কলকাতা, ১৬ ডিসেম্বর (হি. স.) : দল আমাকে তাড়াতে পারে। আমি নগণ্য কার্যকর্তা। গৌরব বিশ্বাস ও তিস্তা বিশ্বাসের পাশে আছি। পুরভোটের আগে বঙ্গ বিজেপির অস্বস্তি বাড়িয়ে ফের ফেসবুক পোস্ট করলেন রূপা গঙ্গোপাধ্যায়।
কিছুদিন আগেই পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় কলকাতা পুরসভার ৮৬ নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী বিজেপি কাউন্সিলর তিস্তা বিশ্বাসের। এই ওয়ার্ডে এবার রাজর্ষি লাহিড়িকে প্রার্থী করে গেরুয়া শিবির। প্রতিবাদ জানিয়ে পাল্টা নির্দল হিসেবে দাঁড়িয়েছেন বিজেপির সদ্য প্রয়াত বিদায়ী কাউন্সিলরের স্বামী, গৌরব বিশ্বাস। ৮৬ নম্বর ওয়ার্ডের নির্দল প্রার্থীর সমর্থনে সরব হন সাংসদ রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। এই ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থীর বিরুদ্ধেও প্রকাশ্যে মুখ খোলেন তিনি। পাশাপাশি নির্দল প্রার্থীকে সমর্থন জানায় হিন্দু মহাসভাও।
হিন্দু মহাসভা-র রাজ্য কার্যনির্বাহী সভাপতি চন্দ্রচূড় গোস্বামী বলেছিলেন, তথাগত রায় যে অভিযোগ তুলেছিলেন, সেই ঘটনা শুধু রাজনৈতিক বিষয় নয়। সামাজিক বিষয়। এখানেও টিকিট নিয়ে একই অভিযোগ উঠেছে। তাই আমরা গৌরবের পাশে আছি। পুরভোটের টিকিট বণ্টন নিয়ে রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ের ক্ষোভ আছড়ে পড়ে ভার্চুয়াল বৈঠকেও। বিজেপি সাংসদের প্রতিক্রিয়ায় হতচকিত হয়ে যান দলীয় নেতৃত্ব। কেন তাঁকে পুরভোটের বৈঠকে ডাকা হয়েছে এই নিয়ে সরাসরি প্রশ্ন তোলেন রূপা।
সংসদের কারণে দিলীপ ঘোষ, সুকান্ত মজুমদার, রূপা গঙ্গোপাধ্যায় সকলে দিল্লিতে ছিলেন। কলকাতায় ছিলেন, দলের বাকি নেতৃত্ব। এই পরিস্থিতিতে রাতে পুরভোট নিয়ে বিজেপির ভার্চুয়াল বৈঠক হয়। কিন্তু, ভার্চুয়াল বৈঠক থেকে বেরিয়ে ফেসবুকে তিস্তা বিশ্বাসের মৃত্যু নিয়ে চাঞ্চল্যকর মন্তব্য করেন রূপা। একইসঙ্গে টাকা দিয়ে ভোটের টিকিট বিলির অভিযোগ তোলেন বিজেপির বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার সামাজিক মাধ্যমে রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ের পোস্ট নিয়ে জোর গুঞ্জন শুরু হয়েছে। তিনি লিখেছেন, ‘আমার তো আর হোর্ডিং লাগাবার ক্ষমতা নেই। থাকলে তোদের দু’জনের ছবি টাঙিয়ে বলতাম—আমি তিস্তার সঙ্গে আছি, থাকব’। গৌরব বিশ্বাসকে টিকিট দেয়নি বিজেপি। তারপর থেকেই ক্ষুব্ধ রূপা।
কলকাতা পুরসভা নির্বাচনের তারকা প্রচারকদের তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘অনেক স্মৃতি ভিড় করে আসছে। ২০১৫ সালের পুরসভা নির্বাচনের কথা এসে ভিড় করছে। আমাকে অনেক শারীরিক ও মানসিক যন্ত্রণা সহ্য করতে হয়েছিল তখন। আজ আমি স্বীকার করি, আমি হয়ত রাজনীতির লোক নই। দল আমাকে তাড়াতে পারে, শো–কজ করতে পারে, সাসপেন্ড করতে পারে, কিন্তু দল থেকে বেরিয়ে যেতে বাধ্য করতে পারে না।’ দলের নির্দেশিকা লঙ্ঘন করেছেন এই পোস্টের মাধ্যমে। তাই এখন গুঞ্জন, বিজেপি ছাড়তে পারেন রূপা গঙ্গোপাধ্যায়।