গুয়াহাটি, ১৫ জুন (হি.স.): ভারতীয় রেলওয়ের পক্ষ থেকে স্টার্ট-আপ ও অন্যান্য সংস্থার অংশগ্রহণের মাধ্যমে উদ্ভাবনী ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় রেল, যোগাযোগ ও ইলেক্ট্রনিক এবং তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণো দিল্লিস্থিত রেল ভবনে “স্টার্টআপস ফর রেলওয়ে” নামে একটি উদ্ভাবনী নীতি প্রবর্তন করেছেন। পরিচালনামূলক দক্ষতা ও সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা অর্জন করতে ভারতীয় রেলওয়ের উদ্ভাবনী সমাধানের দিকে উদ্যোগী পদক্ষেপের অংশ হিসেবে উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের জেনারেল ম্যানেজার অনশুল গুপ্তা বুধবার গুয়াহাটিতে একটি সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত করেন।
জেনারেল ম্যানেজার জানান, এই নীতির লক্ষ্য হল বৃহৎ ও অব্যবহৃত স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমের অংশগ্রহণের মাধ্যমে পরিচালনা, রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিকাঠামো তৈরির ক্ষেত্রে ক্রমপর্যায়িক বস্তুনিষ্ঠতা ও দক্ষতা নিয়ে আসা। শ্রী অনশুল গুপ্তা বলেন যে ভারতীয় রেলওয়েতে সংহতি নাশক প্রযুক্তির একত্রীকরণের উদ্যোগের আকারে একটি দৃঢ় রূপ ধারণ করেছে।
জেনারেল ম্যানেজার বলেন, এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে স্টার্টআপগুলি রেলওয়ের সাথে সংযুক্ত হওয়ার এক ভালো সুযোগ লাভ করবে। রেলওয়ের বিভিন্ন ফিল্ড অফিস/জোনগুলি থেকে প্রাপ্ত বিভিন্ন সমস্যার বিবৃতির মধ্যে ১১টি সমস্যা যেমন রেল ফ্র্যাকচার, হেডওয়ে রিডাকশন ইত্যাদিকে এই কর্মসূচির জন্য প্রাথমিকভাবে গ্রহণ করা হয়েছে। সমাধান উদ্ভাবনের জন্য এই সমস্যাগুলি স্টার্ট আপগুলির সামনে তুলে ধরা হবে। জেনারেল ম্যানেজার এই সুযোগ ব্যবহারের জন্য স্টার্টআপগুলিকে অনুরোধ জানান এবং তাদের ভারতীয় রেলওয়ের পক্ষ থেকে ৫০ শতাংশ মূলধন অনুমোদন, নিশ্চিত বাজার, ক্রমপর্যায়িক বস্তুনিষ্ঠতা ও ইকোসিস্টেমের সাহায্যের নিশ্চয়তা প্রদান করেন।
এই কর্মসূচির অধীনে উদ্ভাবক, মাইলস্টোন অনুযায়ী পেমেন্ট ব্যবস্থা সহ সমভাগ ভিত্তিক ১.৫ কোটি টাকা পর্যন্ত অনুমোদন লাভ করতে পারেন। এটিকে স্বচ্ছা ও বস্তুনিষ্ঠ করতে সমস্যার বিবৃতি উল্লেখ করা থেকে প্রোটোটাইপের উন্নয়ন পর্যন্ত সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অনলাইনে করা হবে। প্রোটোটাইপগুলির পরীক্ষা রেলওয়েতে করা হবে। প্রোটোটাইপের সফল কর্মসম্পাদনের উপর স্থাপনা বৃদ্ধি করতে বর্ধিত পুঁজি প্রদান করা হবে। ডেভেলপমেন্ট ইন্টালেকচুয়াল প্রোপার্টি রাইট (আইপিআর)-এর শুধুমাত্র উদ্ভাবকের কাছেই থাকবে। নিশ্চিত উন্নয়নমূলক নির্দেশ উদ্ভাবককে প্রদান করা হবে।
জেনারেল ম্যানেজার আরও বলেন, মুক্ত, স্বচ্ছ ও ন্যায্য ব্যবস্থার মাধ্যমে নির্বাচনের প্রক্রিয়া করা হবে, যার ফলে উদ্ভাবকরা নিজেদের ধারণাগুলি প্রয়োজনীয় প্রমাণ সহ একটি উৎসর্গীকৃত পোর্টালে আপলোড করতে পারবেন, যা ভারতীয় রেলওয়ের উদ্ভাবনী পোর্টাল www.innovation.indianrailways.gov.in-এ করা যাবে। পোর্টালটি ২১ জুন, ২০২২ থেকে ধারণাগুলি গ্রহণ করা শুরু করবে।
ডিমা হাসাওয়ে পুনরুদ্ধার কার্য সম্পর্কে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে জেনারেল ম্যানেজার বলেন যে ৬১টি ভাঙনের মধ্যে ৪৬টির পুনরুদ্ধারের কাজ সম্পূর্ণ করা হয়েছে এবং ১৫টি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে দ্রুত গতিতে কাজ চলছে। তিনি আরও বলেন যে বদরপুর থেকে নিউ হাফলং পর্যন্ত ট্রেন পরিষেবা ২০ জুনের মধ্যে পুনরায় শুরু করার সম্ভাবনা রয়েছে। আটকে থাকা যাত্রীদের উদ্ধার করে তাঁদের নিরাপদে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার কাজে সাহায্য করার জন্য জেনারেল ম্যানেজার ভারতীয় বায়ু সেনা, রেলওয়ে কর্মচারী, রোডওয়ে সার্ভিস ও প্রাইভেট বাস পরিচালকদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। এছাড়াও তিনি উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের অধীনে রাজ্য রাজধানী সংযোগী প্রকল্পগুলি ও আন্তর্জাতিক সংযোগ স্থাপনের প্রকল্পগুলি সম্পর্কে মিডিয়াকে সংক্ষিপ্ত আকারে জানান। সম্প্রতি অনুমোদিত চন্দ্রনাথপুর-শিলচর নতুন লাইন প্রকল্পের চূড়ান্ত স্থানের সমীক্ষা সম্পর্কেও জেনারেল ম্যানেজার আলোচনা করেন। এই প্রকল্পটি পাহাড়ি সেকশনের জন্য একটি বিকল্পমূলক রুট প্রদান করবে এবং দক্ষিণ অসম, মিজোরাম, মণিপুর ও ত্রিপুরার সংযোগ স্থাপনের ক্ষেত্রে এই প্রকল্পটি একটি দ্বৈত লাইন হিসেবেও কাজ করবে।