আগরতলা, ২৮ জুলাই (হি. স.) : ত্রিপুরায় জল জীবন মিশন প্রকল্পে ৩,৬৬, ২৩৩টি পরিবারে নলের মাধ্যমে পানীয়জল পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। আজ সচিবালয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে ত্রিপুরায় জল জীবন মিশন রূপায়ণের ক্ষেত্রে এখন পর্যন্ত সাফল্য ও কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে পানীয়জল ও স্বাস্থ্যবিধান দপ্তরের মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী এই তথ্য তুলে ধরে বিস্তারিত জানিয়েছেন।
তাঁর কথায়, জল জীবন মিশনের মাধ্যমে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে ত্রিপুরার প্রত্যেকটি গ্রামীণ এলাকায় বসবাসকারী পরিবারে নলের মাধ্যমে পরিশ্রুত পানীয়জল পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে পানীয়জল ও স্বাস্থ্যবিধান দপ্তর যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ করছে। তিনি বলেন, ২০১৯ সালে জল জীবন মিশন প্রকল্প চালু হয়েছে। ত্রিপুরার গ্রামীণ এলাকার মোট ৭,৪১,৯৪৫টি পরিবারের মধ্যে এখন পর্যন্ত জল জীবন মিশন প্রকল্পে ৩,৬৬, ২৩৩টি পরিবারে নলের মাধ্যমে পানীয়জল পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, ত্রিপুরায় জল জীবন মিশন প্রকল্প চালু হওয়ার আগে রাজ্যের গ্রামীণ এলাকায় ২৪,৫০২টি পরিবারে নলবাহিত পানীয়জলের সংযোগ পৌঁছানো হয়েছিল। শতাংশের নিরিখে এই হার ছিল ৩.৩০ শতাংশ। রাজ্যে জল জীবন মিশন প্রকল্প চালু হওয়ার আগে এবং পরে সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত মোট ৩,৯০,৭৩৫টি পরিবারে নলের মাধ্যমে পরিশ্রুত পানীয়জল পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। শতাংশের নিরিখে ৫২.৬৬ শতাংশ।
এদিন তিনি বলেন, সারা ত্রিপুরায় গ্রামীণ এলাকায় মোট ৮,৭১০টি পাড়া রয়েছে। এরমধ্যে এখন পর্যন্ত ১,২৩৮টি পাড়ায় নলের মাধ্যমে ১০০ শতাংশ বাড়িতে পানীয়জল পৌঁছানো হয়েছে। ৬১০টি পাড়ায় নলের মাধ্যমে পানীয়জল পৌঁছানো হয়েছে ৯০ থেকে ১০০ শতাংশ। ১,০০১টি পাড়ায় ৭৫ থেকে ৯০ শতাংশ, ১,৫৯৫টি পাড়ায় ৫০ থেকে ৭৫ শতাংশ, ১৫১০টি পাড়ায় ২৫ থেকে ৫০ শতাংশ এবং ১,৩৮০টি পাড়ায় নলের মাধ্যমে পানীয়জল পৌঁছানো হয়েছে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত।তাঁর দাবি, সারা ত্রিপুরায় মোট ১,১৭৬টি গ্রাম পঞ্চায়েত এবং ভিলেজ কমিটির মধ্যে ২৯টি গ্রাম পঞ্চায়েত এবং ভিলেজ কমিটিতে নলের মাধ্যমে ১০০ শতাংশ পানীয়জল পৌঁছানো হয়েছে। ৬২টি গ্রাম পঞ্চায়েত এবং ভিলেজ কমিটিতে নলের মাধ্যমে পানীয়জল পৌঁছানো হয়েছে ৯০ থেকে ১০০ শতাংশ, ৮৭টি গ্রাম পঞ্চায়েত এবং ভিলেজ কমিটিতে পানীয়জল পৌঁছানো হয়েছে ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ, ১১০টি গ্রাম পঞ্চায়েত এবং ভিলেজ কমিটিতে পানীয়জল পৌঁছানো হয়েছে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ। এছাড়াও বাকি গ্রাম পঞ্চায়েত এবং ভিলেজ কমিটিগুলিতে নলের মাধ্যমে পানীয়জলের সংযোগ পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে কাজ দ্রুতগতিতে চলছে বলে জানান তিনি।
তাঁর দাবি, ত্রিপুরার গ্রামীণ এলাকার স্কুলগুলির মধ্যে এখন পর্যন্ত ৩,৪৪৭টি স্কুলে নলের মাধ্যমে পানীয়জলের সংযোগ পৌঁছানো হয়েছে। শতাংশের নিরিখে এই হার হলো ৭৫.৯৯ শতাংশ। এছাড়া এখন পর্যন্ত ৪,৮২১টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে পানীয়জলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। শতাংশের হার ৫৩.৯৭ শতাংশ।
আজ পানীয় জল এবং স্বাস্থ্য বিধান দফতরের মন্ত্রী হর ঘর জল এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে জল জীবন মিশন প্রকল্প রূপায়ণে জেলাভিত্তিক কাজের অগ্রগতি এবং সাফল্যের পরিসংখ্যান তুলে ধরেন। তিনি জানান, রাজ্যে জল জীবন মিশন প্রকল্পের কাজ আরও ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের জল সম্পদ মন্ত্রক ত্রিপুরাকে সম্প্রতি এই প্রকল্প খাতে আরও ১৬৬ কোটি টাকা প্রদান করেছে। তিনি আশাব্যক্ত করেন, রাজ্যের প্রত্যেকটি গ্রামীণ পরিবারে নলের মাধ্যমে পানীয়জলের সংযোগ আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে পৌঁছে দেওয়া সম্ভবপর হবে। এক্ষেত্রে তিনি সবার সহযোগিতা কামনা করেছেন।