বিলোনিয়া(ত্রিপুরা), ১৩ই জানুয়ারি (হি. স.) : গৃহবধুকে ধর্ষণের পর প্রমান লোপাটের জন্য খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত প্রতিবেশী যুবকের আজ যাবজ্জীবন কারাদন্ডের সাজা দিয়েছে আদালত। এছাড়া তাকে ২০ হাজার টাকা আর্থিক জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে তিন মাসের কারাবাসের সাজা শুনিয়েছেন জেলা ও দায়রা আদালতের বিচারক আশুতোষ পান্ডে।
ওই মামলা সম্পর্কে পিপি আক্তার হোসেন মজুমদার বলেন, ২০২০ সালের ৫ অক্টোবর বাইখোড়া থানাধীন উত্তর ইচাছড়া এলাকায় রবিধন পাড়া লিচু বাগানে লাকড়ি সংগ্রহে গিয়ে ধর্ষিতা হন থৈক্রায়ু মগ(৩২)। তাঁর প্রতিবেশী হিরন্ত ত্রিপুরা(২০) ধর্ষণের পর খুন করে প্রমান লোপাটের জন্য মৃতদেহ পাশেই মুহুরী নদীর পাড়ে জঙ্গলে ফেলে পালিয়ে যান। পালানোর আগে ওই মহিলার স্বর্ণালংকার এবং লাকড়ি কাটার দা নদীর জলে ফেলে দেন।
এদিকে, দীর্ঘ সময় হলেও বাড়ি ফিরে না আসায় মহিলার স্বামী ও তার ছেলে তাঁকে খুজতে বের হন এবং লিচু বাগানে তার মৃতদেহ দেখতে পান। সঙ্গে সঙ্গে বাইখোড়া থানায় খবর দেওয়া হয় এবং পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে মৃতদেহ উদ্ধার করেন ও ময়না তদন্তের জন্য পাঠিয়ে দেন। তদন্তে নেমে ডগ স্কোয়াড ওই মহিলার প্রতিবেশী হিরন্ত ত্রিপুরাকে চিহ্নিত করে এবং পুলিশ তাঁকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পুলিশের জেরায় হিরন্ত ত্রিপুরা ওই মহিলাকে ধর্ষণ এবং খুনের অপরাধ স্বীকার করেন।
মৃতার স্বামীর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ভারতীয় ফৌজদারি দন্ডবিধি ৩৪১, ২০১, ৩৭৬(১) এবং ৩০২ ধারায় মামলা রুজু করে। তদন্তকারী আধিকারিক মহিলা সাব-ইন্সপেক্টর রুমা নোয়াতিয়া যথাসময়ে তদন্ত সমাপ্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন। আদালতে ১৭ জন স্বাক্ষীর বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। দীর্ঘ শুনানি শেষে আজ আজ বিলোনিয়া জেলা ও দায়রা আদালতের বিচারক আশুতোষ পান্ডে ধর্ষণ ও খুনের মামলায় অভিযুক্ত হিরন্ত ত্রিপুরাকে দোষী সাব্যস্ত করেন।
বিচারক হিরন্ত ত্রিপুরাকে ভারতীয় দন্ডবিধি ৩০২ ধারায় যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ডিত করেন। সাথে ২০ হাজার টাকা জরিমানা। অনাদায়ে অতিরিক্ত তিন মাসের হাজতবাস করতে হবে। এছাড়া, ৩৪১ ধারায় এক মাসের জেল, ৩৭৬(১) ধারায় দশ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও ১৫ হাজার টাকা জরিমানা। অনাদায়ে ২ মাসের অতিরিক্ত হাজতবাস এবং ২০১ ধারায় তিন বছরের জেল ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন বিচারক। অনাদায়ে ১৫ দিনের হাজতবাসের সাজা শুনিয়েছেন বিচারক।

