জনসমর্থন নেই, তাই সহানুভূতি আদায়ে নাটক মঞ্চস্থ করেছেন, আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় সুদীপকে বিঁধলেন সুশান্ত

আগরতলা, ২০ জুন (হি. স.) : জনসমর্থন নেই, তাই সহানুভূতি আদায়ে নাটক মঞ্চস্থ করেছেন সুদীপ রায় বর্মণ। সুদীপের উপর আক্রমণ এবং ওই ঘটনায় তাঁর জড়িত থাকার অভিযোগের খন্ডন করে একথা বলেন বিজেপি নেতা তথা তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী। তাঁর কটাক্ষ, পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পা ভাঙ্গা দেখে অনুপ্রাণিত হয়েছেন সুদীপ বাবু। তাই নির্বাচনে জেতার জন্য নিজে আক্রান্ত হওয়ার মিথ্যা নাটক সাজিয়েছেন তিনি। তবে মনে রাখা উচিত, নন্দীগ্রামে বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারির কাছে পরাজিত হয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ত্রিপুরায় ৬-আগরতলা বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচনেও সুদীপ রায় বর্মনের পরাজয় নিশ্চিত হবে, বিদ্রুপ করে বলেন সুশান্ত চৌধুরী।

এদিন বিজেপি প্রদেশ মুখ্য কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী বলেন, প্রাক্তন বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মনের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনার সাথে আমাকে বিজেপি প্রার্থী ডা: অশোক সিনহাকে জড়ানো হচ্ছে। আমাদের উপস্থিতিতে দুষ্কৃতিকারীরা তাঁকে মারধর করেছে, এমনটা রটানো হচ্ছে। কিন্ত, ঘটনার সময় আমরা সেখানে উপস্থিত ছিলাম না। বরং, কংগ্রেস কর্মীরা বিজেপির প্রচার সজ্জা নষ্ট করছে এবং দলের মন্ডল সভাপতির বাড়িতে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে খবর পেয়ে সেখানে ছুটে গিয়েছি।

তিনি বলেন, নির্বাচনী রণকৌশল নির্ধারণে বিজেপি প্রার্থী ডা: সিনহা এবং বিধায়ক সুধাংশু দাসের সাথে আমার সরকারী বাসভবনে আলোচনা চলছিল। তখনই একাধিক ফোন পেয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে উজান অভয়নগর ছুটে গিয়েছি। তাঁর দাবি, সুদীপ বাবু কিভাবে মার খেয়েছেন, আদৌ তিনি আক্রান্ত হয়েছেন কিছুই আমরা জানিনা। তবে, বহিরাগতদের এনে বিজেপির প্রচার সজ্জা নষ্ট এবং মন্ডল সভাপতির বাড়িতে হামলার প্রস্তুতি হয়েছিল এমনটা উপলব্ধি করতে পেরেছি।

এদিন তিনি প্রশ্ন করেন, নির্বাচনী প্রচার ছাড়া গভীর রাতে সুদীপ বাবু কি উদ্দেশ্যে উজান অভয়নগর গিয়েছিলেন। বহিরাগতদের এনে নির্বাচনে অশান্তি কায়েমের চেষ্টা কেন করেছেন। সুশান্ত এদিন দাবি করেন, জনভিত্তি শূন্যের কোঠায়। তাই, বহিরাগতদের এনে প্রচার চালাচ্ছেন। সোনামুড়া, ফটিকরায়, রামচন্দ্রঘাট সহ বিভিন্ন স্থান থেকে কয়েকশ যুবকদের এনেছেন। তিনি জোর গলায় বলেন, ৬-আগরতলা বিধানসভা কেন্দ্রে একটি বুথ অফিস খুলতে পারেননি সুদীপবাবু। দলবদলের খেলায় মানুষ তাঁকে প্রত্যাখাত করেছেন। ফলে, নির্বাচনে হার নিশ্চিত বুঝে ফেলেছেন।

সুশান্তের কটাক্ষ, নির্বাচনী মুহুর্তে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পা ভাঙ্গা দেখে অনুপ্রাণিত হয়েছেন সুদীপ রায় বর্মণ। তাই, আক্রান্ত হওয়ার নাটক মঞ্চস্থ করে তিনি মানুষের সহানুভূতি আদায় করতে চাইছেন। মানুষের ভাবাবেগে আঘাত করে নির্বাচনী বৈতরিণী পার করার কৌশল নিয়েছেন। কিন্ত, মানুষ তাঁর কৌশলি চালে পা দেবেন না। দলবদলুদের সমর্থনের বদলে মানুষ বিজেপির প্রতি আস্থা দেখাচ্ছেন। তাই, উপনির্বাচনে বিজেপির নিশ্চিত জয় হবে, দৃঢ়তার সাথে বলেন তিনি।

এদিন বিধায়ক সুধাংশু দাস বলেন, সুদীপ রায় বর্মনের ডাকে আসা বহিরাগত কয়েকজনকে চিনি। তাঁরা কুখ্যাত সমাজদ্রোহী হিসেবে এলাকায় পরিচিত। তাঁদের মদত নিয়ে নির্বাচনে অশান্তি কায়েম করে তিনি জিততে চাইছেন। তাঁর বক্তব্য, দীর্ঘদিনের বিধায়কের কাছে এমন আচরণ প্রত্যাশা করিনা। তিনি ভোটে জেতার জন্য নাটক শুরু করেছেন, তা বড়ই দুর্ভাগ্যজনক।এদিকে, বিজেপি ৬-আগরতলা মন্ডল সভাপতি হীরালাল দেবনাথ সুদীপ রায় বর্মণকে জড়িয়ে থানায় মামলা করেছেন। সুদীপের নেতৃত্বে দুষ্কৃতিকারীরা বিজেপির প্রচার সজ্জা নষ্ট করেছেন এবং তাঁর বাড়িতে হামলার চেষ্টা চালিয়েছেন এমনই অভিযোগ এনেছেন। শুধু তাই নয়, এজাহারে দুষ্কৃতিকারীরা বোমা নিক্ষেপ করেছেন এবং পিস্তল থেকে কয়েক রাউন্ড গুলি ছুড়েছেন বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি। তাতে, বিজেপি কর্মীরা আহত হয়েছেন বলে তিনি নালিশ জানিয়েছেন। তাই ঘটনার তদন্তক্রমে সুষ্ঠ বিচারের প্রার্থনা করেছেন।