আগরতলা, ১০ ফেব্রুয়ারী (হি. স.) : বাংলাদেশে হিন্দু মন্দির এবং হিন্দুরা আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় ত্রিপুরায় গত ডিসেম্বরে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উত্সব স্থগিত রাখা হয়েছিল। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় আগামী ২৩ থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারি ত্রিপুরায় দ্বিতীয় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উত্সবের আয়োজন করা হয়েছে। আজ আগরতলায় বাংলাদেশের হাইকমিশনের নবনিযুক্ত সহকারী হাইকমিশনার আরিফ মোহাম্মদ ও প্রথম সচিব মো. এস.এম আসাদুজ্জামান আজ মহাকরণে গিয়ে ত্রিপুরা সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরীকে চলচ্চিত্র উত্সবে উপস্থিত থাকার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। দ্বিতীয় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসব,আগরতলা-২০২২-এ বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার জন্য আমন্ত্রণ পত্র তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের মন্ত্রীর হাতে তোলে দেন।
ত্রিপুরা-বাংলাদেশের মধ্যে আরও সুন্দর সম্পর্ক তৈরিতে উভয়েই সর্বাত্মকভাবে চেষ্টা করবেন এটাই ছিলো আজকে উভয়ের মধ্যে আলোচনার মূল বিষয়বস্তু। মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী ও বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনার আরিফ মোহাম্মদ উভয়েই নিজ নিজ অবস্থান থেকে ত্রিপুরা ও বাংলাদেশের মধ্যে আরো ভালো সম্পর্ক গড়তে প্রয়োজনীয় ভূমিকা নেবেন এবং উভয়দেশের জনগণের কল্যাণে ক্রীড়া-সংস্কৃতি সহ বহুমাত্রিক যোগাযোগ ও সহযোগিতা আরও সম্প্রসারিত করার বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলে একে অপরকে আশ্বাস প্রদান করেন।
এদিন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনার আরিফ মোহাম্মদকে বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের চেয়েও জনগণের সঙ্গে জনগণের সম্পর্কটা অনেক মজবুত ভিত্তির ওপরে দাঁড়িয়ে আছে। দুই দেশের সাংস্কৃতিক জগতের মধ্যে অনেক মিল রয়েছে। এই কারণে আবহমান কাল থেকে উভয় দেশ সাংস্কৃতিক দিক থেকে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ভাবে সম্পর্কিত।
তাঁর কথায়, সাংস্কৃতিক দিক থেকে দুই দেশের মধ্যে অত্যন্ত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিদ্যমান। বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক দল যেমন ভারতে তাদের কার্যক্রম প্রদর্শন করে, তেমনি ভারতীয় সাংস্কৃতিক দলও বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম উপস্থাপন করে। এর মাধ্যমে দুই দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের একটি শক্তিশালী সেতুবন্ধন রচিত হয়েছে।
তাঁর মতে, প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সর্বক্ষেত্রে সহযোগিতামূলক মনোভাব থাকলে উভয় দেশেরই উন্নয়ন করা অনেক সহজ হয়। যেকোনো সমস্যা দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করার পাশাপাশি নানা উন্নয়নমূলক বিষয়ে এক সঙ্গে কাজ করা সম্ভব হয়। তাঁর বক্তব্য, আমাদের সব সময় জনগণের কথা চিন্তা করতে হবে। শুধু আমাদের দেশের জনগণ না, প্রতিবেশী রাষ্ট্রের জনগণও যাতে সুফলটা পেতে পারে। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব আন্তরিকভাবে সবসময়ই কাজ করে চলেছেন।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদারের পাশাপাশি উভয় দেশের জনগণের আস্থা অর্জনের প্রতি গুরুত্বারোপ করেন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী। তিনি আরও বলেন, ভারত বাংলাদেশ উভয় দেশ ভ্রাতৃত্বের বন্ধনের মতোই উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের সম্পর্ককে স্থায়ী ভিত্তি দিতে সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়াক্ষেত্রে বন্ধন সুদৃঢ় করা আমাদের প্রধান লক্ষ্য হবে। সাথে তিনি যোগ করেন, সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়া আমাদেরকে সীমানার মাধ্যমে বিভক্ত করলেও আমাদের সাংস্কৃতিক বাঁধন কোনদিনই ছিন্ন হয়নি। দু‘দেশের একই ধারার সাংস্কৃতিক বন্ধন ভারত-বাংলাদেশের মাঝে প্রধান সেতুবন্ধন রচনা করে চলেছে সুদীর্ঘ বছর ধরে। ত্রিপুরা সরকার সর্বদা বাংলাদেশের প্রতি সহযোগিতায় এগিয়ে আসবে, আশ্বাস দেন তিনি।

