BRAKING NEWS

Election Result :ত্রিপুরা : উপনির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর কংগ্রেস-বিজেপি সংঘর্ষ উত্তেজনা ছড়িয়েছে আগরতলায়, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সহ আহত বহু

আগরতলা, ২৬ জুন (হি. স.) : রবিবাসরীয় শহর আগরতলা ভোটের ফলাফল পরবর্তী সহিংসতার আরও একটি কুৎসিত প্রদর্শনের সাক্ষী ছিল। কারণ শহরের কেন্দ্রস্থলে উপ-নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার কয়েক ঘন্টা পরে কংগ্রেস এবং বিজেপি সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়েছিল। ওই সংঘর্ষে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সহ উভয় দলের দুইজন কর্মী গুরুতরভাবে আহত হয়েছেন। বিজেপির কর্মীর মাথা ফেটেছে এবং কংগ্রেস কর্মী ছুরিকাহত হয়েছেন। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বীরজিত সিনহা মাথায় আঘাত পেয়ে বর্তমানে হাসপাতালে চিকিত্সাধীন রয়েছেন।

এছাড়াও সংঘর্ষে উভয় দলের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে কেন্দ্রীয় সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন করার সাথে এবং বিক্ষুব্ধ জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করা হয়েছে। সহিংসতায় উসকানি দেওয়ার জন্য উভয় দলের নেতারা একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন। কংগ্রেসের দাবি, দলীয় কর্মীকে বিজেপি সমর্থিত দুষ্কৃতীরা ছুরিকাঘাত করেছে। অন্যদিকে বিজেপি নেতারা দাবি করেছেন, কংগ্রেস সমর্থিত দুষ্কৃতীদের একটি দল যুব মোর্চা কর্মীকে আক্রমণ করেছে।

যুব মোর্চার প্রদেশ সহ সভাপতি ভিকি প্রসাদের দাবি, দলীয় কর্মীকে এতটাই অমানুষিকভাবে মারধর করেছে যে তার মাথায় দশটি সেলাই দিতে হয়েছে। পরে কংগ্রেস সমর্থিত দুষ্কৃতীরা বিজেপি কাউন্সিলর শিল্পী সেনের বাসভবনেও হামলা এবং তাঁর মেয়েকে মারধর করেছেন। উভয় দলের কর্মীরা এদিন একে অপরকে লক্ষ্য করে পাথর ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। উত্তেজিত যুব মোর্চার কর্মীরা কংগ্রেসের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা বেশ কয়েকটি বাইক ভাংচুর করেছেন।

উভয় পক্ষের অভিন্ন যুক্তি, প্রতিশোধের ফলশ্রুতিতেই সংঘর্ষ হয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন এবং তাদের অনেকেই এখন চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি বীরজিত সিনহাও কপালে ইটের আঘাতে আহত হয়েছেন। তাতে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। তাঁকে চিকিৎসার জন্য একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে, জনৈক পুলিশ কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এদিন উভয় রাজনৈতিক দলের ক্ষিপ্ত সমর্থকদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপের সাথে মৃদু লাঠিচার্জ করেছে। পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে এলেও আগরতলা শহরে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

এদিকে এই খবর বিজেপি প্রদেশ মুখ্য কার্যালয়ে পৌঁছানোর সাথে সাথে তথ্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী সহ বিজেপির সিনিয়র নেতা ও আইনমন্ত্রী রতন লাল নাথ ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন।

বিজেপি দলের একটি প্রতিনিধি দল পশ্চিম ত্রিপুরার পুলিশ সুপার বোগাটি জগদীশ্বর রেড্ডির সাথে দেখা করে শান্তি পুনরুদ্ধারের জন্য তার হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

পুলিশ সুপারের সাথে আলোচনার পর আইনমন্ত্রী রতন লাল নাথ বলেন, আজ ত্রিপুরায় উপনির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা হয়েছে। কংগ্রেস দল সিপিআইএম-এর সমর্থনে একটি আসন জিতেছে এবং বিজেপি প্রত্যাশা অনুযায়ী ব্যতিক্রমী ফলাফল করেছে। তাঁর দাবি, ফলাফল অনেকাংশে বিরোধীদের বিরুদ্ধে গেছে, তারা শান্তি বিঘ্নিত করার জন্য সুনিপুণ ষড়যন্ত্র করেছে। নাম না করেই তিনি কংগ্রেসকে বিঁধেছেন।

তিনি বলেন, পুলিশ কর্মকর্তাদের কাছে আবেদন জানিয়েছি অপরাধের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পুরো কংগ্রেস ভবনটি ঘিরে ফেলতে হবে।

এনডিপিএস আইনের বিভিন্ন ধারায় অভিযুক্ত অপরাধীরা কংগ্রেস ভবনের ভিতরে ক্যাম্প করে আছে। জনগণের সামনে তাদের মুখোশ খুলে দেওয়া উচিত, সুর চড়িয়ে বলেন শ্রী নাথ।

তথ্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী বলেন, উপনির্বাচনে কংগ্রেস যেভাবে প্রত্যাখাত হয়েছেন তাতে তাঁদের লজ্জিত হওয়া উচিত। তাঁরা আমাদের দলীয় কর্মীদের উপর হামলার পাশাপাশি বিজেপির নির্বাচিত কাউন্সিলরের বাসভবন ভাংচুর করেছে। তাঁদের সমুচীন জবাব দেওয়া খুবই প্রয়োজন।”কংগ্রেস বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মন অবশ্য বলেন, ছুরিকাঘাতের ঘটনা এই সংঘর্ষের উৎস ছিল। আমাদের এক কংগ্রেস কর্মীকে দুর্বৃত্তরা গুরুতরভাবে ছুরিকাঘাত করেছিল। ফলে এই হিংসাত্মক ঘটনার মুখোমুখি হয়েছে শহর আগরতলা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *