ধুবড়ি (অসম), ২ অক্টোবর (হি.স.) : নিম্ন অসমের ধুবড়ি জেলায় ব্রহ্মপুত্র নদে গত ২৯ সেপ্টেম্বর সংঘটিত নৌকাডুবিতে নিখোঁজ ৩২ বছর বয়সি রাজস্ব সার্কল অফিসার তথা প্রশাসনিক ম্যাজিস্ট্রেট সঞ্জু দাসের মৃতদেহ উদ্ধার করেছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বাহিনীর জওয়ানরা। আজ রবিবার সকালে ঘটনাস্থল থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে ভাটি ব্রহ্মপুত্রের জলে ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা ঘটনা সম্পর্কে দুঃখ প্রকাশ করে এক টুইট করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, ‘আমাদের উদ্ধারকারী দলগুলির অব্যাহত প্রচেষ্টার পর সাম্প্রতিক ধুবড়ি নৌকা দুর্ঘটনায় নিখোঁজ সার্কল অফিসার সঞ্জু দাসের মৃতদেহ দুর্ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ১,০০০ মিটার ভাটিতে উদ্ধার করা হয়েছে৷ প্রয়াতের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি আমার গভীর সমবেদনা জানাই। তাঁর আত্মা সদগতি লাভ করুক। ওম শান্তি!’
এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, গত ২৯ সেপ্টেম্বর নিম্ন অসমের ধুবড়িতে ব্রহ্মপুত্রের বুকে ভয়াবহ নৌকাডুবির ঘটনায় নিখোঁজ হয়েছিলেন প্রশাসনিক ম্যাজিস্ট্রেট সঞ্জু দাস সহ প্রায় ১০ জন। ওই দিন সকাল প্রায় সোয়া দশটা নাগাদ সংঘটিত হয়েছিল ঘটনাটি। এর পর রাজ্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বাহিনী (এসডিআরএফ), রাষ্ট্রীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বাহিনী (এনডিআরএফ) এবং বিএসএফ-এর কয়েকটি দল প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ডুবুরিদের নিয়ে উদ্ধারকার্যে ঝাঁপিয়েছিল। পরে গুজরাট থেকেও ডুবুরির একটি দল আনা হয়েছিল।
এনডিআরএফ একটি বিবৃতি জারি করে দাবি করেছিল, ইঞ্জিন-চালিত নৌকায় ছিলেন প্রায় ২৯ জন যাত্রী। এঁদের মধ্যে প্রশাসনিক ম্যাজিস্ট্রেট তথা ধুবড়ির সার্কল অফিসার সঞ্জু দাস ও তাঁর দুই সহকর্মী, স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক, সাধারণ নাগরিক সহ নিখোঁজ হয়েছিলেন ১০ জন।
জানা গেছে, লাটমণ্ডল নমেজ উদ্দিন এবং পিটার দাস নামের এক সহকারী কৰ্মচারীকে সঙ্গে নিয়ে আমিনের চর অঞ্চলে নদী ভাঙনের ফিল্ড ভেরিফিকেশনে গিয়েছিলেন ধুবড়ির সার্কল অফিসার সঞ্জু দাস। ভাসানিচরে তাঁরা অভিশপ্ত ইঞ্জিন চালিত নৌকায় চড়ে ধুবড়ি আসছিলেন। কিন্তু সকাল প্রায় সোয়া দশটা নাগাদ ব্রহ্মপুত্রের বুকে আয়রনজংলায় লারসেন অ্যান্ড টুব্রো (এলঅ্যান্ডটি) নামের নির্মান সংস্থা কর্তৃক নির্মীয়মাণ ধুবড়ি-ফুলবাড়ি (মেঘালয়) সেতুর একটি খুঁটির সঙ্গে সংঘর্ষ হয় নৌকাটির।
এদিকে, ঘটনা সম্পর্কে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী ড. শর্মা। এর পর ৩০ সেপ্টেম্বর পুলিশ নৌকাডুবির ঘটনার পর ধুবড়ি জেলা সদর থানায় ২০০৫ সালের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইনের অধীনে লার্সেন অ্যান্ড টুব্রো (এলঅ্যান্ডটি)-এর দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে একটি মামলা নথিভুক্ত করেছে। ওই মামলার ভিত্তিতে এলএন্ডটি-র দুই কর্মকর্তা হরিশ তিওয়ারি এবং রাজেশ কুমার যাদবকে আটক করেছে।
প্রসঙ্গত, নিহত সার্কল অফিসার সঞ্জু দাসের মূল বাড়ি কাছাড় জেলার ধলাই বিধানসভা এলাকার আইরংমারায় বলে জানা গেছে। ইতিমধ্যে প্রয়াতের পত্নী ও পরিবারের লোকজন ধুবড়িতে এসে পৌঁছেছেন।