যোধপুর, ৩ মে (হি.স.): রাজস্থানের যোধপুরে হিংসাত্মক ঘটনায় মোট ৩ জনকে আটক করল পুলিশ। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পাশাপাশি যোধপুরের হিংসাত্মক ঘটনার প্রেক্ষিতে সোমবার ডিজিপি ও অন্যান্য শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে উচ্চ-পর্যায়ের বৈঠক করেছেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট। সকলের কাছে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন গেহলট। মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট এদিন বলেছেন, “জনগণের কাছে শান্তি বজায় রাখার আবেদন করছি আমি। এই ধরনের উত্তেজনা যোধপুরের মানুষের জন্য ভালো নয়। আমি পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছি, সমাজ-বিরোধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে। সকলের বোঝা উচিত আমাদের ভ্রাতৃত্ব বজায় রাখতে হবে।”
এদিকে, যোধপুরে হিংসাত্মক ঘটনার প্রেক্ষিতে অশোক গেহলট সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছে বিজেপি। রাজস্থান বিজেপির সভাপতি সতীশ পুনিয়া বলেছেন, “তোষণের রাজনীতির জন্যই রাজস্থানের শান্তি, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিঘ্নিত হয়েছে। করৌলির ঘটনা থেকে এটা পরিষ্কার যে, এই ধরনের ঘটনা ঘটছে সরকারি সুরক্ষায়। কেন এই ধরনের ঘটনা শুধুমাত্র কংগ্রেসের শাসনেই ঘটে?” বিজেপি সাংসদ রাজ্যবর্ধন রাঠোর তোপ দেগে বলেছেন, “রাজস্থান সরকার অনর্থক। আপনারা যত খুশি সাংবাদিক সম্মেলন করুন অথবা তাঁর (রাহুল গান্ধী) পার্টি করার পক্ষে যত যুক্তিই উপস্থাপন করুন, আপনাদের সরকার কেন নিজস্ব দায়িত্ব পালন করছে না?”
উল্লেখ্য, ঈদের আগের দিনই সাম্প্রদায়িক অশান্তি তৈরি হয়েছিল রাজস্থানের যোধপুরে। সোমবার পরশুরাম জয়ন্তী থেকেই শুরু হয় অশান্তি। এক স্বাধীনতা সংগ্রামীর মূর্তিতে পতাকা লাগানো নিয়ে দুই ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে বচসা বেধে যায়। তারপরেই পাথর ছোঁড়া হয় এবং পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছলে আক্রান্ত হন তাঁরাও। ১০টি এলাকায় কারফিউ জারি করা হয়েছে। অবস্থা সামাল দিতে বন্ধ রাখা হয় জালোরি গেট এলাকার ইন্টারনেট পরিষেবাও। ঘটনার সূত্রপাত সোমবার গভীর রাতে। তিনদিন ধরে পরশুরাম জয়ন্তী পালন করা হচ্ছে যোধপুরে। রাজস্থানের অতিরিক্ত এডিজি হাওয়া সিং ঘুমারিয়া জানিয়েছেন, “নামাজ পাঠের জায়গায় পরশুরামের পতাকা লাগানো ছিল। সেগুলি সরিয়ে ঈদের জন্য পতাকা লাগাতে চায় কয়েকজন।” এই ঘটনার প্রতিবাদ করেন কয়েকজন। তারপরেই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। তবে কিছুক্ষণের মধ্যে থেমেও যায় এই অশান্তি। কিন্তু এই খবর ছড়িয়ে পরে চারিদিকে। রাত বাড়তেই ফের লোকজন জমায়েত হয় ঘটনাস্থলে। দু’পক্ষই একে অপরের দিকে পাথর ছুঁড়তে শুরু করে। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ যায় ঘটনাস্থলে। লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। রাত ১টার পরে বন্ধ করে দেওয়া হয় ইন্টারনেট পরিষেবা।

