আগরতলা, ৭ জুন(হি. স.): বাড়িতে চলছে শ্রাদ্ধ। এরই মধ্যে প্রয়াত যুবক বাড়িতে ফিরে এসেছেন। মৃত সন্তানকে জীবিত দেখে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পরেন পিতা-মাতা ও পরিবারের অন্য সদস্যরা। প্রতিবেশীরাও রীতিমতো বিস্মিত। পশ্চিম ত্রিপুরা জেলায় মোহনপুরের বামুটিয়া পুলিশ ফাঁড়ির অধীন পশ্চিমবাংলা গ্রাম পঞ্চায়েতের দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়ার বাসিন্দা আকাশ সরকার সকলকে কল্পনার জগতে পৌছে দিয়েছে। কারণ, তাঁর অস্বাভাবিক মৃত্যুতেই বাড়িতে শ্রাদ্ধ-র আয়োজন করা হয়েছিল।
এখন কিছুটা পেছনে ফিরে দেখা যাক। গত ৩ জুন আগরতলা বটতলা ফাঁড়ির অধীন মেলার মাঠ পুকুরে এক যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছিল। একই সময়ে বামুটিয়া ফাঁড়ির অধীন দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়ার বাসিন্দা আকাশ সরকারকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। পুকুরে যুবকের মৃতদেহ উদ্ধারের খবর পেয়ে বামুটিয়া ফাঁড়ির পুলিশ আকাশের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করেন এবং মৃতদেহ শনাক্ত করতে বলেছিলেন। পুকুরের জলে ডুবে যাওয়ার কারণে মৃতদেহটি অনেকটা ফুলে গিয়েছিল। ফলে, চেহেরা সঠিকভাবে শনাক্ত করা মুশকিল হয়ে পড়েছিল। কিন্তু মৃতদেহের পরিধেয় পোশাক আকাশের সাথে মিলে যাচ্ছিল। তাই, অঙ্কণ সরকার অগত্যা ওই মৃতদেহ আকাশের বলে শনাক্ত করেন। এরপরই পুলিশ ময়না তদন্তের পর মৃতদেহ অঙ্কণ সরকারের হাতে তুলে দিয়েছিল। ধর্মীয় রীতি মেনে তাঁর শেষকৃত্যও সম্পন্ন হয়েছে। শুধু তাই নয়, অস্বাভাবিক মৃত্যুর ফলে চারদিনে শ্রাদ্ধের আয়োজনও করা হয়েছে। এরই মধ্যে শ্রাদ্ধ চলাকালীন আকাশ বাড়িতে গিয়ে হাজির হয়েছে।
জীবিত সন্তানকে দেখে সকলেই হতচকিত হয়ে পরেন।আসলে, আকাশ সরকার সারাক্ষণ নেশাগ্রস্ত হয়ে থাকে। ২২ বছর বয়সী ওই যুবক নেশাগ্রস্ত হয়ে প্রায় সময় বাড়ি থেকে গায়েব থাকত। ফলে, তাকে খুজে বের করার জন্য পরিবারের সদস্যরা সবসময় আগ্রহ দেখাতেন না। কিন্ত, মৃতদেহ উদ্ধারের খবর পেয়ে তাঁরা ছুটে গিয়েছিলেন। পুলিশের বক্তব্য, পরিবারের সদস্যরা মৃতদেহ শনাক্ত করার পর সমস্ত আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। আকাশ জানিয়েছে, গত কয়েকদিন জিবি হাসপাতালে তার চিকিত্সা চলছিল। তাই, পরিবারের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। এক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠেছে, মেলারমাঠ পুকুরে উদ্ধার যুবকের পরিচয় কি। কোথা থেকে ওই যুবক এসেছেন, তাঁর মৃত্যু কিভাবে হয়েছে। মৃতদেহ সৎকারের পর আসল পরিচয় খুঁজে বের করা আদৌ সম্ভব হবে, নাকি অজ্ঞাত পরিচয় মৃতদেহ উদ্ধার হিসেবে ফাইলবন্দী হয়ে যাবে। এমন হাজারো প্রশ্নের মধ্যে একটি বিষয় নিয়ে কৌতুহল চরমে, আকাশের নিখোজ হওয়া এবং মৃতদেহ উদ্ধারের পরবর্তী ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে আরক্ষা প্রশাসন কিভাবে ব্যাখ্যা দেবে।