BRAKING NEWS

Healthy Tripura : সুস্থ ত্রিপুরা শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা গঠনে পক্ষকালব্যাপী বিশেষ অভিযান রাজ্যে

আগরতলা, ২৩ ফেব্রুয়ারি : অ্যানিমিয়া ও টিবি মুক্ত ত্রিপুরা গড়তে পক্ষকালব্যাপি বিশেষ অভিযান এবং ইনটেনসিফায়েড পাল্স পোলিও ইমিউনাইজেশন কর্মসূচির রাজ্যভিত্তিক শুভ সূচনা হতে চলেছে। আজকের শিশু-ই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। শিশু-ই সমাজ গঠনের কারিগড়। তাই শিশুকে শারীরিক ও মানসিক দিক থেকে সুস্থ ভাবে বেড়ে তুলতে বদ্ধ পরিকর রাজ্য সরকার। ২৪ ফেব্রুয়ারি আগরতলা মুক্তধারা অডিটরিয়ামে অ্যানিমিয়া ও টিবি মুক্ত ত্রিপুরা গড়তে পক্ষকালব্যাপী বিশেষ অভিযান শুরু হবে। সাথে ইনটেনসিফায়েড পালস পোলিও ইমিউনাইজেশন কর্মসূচিরও রাজ্যভিত্তিক শুভ সূচনা হবে। আজ সাংবাদিক সম্মেলনে এ-বিষয়ে জানিয়েছেন জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের ত্রিপুরা মিশন অধিকর্তা ডা: সিদ্ধার্থ শিব জৈসয়াল।


২০১৪ সালে ভারতবর্ষ পোলিওমুক্ত দেশ হিসেবে ঘোষিত হয়েছে। কিন্তু দেশে পোলিও এখনও রয়েছে এবং পুনরায় আমাদের দেশেও ফিরে আসতে পারে। শিশুর সুরক্ষায় যেন বিন্দুমাত্র অসাবধানতা না থাকে সেই জন্যই ভারতে পালস পোলিও কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।


২৭ ফেব্রুয়ারী রাজ্যে শূণা থেকে পাঁচ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের ২ ফোঁটা পোলিও ড্রপ খাওয়ানো হবে। এই কর্মসূচিতে প্রায় ৩ লক্ষ ৫০ হাজার শিশুকে পোলিও ডোজ দেওয়া হবে। ত্রিপুরার মোট ৩৬২১টি বুথ-এ পোলিও ডোজ খাওয়ানো হবে। যে সমস্ত শিশুদের ২৭ ফেব্রুয়ারী পোলিও এর দুই ফোঁটা ডোজ খাওয়ানো সম্ভব হবে না, তাদের ২৮ ফেব্রুয়ারী ও ১ মার্চ আশা কর্মী ও স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ২ ফোঁটা পোলিও ডোজ দাওয়াবেন।


সুস্থ ত্রিপুরা শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা গঠনের লক্ষ্যে রাজ্য সরকার ২ মার্চ থেকে ১৬ মার্চ পর্যন্ত পক্ষকালব্যাপি বিশেষ অভিযান কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। অ্যানিমিয়া মুক্ত ত্রিপুরা গড়তে এবং ত্রিপুরাকে টিবি মুক্ত করতে গোটা রাজ্যে ১৫ দিন এই কর্মসূচি চলবে। অ্যানিমিয়া মুক্ত ভারত কর্মসূচিতে আশা ও স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ৬-৯ মাস বয়সের শিশুদের দু-বার আয়রন এন্ড ফলিক অ্যাসিড সিরাপ খাওয়াবেন। ৫-৯ বছর বয়সের শিশুদের সপ্তাহে একটি গোলাপী আয়রন এন্ড ফলিক অ্যাসিড ট্যাবলেট খাওয়ানো হবে। ১০-১৯ বছর বয়সের কিশোর-কিশোরীদের সপ্তাহে একটি নীল আয়রন এন্ড ফলিক অ্যাসিড ট্যাবলেট খাওয়ানো হবে। গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে গর্ভাবস্থার প্রথম ৪ মাস থেকে ১৮০ দিন অব্দি লাল আয়রন এন্ড ফলিক অ্যাসিড ট্যাবলেট খাওয়ানো হবে। মাতৃদুগ্ধ প্রদানকারী মায়েদের ক্ষেত্রে প্রসবের পর ১৮০ দিন আয়রনের লাল ট্যাবলেট খাওয়ানো হবে। ২০ থেকে ৪৯ বছর বয়সী প্রজননক্ষম মহিলাদের সপ্তাহে একটি করে লাল। আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ানো হবে। এই কর্মসূচিতে আনুমানিক ১৪ হাজারের অধিক গর্ভবতী মহিলা এবং ১৮ হাজারেরও অধিক প্রজননক্ষম মহিলাদের রক্তাল্পতা দূরীকরণ সম্বলিত পরিষেবা প্রদান করা হবে।


২০২৫ সালের মধ্যে দেশব্যাপী যক্ষ্মা নির্মূলীকরণের লক্ষ্যে আয়োজিত হবে বিশেষ কর্মসূচি যেখানে প্রশ্নোত্তর পর্ব এবং স্ক্রিনিং এর মাধ্যমে টিবি সনাক্তকরণ করা হবে। ত্রিপুরাকে টিবি মুক্ত করতে ২ মার্চ থেকে ১৬ মার্চ পর্যন্ত পক্ষকালব্যাপী বিশেষ অভিযানে আশা ও স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে টিবি রোগী সনাক্ত করবেন। প্রয়োজনে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা নিরীক্ষার পর যদি কোনও ব্যক্তির যক্ষ্মা রোগ সনাক্ত হয় তাহলে তাকে বিনামূল্যে ডট পরিষেবায় এবং যোজনায় আওতাভুক্ত করা হবে। এই পক্ষকালব্যাপী বিশেষ অভিযান-এ আশা ও স্বাস্থ্যকর্মীরা প্রায় ৮৪ হাজার বাড়ি পরিদর্শন করবেন। গোটা রাজ্যে এ রোগ হতে পারে এমন প্রায় সাড়ে ৪ লক্ষ মানুষের উপর টিবি রোগ সনাক্তকরণের কাজ করা হবে। নিক্ষয় প্রকল্পের অধীনে থাকা যক্ষ্মা রোগীদের চিকিৎসা চলাকালীন পুষ্টিকর খাবারের জন্য প্রতিমাসে ৫০০ টাকা করে দেওয়া হয়।


রক্তাল্পতা দুরীকরণ এবং যক্ষ্মা নির্মূলীকরণ সুনিশ্চিত করতে রাজ্যের ৩৬০০ টির অধিক স্কুল এবং ৭০০ টির অধিক অঙ্গনওয়াড়িকেন্দ্রে পক্ষকালব্যাপী এই কর্মসূচি আয়োজিত হবে। রাজ্যের মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্র, জাতীয় স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিবাস, বিভিন্ন চা বাগান, বস্তি এলাকা, ইট ভাট্টাতেও চলবে এই বিশেষ কর্মসূচি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *