কলকাতা, ২৫ মার্চ (হি.স.): বীরভূম জেলার রামপুরহাটের বগটুই গ্রামে ৮ জনকে পুড়িরে মারার ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। শুক্রবার সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়ে কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়েছে, দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার করতে হবে। একইসঙ্গে হাইকোর্ট জানিয়েছে, সিবিআই-কে সম্পূর্ণ সাহায্যে করতে হবে রাজ্য সরকারকে। আগামী ৭ এপ্রিলের মধ্যে প্রাথমিক রিপোর্ট জমা দিতে হবে সিবিআই-কে।
রামপুরহাটের বগটুইয়ের ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে কলকাতা হাইকোর্ট। একই সঙ্গে বেশ কয়েকটি জনস্বার্থ মামলাকে একত্র করে শুনানি হয় হাইকোর্টে। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার রায়দান স্থগিত রাখা হয়। এরপর শুক্রবার সকালে প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছে, বগটুই গ্রামের ঘটনার তদন্ত করবে সিবিআই। হাইকোর্ট জানিয়েছে, সিবিআই-কে সবরকম সাহায্য করতে হবে রাজ্যের এবং দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার করতে হবে। আগামী ৭ এপ্রিলের মধ্যে প্রাথমিক রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সত্য উদ্ঘাটনের প্রয়োজন রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন প্রধান বিচারপতি শ্রীবাস্তব।
সিবিআইয়ের হাতে অতিরিক্ত ক্ষমতাও দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। শুধু অভিযুক্তরা নন, এই ঘটনায় কাউকে সন্দেহ করা হলে, তাঁকেও গ্রেফতার এবং হেফাজতে নিতে পারবে সিবিআই। অর্থাৎ সিবিআইয়ের হাতে অতিরিক্ত ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। বগটুই-কাণ্ডে ধৃতদের সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। রাজ্য আর কোনও তদন্ত করবে না বলেই প্রধান বিচারপতি শ্রীবাস্তব স্পষ্ট করে দেন। মামলার শুনানি শুরু হলে প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব বলেন, “আমরা ওই ঘটনার সবিস্তার পর্যবেক্ষণ করেছি। পরিস্থিতি বিবেচনা করে আদালত মনে করছে এই মামলা সিবিআইকে দেওয়া প্রয়োজন।” প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, “বিচারব্যবস্থা এবং সমাজের প্রতি ন্যায়-বিচারের জন্য স্বচ্ছ তদন্ত করে সত্য সামনে আনা জরুরি। সেই প্রয়োজনের কথা মাথায় রেখে এই মামলাটি সিবিআই-এর হাতে তুলে দিতে চায় আদালত।” এর পরই রাজ্য সরকারকে আদালত নির্দেশ দেয়, যত দ্রুত সম্ভব মামলাটি সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিতে হবে। একই সঙ্গে আদালত নির্দেশ দিয়েছে, সিবিআইকে সব রকম সহযোগিতা করতে হবে রাজ্যকে। প্রসঙ্গত, বগটুই গ্রামের ঘটনায় ইতিমধ্যেই ২৫ জনকে গ্রেফতার করেছে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)। সিট এখনও পর্যন্ত এই ঘটনার তদন্ত করছিল।
কলকাতা হাইকোর্টের এই রায়ে আইনের উপর আস্থা বাড়বে বলেই মনে করছেন সিবিআই তদন্ত চাওয়া আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি। ইনিই বৃহস্পতিবারের শুনানিতে সিটের তদন্ত নিয়ে একাধিক প্রশ্ন তোলেন হাই কোর্টে। শুক্রবার রায়ের পর আইনজীবী এডুলজি বলেন, ‘‘এ বার আর রাজ্যের তৈরি সিট তদন্ত করতে পারবে না। আমি দাবি করেছিলাম, কেস ডায়েরি-তে কিছু নেই। কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদেরও সিবিআই হেফাজতে দিয়ে দিতে হবে। কারণ, এক জন অভিযুক্তকে ১৪ দিনের বেশি পুলিশ হেফাজতে দেওয়া যায় না।’’

