আগরতলা, ২৩ সেপ্টেম্বর (হি. স.) : ত্রিপুরায় শাসক বিজেপি শিবিরে আবারও ঝড় উঠেছে। বিধানসভা নির্বাচনের পাঁচ মাস বাকি থাকতে আরও এক দলীয় বিধায়ক পদত্যাগ করেছেন। ৪৩-করবুক বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক বুর্বুমোহন ত্রিপুরা আজ শুক্রবার অধ্যক্ষের হাতে পদত্যাগ পত্র তুলে দিয়েছেন। এদিন তিনি তিপরা মথার সুপ্রিমো প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণ, প্রাক্তন বিধায়ক বৃষকেতু দেববর্মাকে সাথে নিয়ে বিধানসভা অধিবেশন শুরু হওয়ার আগে অধ্যক্ষের হাতে পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছেন। অধ্যক্ষ রতন চক্রবর্তী জানিয়েছেন, নিয়ম মেনেই বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন বুর্বুমোহন ত্রিপুরা। সমস্ত কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তাঁর পদত্যাগ গ্রহণ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে ত্রিপুরায় সরকার পরিবর্তন হওয়ার থেকে এখন পর্যন্ত বিজেপির চার জন এবং আইপিএফটির একজন বিধায়ক পদত্যাগ করেছেন। পরবর্তীতে উপনির্বাচনে একটি আসন কংগ্রেস দখলে নিয়েছে এবং দুইটি আসন বিজেপি দখলে রেখতে পেরেছে। আজ বুর্বুমোহন ত্রিপুরার পদত্যাগে এই মুহুর্তে উপনির্বাচনের প্রয়োজন হবে না। ফলে, করবুক বিধানসভা কেন্দ্র ২০২৩ বিধানসভা নির্বাচন পর্যন্ত শূন্য থেকে যাবে।
এদিন অধ্যক্ষের কাছে পদত্যাগ পত্র জমা দিয়ে বুর্বুমোহন ত্রিপুরা বিজেপির বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন। তাঁর দাবি, পরিবর্তনের আশায় বিজেপি দলে যোগ দিয়েছিলাম এবং বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলাম। কিন্তু প্রত্যাশা পূরণের বদলে হতাশ হতে হয়েছে। জনজাতি কল্যাণ এখনো অলীক স্বপ্ন, তাই বিজেপি দল ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সে মোতাবেক বিধানসভার সদস্যপদ থেকে ইস্তফা দিয়েছি।
তিনি আজ আনুষ্ঠানিকভাবে তিপরা মথা দলে যোগ দেবেন। মথা সুপ্রিমো প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণ এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তাঁর বক্তব্য, জাতীয় দলের পতাকা তলে থেকে জনজাতিদের কল্যাণে দাবি আদায় সম্ভব হয়নি। তাই, বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে বুর্বুমোহন ত্রিপুরা তিপরা মথা দলে যোগ দেবেন। ইতিপূর্বে আইপিএফটি বিধায়ক পদে পদত্যাগ করে বৃষকেতু দেববর্মা তিপরা মথা যোগ দিয়েছেন।
ত্রিপুরা বিধানসভার অধ্যক্ষ রতন চক্রবর্তী বলেন, নিয়ম মেনেই বুর্বুমোহন ত্রিপুরা বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। সমস্ত কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তাঁর পদত্যাগ পত্র গ্রহণ করা হয়েছে। আজ থেকেই তিনি বিধায়ক থাকছেন না। অধ্যক্ষ বলেন, চলতি বিধানসভার মেয়াদ কয়েক দিন বাকি রয়েছে। তাই, বুর্বুমোহন ত্রিপুরাকে অন্তত শেষ অধিবেশন পর্যন্ত পদত্যাগ না করার অনুরোধ জানিয়েছিলাম। কিন্তু, তিনি ব্যক্তিগত কারণে বিধায়ক পদে থাকতে চাইছেন না।প্রসঙ্গত, গতকাল রাজ্যসভা উপনির্বাচনে বিজেপি প্রার্থীকেই ভোট দিয়েছেন বুর্বুমোহন ত্রিপুরা। বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি দলবিরোধী কাজকর্ম করছিলেন। বিধায়ক দিবাচন্দ্র রাঙ্খলের সাথে তিনি দিল্লিতে কংগ্রেস কার্যালয়েও গিয়েছিলেন। ওই ঘটনাকে ঘিরে ত্রিপুরার রাজনীতিতে অনেক জলঘোলা হয়েছিল। কারণ, বিজেপির বিদ্রোহী বিধায়কদের তালিকায় তাঁর নাম সবার উপরে ছিল। আজ পদত্যাগ করে বিজেপির প্রতি বিদ্রোহকেই সিলমোহর দিলেন তিনি।