নয়াদিল্লি, ১৭ জানুয়ারি (হি.স.): আবারও নক্ষত্র-পতন, প্রয়াত হলেন কিংবদন্তী কত্থক নৃত্যশিল্পী পণ্ডিত বিরজু মহারাজ। পণ্ডিত বিরজু মহারাজের প্রয়াণে গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। শোক-বার্তায় রাষ্ট্রপতি জানিয়েছেন, “একটি যুগের অবসান। বিরজু মহারাজের প্রয়াণ ভারতীয় সঙ্গীত ও সাংস্কৃতিক জগতে শূন্যতা সৃষ্টি করল।” রবিবার গভীর রাতে দিল্লিতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন কত্থক নৃত্যের এই সাধক। পরিবার সূত্রে খবর, নাতি-নাতনিদের সঙ্গেই খেলছিলেন তিনি। হঠাৎই শরীর খারাপ হওয়ায় তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি।
বিরজু মহারাজের প্রয়াণে ব্যথিত রাষ্ট্রপতি সোমবার সকালে টুইটারে নিজের মনের ভাব ব্যক্ত করে লিখেছেন, “কিংবদন্তি পণ্ডিত বিরজু মহারাজের প্রয়াণ একটি যুগের অবসান ঘটিয়েছে। ভারতীয় সঙ্গীত এবং সাংস্কৃতিক জগতে গভীর শূন্যতা সৃষ্টি করেছে। তিনি একজন আইকন হয়ে উঠেছিলেন, বিশ্বব্যাপী কত্থককে জনপ্রিয় করতে অতুলনীয় অবদান রেখেছিলেন। তাঁর পরিবার ও অনুরাগীদের প্রতি সমবেদনা।”
কালকা-বিনন্দাদিন ঘরানার শিল্পী বিরজু মহারাজের জন্ম ১৯৩৮ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি লখনউয়ে কত্থকের ‘মহারাজা’ পরিবারে। সাত পুরুষ ধরেই তাঁদের পরিবারে কত্থক নাচের চর্চা হয়ে আসছে। জন্মসূত্রে তাঁর নাম ছিল ব্রিজমোহন নাথ মিশ্র। সঙ্গীত ও নৃত্যের পরিবেশেই বড় হন বিরজু মহারাজ। কত্থক নাচ শিক্ষার শুরু গুরু তথা পিতা অচ্ছন মহারাজের হাত ধরে। পাশাপাশি, কাকা শম্ভু মহারাজ এবং লাচ্চু মহারাজ বরাবরই অনুপ্রাণিত করেছিলেন বিরজু মহারাজকে। শিশুশিল্পী হিসাবেই বাবার সঙ্গে মঞ্চ ভাগ করতে শুরু করেন বিরজু মহারাজ। এমনকী কৈশোরেই তাঁর নামের সঙ্গে জুড়ে গিয়েছিল ‘গুরু’ তকমাও। রামপুরের নবাবের দরবারে নৃত্য পরিবেশন করতেন বিরজু মহারাজ। শুধু কত্থক নৃত্যই নয়, অসাধারণ সব বাদ্য বাজাতে পারতেন বিরজু মহারাজ। প্রায় সবধরনেরই বাদ্যেই তিনি ছিলেন পারদর্শী। তবে তার মধ্যে তবলা ও নালে দখল ছিল সবচেয়ে বেশি। একইসঙ্গে অসাধারণ ঠুংরি, দাদরা, ভজন ও গজলও গাইতে পারতেন পণ্ডিতজি। অন্যদিকে, খুব সুন্দর ছবিও আঁকতে পারতেন।

