গুয়াহাটি, ৮ ফেব্রুয়ারি (হি.স.) : গুয়াহাটির কালাপাহাড় এলাকার গোপীনাথনগরে অবস্থিত তারাহীরা কমপ্লেক্সের স্বত্বাধিকারিণী ৬০-ঊর্ধ্ব মহিলা অণু হাজরিকাকে খুন করার অভিযোগে দুজনকে আটক করেছে মহানগর পুলিশ। ধৃতরা যথাক্রমে অণু হাজরিকার পরিচারক জিণ্টু হাজরিকা এবং গাড়ি চালক প্ৰাণজিৎ শৰ্মা। তবে ঘটনার মূল অভিযুক্ত অক্ষয়কে গ্রেফতার করা হয়নি।
গতকাল বেলা প্রায় সাড়ে ১১টা নাগাদ কালাপাহাড়ের গোপীনাথনগরে অবস্থিত তারাহীরা কমপ্লেক্সের স্বত্বাধিকারিণী ৬০-ঊর্ধ্ব মহিলা অণু হাজরিকার লাশ উদ্ধার হয়েছিল আবাসনে তাঁর কোঠায়। প্রাথমিক তদন্তেই তাঁকে খুন করা হয়েছে বলে নিশ্চিত হয়ে পুলিশ তীব্র তদন্ত-অভিযান শুরু করে। অণুদেবীকে খুন করে আততায়ীরা তাঁর ঘরের আলমিরা, ড্রয়ার ভেঙে নগদ বহু লক্ষ টাকা, সোনা-দানা লুট করে নিয়ে যায়। কেবল তা-ই নয়, এরা সিসিটিভির ক্যামেরাও ভেঙে গেছে। পুলিশের বক্তব্য, রবিবার রাতে অণুদেবীকে খুন করা হয়েছিল।
বিশাল আবাসনের স্বত্বাধিকারিণী অণুদেবী তাঁর ঘরে একা বসবাস করতেন, জানিয়েছেন আবাসিকরা। তাঁদের কাছে জানা গেছে, প্ৰায় ৫ বছর আগে এক সড়ক দুর্ঘটনায় তাঁর স্বামী ও একমাত্র ছেলের মৃত্যু হয়েছিল। তাঁর স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির মূল্য কমপক্ষে আট কোটি টাকা হবে। একটি এনজিওর কর্মকর্তা নাকি ১১টা পর্যন্ত অণুদেবীর মোবাইল হ্যান্ডসেটে বহুবার ফোন করেছিলেন। তিনি ফোনগুলি রিসিভ না করায় ওই কর্মকর্তা এসে তাঁর ঘরে গিয়ে অণুদেবীর মৃতদেহ দেখে আবাসিকদের খবর দেন। এর পরই স্থানীয় বাসিন্দা, থানা পুলিশ, মিডিয়ার ভিড় জমে যায়।
এদিকে, ধৃত পরিচারক জিণ্টু হাজরিকা পুলিশের কাছে বিস্ফোরক বয়ান দিয়েছে। গতকাল সোমবার বেলা ১১টায় অণুদেবীর হিসাব রক্ষক অক্ষয় নামের যুবক তাকে ফোন করেছিল। অণু হাজরিকার কোঠায় তাকে একা প্রবেশ করতে বারণ করেছিল অক্ষয়। তবে পরিচারক জিণ্টু বার বার তার বয়ান বদল করছে, জানিয়েছেন পুলিশের পদস্থ তদন্তকারী আধিকারিক।
পুলিশ অফিসার জানান, আবাসন এবং অন্য খাতের ভাড়া ইত্যাদি ব্যাপারে অণু হাজরিকাকে প্রায়ই ব্যাংকে যাতায়াত করতে হত। কিন্তু কোভিড পরিস্থিতির জন্য ব্যাংকে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন তিনি। ফলে প্রাপ্ত নগদ টাকা তিনি আবাসনে তাঁর নিজের ঘরে রেখে দিতেন। তবে টাকার অঙ্ক বেশি হলে তিনি তাঁর হিসাব রক্ষক জনৈক অক্ষয়কে দিয়ে সেগুলি ব্যাংকে জমা করাতেন। অতি সম্প্রতি সংগৃহীত টাকাগুলি তিনি ব্যাংকে না পাঠিয়ে ঘরেই রেখে দিয়েছিলেন।
গচ্ছিত টাকার কানাকড়িও পুলিশ তাঁর ঘর থেকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়নি। পুলিশের ধারণা টাকার জন্যই অণু হাজরিকাকে খুন করা হয়েছে। তদন্ত চলছে, ঘটনার আসল রহস্য শীঘ্রই উদ্ঘাটন হবে বলে আশাবাদী মহানগর পুলিশ।