটানোর ডাক তৃণমূলের

বাঁকুড়া, ১৪ অক্টোবর (হি. স.) : বিজয়া সম্মেলনে বিজেপিকে হটানোর ডাক দিয়ে কর্মীদের মাঠে নামার ডাক দিলেন তৃণমূল নেতা মানস ভূইঞা । শুক্রবার গঙ্গাজলঘাটি ব্লক-১তৃণমূল কংগ্রেসের বিজয়া সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।সেই সম্মেলনে কর্মীদের চাঙ্গা করতে মানস বাবু বিজেপি হটানোর ডাক দেন।

রাজ্যের শিক্ষা ক্ষেত্রে নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে দলের প্রথম সারির নেতা শিল্প মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জেলে, অন্যদিকে গরুপাচার কান্ডে তৃণমূলের অন্যতম সাংগঠনিক নেতা তথা বীরভূমের জেলা সভাপতি অনুব্রত মন্ডল ও তার কিছু ঘনিষ্ঠও গরাদের ভিতরে ।এই ঘটনা তৃণমূলের ভিত নড়িয়ে দিয়েছে।দলীয় নেতাকর্মীদের মনোবলে চিড় ধরেছে সেকথা বলাই বাহুল্য। সামনের পঞ্চায়েত ভোটের আগে সংগঠনের মেরামতের কাজে বিজয়া সম্মিলনীর মাধ্যমে কর্মীদের চাঙ্গা করার নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিমো মমতা বন্দোপাধ্যায়। তার নির্দেশে রাজ্য জুড়ে ৫০০ বিজয়া সম্মেলন করার পরিকল্পনাও নিয়েছে দল। সেই মোতাবেক শুক্রবার গঙ্গাজলঘাটি ব্লক-১ এর বিজয়া সম্মেলনে র আয়োজন করা হয় অমরকানন দেশবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয়ে।সম্মিলনীতে উপস্থিত ছিলেন দলের নেতা মানস ভূঞ্যা, খাদ্য প্রক্রিয়াকরন দফতরের প্রতিমন্ত্রী জ্যোৎস্না মান্ডি, প্রাক্তন মন্ত্রী শ্যামল সাঁতরা, বড়জোড়ার বিধায়ক অলক মুখার্জি, তালডাংরার বিধায়ক অরূপ চক্রবর্তী, গঙ্গাজলঘাটি ব্লক – ২ সভাপতি নিমাই মাজি, প্রবীণ তৃণমূল নেতা ফটিক মন্ডল, প্রদীপ চক্রবর্তী সহ প্রায় আড়াই হাজার বুথ স্তরের কর্মী । ইডি সিবিআইয়ের জালে জড়িত দলীয় নেতাদের পাশ কাটিয়ে কর্মীদের মনোবল বাড়াতে এদিন মানস বাবু বিজেপি, বাম ও কংগ্রেসকে চাঁছাছোলা ভাষায় আক্রমণ করেন। তিনি বলেন, ভারতবর্ষকে ধংসের পথে নিয়ে যাচ্ছে ভারতীয় জনতা পার্টি। ধর্মকে ভিত্তি করে এবং সাম্প্রদায়িক বিভেদ সৃষ্টির মধ্য যে ভয়ঙ্কর খেলায় মেতেছে বিজেপি তার থেকে দেশকে বাঁচাতে আমরা বার্তা দিতে চাই, ‘বিজেপি হাঁটাও দেশ বাঁচাও।’ সিপিআই(এম) কে এক হাত নিয়ে বলেন, ভাবতে অবাক লাগে, যে পার্টিটা একদিন বিজেপির সমালোচনা করত সেই দলটা এখন বিজেপির হাত ধরেছে। তার প্রমাণ ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনের ফল দেখুন। সিপিআইএম তাদের ৯০ শতাংশ ভোট বিজেপিকে দিয়েছে। আর কংগ্রেস দলটার কথা ভাবলে লজ্জা হয়। যে সিপিআইএমের কাছে ৩৪ বছর ধরে মার খেয়ে, মামলা খেয়ে জেরবার হয়ে এসেছে তারাই বামেদের হাত ধরে তৃণমূলকে হারাতে পথে নেমেছে। সেকারনেই বিজেপির বহিরাগত নেতারা ডেলি পেসেঞ্জারি করতে করতে বলেছিলেন, ‘ইসবার ২০০ পার’। মানস বাবু বলেন, ফল দেখুন সিপিআইএম শূন্য, কংগ্রেস শূন্য । তিনি বলেন, সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন। আমরা গ্রামে গ্রামে যাব। পুরানো তৃণমূল কর্মীদের কাছে গিয়ে হাত জোড় করে ক্ষমা চেয়ে বলব, আমাদের একটাই নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, একটাই যুব আইকন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আর একটাই স্লোগান বন্দেমাতরম। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, এজেন্সি লাগিয়ে তৃনমূলকে মা মাটি মানুষের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে চাইছে বিজেপি। কিন্তু বাংলার জনগন তার বিচার করে দেবেন আগামী দিনে। পার্থ, মানিক, অনুব্রত জেলে এব্যাপারে কি বলবেন, উত্তরে তিনি জানান, আইন আইনের পথে চলবে। দুর্নীতি প্রমান হলে দল তাকে রেয়াত করবে না। গঙ্গাজলঘাটি ব্লক – ১ সভাপতি হৃদয় মাধব দুবে বলেন, গোটা দেশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটা ব্র্যান্ড। ৬৭ টা জনমুখি প্রকল্প চলছে এরাজ্যে । যার সুবিধা প্রতিটি পরিবার পাচ্ছে। সিপিআইএম, বিজেপি, কংগ্রেস সহ বিরোধীরা এমন একটাও পরিবার দেখাতে পারবে না যারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রকল্পের সুবিধা পাননি। আমরা দলনেত্রীর নির্দেশ মত গ্রামে গ্রামে গিয়ে মানুষের কাছে এই প্রকল্প গুলিই তুলে ধরে বিজেপির সর্বনাশা আগ্রাসন থেকে দেশকে বাঁচানোর আর্জি জানাবো।

এ প্রসঙ্গে সিপিআইএম নেতা মানব মন্ডল বলেন, দুর্নীতির সাগরে ডুবে থাকা দলের মাথারা পঞ্চায়েত নির্বাচন পর্যন্ত জেলের বাইরে থাকেন নাকি জেলের ভিতরে থাকেন সেই কথাই ভাবছেন জনগণ। বিজেপির গঙ্গাজলঘাটি মন্ডল সভাপতি ভাস্কর লাহা বলেন, তৃনমূলের সন্ত্রাসের ভয়ে মানুষ মুখ খুলতে পারছেন না। কিন্তু তৃণমূলের যে চোর গুলোর জন্য গোটা পশ্চিম বাংলার মাথা আজ হেঁট হয়ে গেছে তাদেরকে চিরতরে বিদায় দিতে হয় কি ভাবে তা তারা জানেন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *