আগরতলা, ১৬ এপ্রিল (হি. স.) : জলজীবন মিশনের মাধ্যমে ত্রিপুরার গ্রামীণ এলাকার প্রতিটি বাড়িতে পানীয় জলের সংযোগ পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে পানীয়জল ও স্বাস্থ্যবিধান দপ্তর মিশন মুডে কাজ করছে। আজ সচিবালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে ত্রিপুরায় জল জীবন মিশনের কাজের অগ্রগতি এবং বাস্তবায়ন সম্পর্কে পানীয়জল ও স্বাস্থ্যবিধান দপ্তরের মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরে একথা জানান।
তিনি জানান, ২০১৯ সালে জলজীবন মিশন প্রকল্প চালু হয়। ত্রিপুরার গ্রামীণ এলাকার ৭,৬০,০৫২টি বাড়ীর মধ্যে এখন পর্যন্ত জলজীবন মিশন প্রকল্পে ৩,৫৭,৯৭৩টি বাড়িতে ট্যাপ সংযোগের মাধ্যমে পানীয় জলের সংযোগ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। জলজীবন মিশন প্রকল্প চালু হওয়ার আগে ত্রিপুরার গ্রামীণ এলাকায় মাত্র ২৪,৫০২টি বাড়িতে ট্যাপ সংযোগের মাধ্যমে পানীয় জল পৌঁছানো হয়েছিল। শতাংশের নিরিখে এই হার ছিল ৩.২২ শতাংশ। জলজীবন মিশনে এখন পর্যন্ত ত্রিপুরায় মোট ৩,৮২,৪৭৫টি বাড়িতে ট্যাপ সংযোগের মাধ্যমে পানীয়জল পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে। এতে ৫০.৩২ শতাংশ বাড়িতে পানীয় জলের সংযোগ পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে। যা জাতীয় গড় থেকে বেশি। তিনি বলেন, ট্যাপ সংযোগের মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি পানীয়জল প্রদানের ক্ষেত্রে বর্তমানে দেশের মধ্যে ত্রিপুরা ১৬তম স্থানে ও উত্তর পূর্বাঞ্চল রাজ্যগুলির মধ্যে পঞ্চম স্থানে রয়েছে।
সাংবাদিক সম্মেলনে পানীয়জল ও স্বাস্থ্যবিধান দপ্তরের মন্ত্রী আরও জানান, সারা ত্রিপুরায় ১,১৭৮টি গ্রাম পঞ্চায়েত এবং ভিলেজ কমিটির মধ্যে মোট ৮৭২৩টি পাড়া রয়েছে। এর মধ্যে ১,৪৭৬টি পাড়ায় ১০০ শতাংশ ট্যাপ সংযোগের মাধ্যমে পানীয়জল পৌঁছানো হয়েছে। ১, ১৮৫ টি পাড়ায় ট্যাপ সংযোগের মাধ্যমে পানীয়জল পৌঁছানো হয়েছে ৭৫ থেকে ১০০ শতাংশ। ১,৫৪৭টি পাড়ায় ট্যাপ সংযোগের মাধ্যমে পানীয়জল পৌঁছানো হয়েছে ৫০ থেকে ৭৫ শতাংশ এবং ২,৭৬২টি পাড়ায় ট্যাপ সংযোগের মাধ্যমে পানীয়জল পৌঁছানো হয়েছে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত। মন্ত্রী জানান, ত্রিপুরার ৮টি জেলার ৪,৫৩৬টি বিদ্যালয়ের মধ্যে ৩,৪০৭টি বিদ্যালয়ে ট্যাপ সংযোগের মাধ্যমে পানীয়জলের সংযোগ প্রদান করা হয়েছে। শতাংশের নিরিখে এই হার হলো ৭৫.১১ শতাংশ। তিনি জানান, ত্রিপুরার ৮টি জেলায় ৮, ৯৩২টি অঙ্গনওয়াড়ী কেন্দ্র রয়েছে। এরমধ্যে ৪,৭৩৫টি অঙ্গনওয়াড়ী কেন্দ্রে ট্যাপ সংযোগের মাধ্যমে পানীয়জলের সংযোগ প্রদান করা হয়েছে। অবশিষ্ট বিদ্যালয় এবং অঙ্গনওয়াড়ী কেন্দ্রগুলিতে পানীয়জলের সংযোগ পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে দপ্তর কাজ করছে।
পানীয়জল স্বাস্থ্য বিধান দপ্তরের মন্ত্রী জানান, ত্রিপুরার গ্রামীণ এলাকায় মোট ৯১৫টি আয়রন রিমোভাল প্ল্যান্ট রয়েছে। আরও প্রায় ১,৩০০টি নতুন আইরন রিমোভাল প্ল্যান্ট স্থাপনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে দপ্তরের। ত্রিপুরার গ্রামীণ এলাকায় মোট ২,২২০টি ডিপ টিউবওয়েল রয়েছে। আরও প্রায় ১,২০০টি ডিপটিউবওয়েল করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। স্মল বোর ডিপ টিউবওয়েল রয়েছে ৩,৭৫৮টি। আরও পর্যাপ্ত সংখ্যায় স্মল বোর ডিপ টিউবওয়েল স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে দপ্তরের।
তিনি বলেন, আগামী ১ বছরের মধ্যে প্রতিটি পাড়া, বিদ্যালয়, অঙ্গনওয়াড়ী কেন্দ্রে বিশুদ্ধ পানীয়জল পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করছে দপ্তর। জলজীবন মিশন প্রকল্পে কাজের সফলতা নিরিখে কেন্দ্রীয় সরকার ১০০ কোটি টাকা পুরস্কার স্বরূপ ত্রিপুরাকে প্রদান করেছে। এক প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী জানান, ত্রিপুরায় কালচারাল হাব গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ত্রিপুরায় কালচারাল হাব গড়ে তোলার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেছেন। এছাড়া ত্রিপুরার খেলাধুলার মানোন্নয়নে প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো গড়ে তোলার বিষয়ে কেন্দ্রীয় ক্রীড়া ও যুব বিষয়ক মন্ত্রী সঙ্গে আলোচনা হয়েছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।