অচিন্ত্যর হাত ধরে কমনওয়েলথ গেমসে সোনা জয় ভারতের, শুভেচ্ছা রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর

নয়াদিল্লি, ১ আগস্ট (হি.স.): কমনওয়েলথ গেমসে সোনা জিতে ভারতের মুখ উজ্জ্বল করেছেন পশ্চিমবঙ্গের অচিন্ত্য শিউলি। ভারোত্তোলনে সোনা জিতেছেন অচিন্ত্য। একাদশতম বাঙালি হিসাবে কমনওয়েলথে সোনা জিতেছেন তিনি। গেমস রেকর্ডও গড়লেন অচিন্ত্য। ভারোত্তোলনের ৭৩ কিলো বিভাগে স্ন্যাচিংয়ে অচিন্ত্য অনায়াসে রেকর্ড গড়েছেন। প্রথম চেষ্টায় তোলেন ১৩৭ কিলো। পরের বার তোলেন ১৪০ কিলো এবং শেষ বার ১৪৩ কিলো। গেমস রেকর্ড গড়লেন অচিন্ত্য। বাকিদের মধ্যে মালয়েশিয়ার মুহম্মদ এরি শেষ চেষ্টায় ১৩৮ কিলো তোলেন। ক্লিন এবং জার্ক বিভাগে প্রথম চেষ্টায় অচিন্ত্য তোলেন ১৬৬ কিলো। পরের বার ১৭০ কিলো তুলতে গিয়ে ব্যর্থ হলেও তৃতীয় চেষ্টায় সেই ওজন তুলে দেন তিনি। গেমস রেকর্ড গড়েন মোট ৩১৩ কিলো তুলে।

হাওড়ার দেউলপুরে অচিন্ত্যর মাটির দেওয়ালের বাড়িতে টিনের ছাদ। মা জরির কাজ করে সংসার চালান কোনওক্রমে। সাপ্তাহিক রোজগার পাঁচশো টাকা। তা-ও নিয়মিত নয় সেই কাজ। দাদা অলক দমকল দফতরের অস্থায়ী কর্মী। অভাবের সংসারে অচিন্ত্যর সম্বল শুধু জেদ। কমনওয়েলথ গেমসে পদকজয়ী অচিন্ত্যর বাবা মারা গিয়েছেন ন’বছর আগে। ভ্যান চালিয়ে সংসারের হাল টানতেন বাবা। তাঁর মৃত্যুর পর দুই ভাইও পেটের দায়ে জরির কাজে মাকে সাহায্য করতেন। কিন্তু মন পড়ে থাকত ভারোত্তোলনে। দাদা না পারলেও অচিন্ত্য পেরেছেন কমনওয়েলথ গেমসের মঞ্চে পৌঁছতে। ২০১০ সাল থেকে অলক ভারোত্তোলনের অনুশীলন শুরু করেন। পরের বছর থেকে ভাইকেও নিয়ে যান নিজের সঙ্গে। ২০১৩ সালে জাতীয় প্রতিযোগিতায় অংশ নেন দুই ভাই। অচিন্ত্য চতুর্থ হয়েছিলেন। পরের বছর হরিয়ানায় জাতীয় গেমসে ব্রোঞ্জ পান তিনি। যোগ দেন সার্ভিসেসে।

কমনওয়েলথে সোনা জয়ী অচিন্ত্যকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু এক টুইট বার্তায় জানিয়েছেন, অচিন্ত্য শিউলি কমনওয়েলথ গেমস-এ সোনা জিতে এবং তেরঙ্গা উঁচু করে ভারতকে গর্বিত করেছেন। আন্তরিক অভিনন্দন! প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী টুইট করে জানিয়েছেন, প্রতিভাবান অচিন্ত্য শিউলি কমনওয়েলথ গেমসে স্বর্ণপদক জেতায় আনন্দিত। শান্ত প্রকৃতি এবং দৃঢ়তার জন্য তিনি পরিচিত। এই বিশেষ অর্জনের জন্য তিনি অনেক পরিশ্রম করেছেন। তাঁর ভবিষ্যৎ প্রচেষ্টার জন্য আমার শুভেচ্ছা রইল।