মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে গ্রামীন সম্পদ কর্মীদের ৮ দফা দাবি পত্র

কলকাতা, ৬ সেপ্টেম্বর (হি. স.) : সারা বাংলা গ্রামীন সম্পদ কর্মী সংগঠন (ভিআরপি) পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির ডাকে মঙ্গলবার নবান্ন অভিযানের ডাক দেওয়া হয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে তাঁদের তরফে ৮ দফা দাবি পত্র দেওয়া হয়েছে।

আবেদনে তাঁরা জানিয়েছেন, আমরা ২০১৫-২০১৬ সালে লিখিত পরীক্ষা ও সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে রাজ্য সরকারের সোশ্যাল অডিট বিভাগে নির্বাচিত হয়েছিলাম গ্রামীন সম্পদ কর্মী হিসাবে। আমরা পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সামাজিক নিরীক্ষা দফতরে জেলা সামাজিক নিরীক্ষা বিভাগের অধীনে এমজিএনআরইএ, এনএসএপি, পিএমএওয়াই ও এনএফএসএ প্রকল্পগুলির সামাজিক নিরীক্ষার কাজে নিযুক্ত হয়েছিলাম। সোশ্যাল অডিটের জন্য নিযুক্ত হলেও এই অডিট নিয়মিতভাবে চালু না থাকায় মুখ্যমন্ত্রী আমাদের ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রনে (বিভিডিসি) বাড়ি বাড়ি সমীক্ষার কাজে মাসে ৩০ দিন করে কাজ করার সুযোগ দিয়েছেন।
এই সূত্রে আমরা দিনে ১৫ লক্ষের বেশি বাড়ি গিয়ে প্রতিনিয়ত সমাজের প্রতি সরকার এবং সাধারণ মানুষের সচেনতার পদক্ষেপকে তুলে ধরেছি। বিনিময় দিন প্রতি ১৭৫ টাকা হিসেবে মাসের ৩০ দিনে মোট ৫,২৫০ টাকা আমাদের পাওয়ার কথা। সেটি আবার প্রতিমাসে সঠিক সময়ে পাইনা।ভয়ঙ্কর করোনার থাবা ও চরম আর্থিক অনটনের মধ্যে দিয়েও ভিআরপি-রা সমস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেও চরম অর্থকষ্টে সম্মুখীন। বিডিও-দের মৌখিক আদেশে রাজ্যজুড়ে করোনা মোকাবিলা সহ সরকারের বিভিন্ন জনমুখী ২০-২২টি প্রকল্প সম্পর্কে মানুষকে অবগত করা ও সেসবের সুবিধা যাতে মানুষ পায় সেই সম্পর্কে সরাসরি সহযোগিতা করে চলেছি।‘দুয়ারে সরকার’ এই সর্ববৃহৎ সরকারি কর্মসূচিতেও সারা বাংলায় সোস্যাল অডিট ভিলেজ রিসোর্স পার্সন (এসএভিআরপি)-রা ওতপ্রতোভাবে জড়িত। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিনা পারিশ্রমিকে তাঁরা কম্পিউটারে ডাটা এন্ট্রি সহ সার্বিকভাবে সমস্ত পরিষেবার সাথে যুক্ত থাকেন।

এমত অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি অনুরোধ খেয়ে পরে বেঁচে থাকার মত সম্মানজনক মাসিক বেতন সহ কর্ম নিশ্চয়তার বিষয়ে নিশ্চিত পদক্ষেপ নিয়ে এই অসহায় পরিবারগুলোর পাশে যদি দাঁড়ান, ২৫ হাজার ৪০ জন এসএভিআরপি কর্মী চিরকৃতজ্ঞ ও বাধিত হবে।

আমাদের দাবী— ১) সোস্যাল অডিট আইন গ্রহণ করে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের সকল জনহিতকর প্রকল্পে সমকালীন সামাজিক নিরীক্ষা এসএভিআরপি-দের দিয়েই করতে হবে।
২) এসএভিআরপি-দের সম্মানজনক মাসিক বেতন চালু করতে হবে ।

৩) ডিএ, টিএ, স্বাস্থ্য বীমা সহ যাবতীয় সরকারি সুবিধা ও ৬২ বছর বয়স পর্যন্ত কর্ম নিশ্চয়তা প্রদান করতে হবে।
৪) উপযুক্ত কারণ ছাড়া কোনও এসএভিআরপি-কে কর্মচ্যুত করা যাবে না ।

৫) কর্ম স্থলে গ্রামীণ সম্পদ কর্মী বা এসএভিআরপিদের শারীরিক ক্ষয় ক্ষতি বা জীবনহানি ঘটলে তার উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। সেই সাথে শূন্য পদ হলে মৃতের পরিবার থেকেই একজনকে কর্ম নিযুক্তি দিতে হবে।
৬) ধর্মীয় উৎসবে বোনাস প্রদান ও মহিলা কর্মীদের ৬ মাসের সবেতন মাতৃত্বকালীন ছুটি ও বিবাহিত মহিলাদের বদলির ব্যবস্থা করতে হবে।

৭) রাজ্য সরকারি নিয়ম অনুযায়ী এসএভিআরপিদের সবেতন সরকারি ছুটি প্রদান করতে হবে।
৮) কর্মীদের কাজের সদিচ্ছা সঠিক রাখতে বিশেষ কাজে ‘মাস্টার রোল’ পদ্ধতির পরিবর্তে ট্রেজারি মাধ্যমে মাসের ১ তারিখেই বেতন চালু করতে হবে।

আবেদনে সই করেছেন সংগঠনের সম্পাদক অমিত সরকার, সভাপতি ইলিয়াস আলম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *