Assembly Budget : ত্রিপুরা : ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ২৬৮৯২.৬৭ কোটি টাকার ব্যয় বরাদ্দের প্রস্তাব বিধানসভায় গৃহীত

আগরতলা, ২৪ মার্চ (হি. স.) : আজ বিধানসভায় ২০২২-২৩ আর্থিক বছরের জন্য ব্যয় বরাদ্দের প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। গত ১৭ মার্চ অর্থ দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপমুখ্যমন্ত্রী জিষ্ণু দেববর্মা ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ২৬,৮৯২.৬৭ কোটি টাকার ব্যয় বরাদ্দের প্রস্তাব বিধানসভায় অনুমোদনের জন্য পেশ করেছিলেন। আজ বিধানসভা অধিবেশনের দ্বিতীয়ার্ধে বিরোধী দলের সদস্যদের আনা ছাঁটাই প্রস্তাবের বিরোধীতা করে শিক্ষামন্ত্রী রতনলাল নাথ, কৃষি ও কৃষক কল্যাণ মন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহরায়, জনজাতি কল্যাণ মন্ত্রী মেবার কুমার জমাতিয়া এবং তপশিলী জাতি কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী ভগবান চন্দ্র দাস বক্তব্য রাখেন।

এদিন ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটের উপর ছাঁটাই প্রস্তাব এনে আলোচনা করেন বিধায়ক ভানুলাল সাহা, বিধায়ক রতন ভৌমিক, বিধায়ক সুধন দাস ও বিধায়ক শ্যামল চক্রবর্তী। বাজেট বরাদ্দে ত্রিপুরার প্রকৃত উন্নয়ন সম্ভব নয় বলে তাঁরা দাবি করেন। 

বিরোধী দলের সদস্যদের আনা ছাঁটাই প্রস্তাবের বিরোধীতা করে শিক্ষামন্ত্রী রতনলাল নাথ বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের তথ্য অনুযায়ী আর্থিক নিয়মানুবর্তীতায় উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোর ত্রিপুরার স্থান প্রথম। সমগ্র শিক্ষা অভিযানে ত্রিপুরা বর্তমানে গ্রেড ওয়ানে আছে৷ বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর রাজ্যের প্রতিটি কলেজে প্লেসমেন্ট সেল গঠন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজন ছাত্রছাত্রী বিভিন্ন জায়গায় চাকরিও পেয়েছে। এগুলো সবই আত্মনির্ভর ত্রিপুরার উদাহরণ।

 তাঁর কথায়, বর্তমানে ১৩৫টি বিদ্যালয়ে বৃত্তিমূলক শিক্ষার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যা আগে ছিলনা। ছাত্রছাত্রীদের সুবিধার জন্য একই প্রশ্নপত্রের মাধ্যমে পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। ছাত্রছাত্রীদের বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক দেওয়া হচ্ছে। রাজ্যে শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে বিভিন্ন উদ্যোগের কথাও তিনি তুলে ধরেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন সবার সহযোগিতায় এক ত্রিপুরা শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা গড়ে তোলা সম্ভব হবে।এদিন কৃষি ও কৃষক কল্যাণ মন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহরায় বলেন, ত্রিপুরায় কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। গত চার বছরে তুলনায় অনেক বেশি কৃষি যন্ত্রপাতি কৃষকদের দেওয়া হচ্ছে। অধিক লাভজনক হওয়ায় কৃষকদের ভূট্টা, মাসকলই চাষে উৎসাহিত করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে ২৮টি কৃষক বন্ধু কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। আরও ৯টি কেন্দ্র চালু করার জন্য প্রস্তুত আছে। কৃষকদের আয় বাড়াতে ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে ধান কেনা হচ্ছে।

আলোচনায় তিনি ত্রিপুরায় জলপথ ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য রাজ্য সরকারের উদ্যোগের কথাও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, সোনামুড়ায় ভাসমান জেটির কাজ শেষ হয়েছে। বাংলাদেশের দাউদকান্দি থেকে সোনামুড়া পর্যন্ত জলযান আসার কাজ সফল হয়েছে। সোনামুড়া থেকে মহারানী ব্যারেজ পর্যন্ত ৫২ কিলোমিটার গোমতী নদীর ড্রেজিংয়ের কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে।

পরিবহণমন্ত্রী জানান, হাওড়া নদীর উন্নতির জন্যও একটি প্রস্তাব কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে।আজ জনজাতি কল্যাণ মন্ত্রী মেবার কুমার জমাতিয়া বলেন, ত্রিপুরায় রাজন্য আমল থেকেই সকল বর্ণ ও ধর্মের লোক বাস করে আসছে। রাজ্যের জনজাতিদের কল্যাণে আশির দশকে ষষ্ঠ তপশিলী অনুযায়ী ত্রিপুরা উপজাতি এলাকা স্বশাসিত জেলা পরিষদ গঠন করা হয়েছিল। যার ক্ষমতার সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এই সরকার জনজাতিদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক দ্রুত উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করছে। এডিসি এলাকার অধিক ক্ষমতায়নে এই সরকার বিশ্বাসী এবং এই লক্ষ্যেই কাজ করা হচ্ছে, বলেন তিনি।

আলোচনায় অংশ নিয়ে তপশিলী জাতি কল্যাণ মন্ত্রী ভগবান চন্দ্র দাস জানান, তপশিলী জাতি অংশের মানুষের উন্নয়নে রাজ্য সরকার আন্তরিকতার সাথে কাজ করছে। তপশিলী জাতি অংশের ছাত্রছাত্রীদের ছাত্রাবাসগুলো বেহাল অবস্থায় ছিল। এই সরকার আসার পর ইতিমধ্যেই ২৭টি ছাত্রাবাসের সংস্কার করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *