নিউহাফলঙে পাহাড়ি কাদা-মাটির ধাক্কায় গুয়াহাটি-শিলচর এক্সপ্রেস ও পণ্যবাহী ট্রেনের চারটি বগি কাত, প্রকৃতির রোষে বিধ্বস্ত ডিমা হাসাও

হাফলং (অসম), ১৬ মে (হি.স.) : প্রকৃতির রুদ্র রূপে ভয়াবহ অবস্থা ডিমা হাসাও জেলার। লামডিং-বদরপুর রেলপথের আরও কিছু অংশে ধস নামার খবর মিলেছে। নতুন পুরনো মিলে প্রায় ৩০টি স্থানে ধস পড়েছে বলে খবর পাওয়া গছে। ধস কবলিত নিউহাফলং স্টেশনে আবদ্ধ গুয়াহাটি-শিলচর এক্সপ্রেস এবং একটি পণ্যবাহী ট্রেনের চারটি বগি কাদা-মাটির ধাক্কায় লাইনচ্যুত হয়ে হেলে পড়েছে। তবে ট্রেনের ভিতরে কোনও যাত্রী বা রেলওয়ে ক্র্যু ছিলেন না। গত দুদিনে সব যাত্রীকে উদ্ধার করে তাঁদের গন্তব্যস্থানে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া পাহাড় থেকে নেমে আসা কাদা-মাটির স্রোতে নিউহাফলং স্টেশনের রেলওয়ে ট্র্যাকও বসে গেছে। মাটি ও গাছের চাপায় তছনছ হয়ে গেছে বহু গৃহস্থের বাড়িঘর।

এমনিতে গত তিনদিন থেকে ডিমা হাসাও জেলা সহ বরাক উপত্যকা ও পার্শ্ববর্তী ত্রিপুরা, মিজোরাম ও মণিপুর রেল সড়কে দেশের অনান্য অংশের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হয়ে গে্ছে। ভূতল সড়ক পথে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এই সব জেলা ও রাজ্য। রেলপথের পর এবার রাজ্যের অনান্য অংশের সঙ্গে ডিমা হাসাও জেলার সদর শহর হাফলঙের যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
আজ সোমবার সকালে শিলচর-সৌরাষ্ট্র ইস্ট-ওয়েস্ট করিডোরের সংযোগী হাফলং-জাটিঙ্গা সড়ক সম্পূর্ণ ধসে তালিয়ে গেছে। মহাসড়কের সংযোগী হাফলং-জাটিঙ্গা সড়ক পথের বড়-হাফলঙের কাছে রাস্তা সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন হওয়ার পাশাপাশি জাটিঙ্গায় সড়ক পথ সম্পূর্ণ ধসে গেছে। হাফলং-উমরাংসো, হাফলং-দেহাঙ্গি-দিয়ুংমুখ-লংকা সড়কপথের লোয়ার হাফলঙের কাছে সড়কের বিরাট অংশ ধসে যাওয়ায় ওই পথে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
পূৰ্ত বিভাগ ওই পথে যানবাহন চলাচলের উপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি করে গোটা সড়ক বন্ধ করে দিয়েছে। যার দরুন সড়ক পথে লোয়ার হাফলং ও সদর হাফলঙের মধ্যে যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এদিকে বড়-হাফলঙে ভূমি ধসে সম্পূর্ণ সড়ক পথ তলিয়ে গেছে।
এদিকে গত পাঁচদিন ধরে প্রবল বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। এর জেরে সোমবার সকালে হাফলং ফিশারি কলোনিতে বিজেপি জেলা কার্যালয়ের সামনে হাফলং নগরসমিতির কর্মী গোপাল বাটারির বাড়ির উপর মাটি ও বড় বাঁশঝাড় উপড়ে পড়েছে। এতে গোপালবাবুর ঘর সম্পূ্র্ণ ভেঙে পড়েছে। তবে সৌভাগ্যক্রমে গোপাল বাটারির পরিবার রক্ষা পেয়েছেন।
সমগ্র ডিমা হাসাও জেলার অনেক স্থানে নাগাড়ে বৃষ্টির দরুন বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। তাছাড়া পাহাড়ি নদীর জল ফুলেফেঁপে ওঠায় অনেক জায়গায় বাড়িঘর বন্যার কবলেও পড়েছে। সব মিলিয়ে ডিমা হাসাও জেলা ভয়ঙ্কর প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়েছে।