নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১২ ডিসেম্বর৷৷ রাজ্যে গার্হস্থ্য হিংসার ঘটনা ক্রমেই বাড়ছে৷ স্ত্রীদের উপর নির্যাতনের ঘটনা যেমন ঘটছে তেমনি স্বামীদের উপর অত্যাচারের ঘটনাও ঘটছে৷ সম্প্রতি বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে যাতে প্রকাশ্যে এসেছে স্বামীরা নির্যাতনের শিকার৷ অনেক ক্ষেত্রেই অসহ্য যন্ত্রণায় আত্মহত্যার পথও পেছে নিয়েছেন৷ আগরতলা শহরের আড়ালিয়া এলাকায় এক ব্যক্তি নির্যাতনের জ্বালায় অতিষ্ট হয়ে গায়ে আগুন ধরিয়ে দিয়ে জিবি হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন৷
এদিকে, ইন্দ্রনগর আইটিআই রোডে একটি ফ্ল্যাট থেকে এক ব্যক্তির ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে৷ মৃত ব্যক্তির নাম সাধন সরকার৷ ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে৷ ঘটনার বিবরণে জানা যায় ইন্দ্রনগর আইটিআই রোডের ফ্ল্যাটে বসবাস কারী সাধন সরকার অন্যান্য দিনের মতোই সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে বাথরুমে যান৷ বাথরুম থেকে বের হয়ে আসতে দেরী হচ্ছে দেখে তার স্ত্রী তাকে ডাকতে বাথরুমের দিকে এগিয়ে যান৷ বাথরুমের বাইরে থেকে ডাকাডাকি করেও তিনি কোনো সাড়া পাচ্ছিলেন না৷ তাতে তার স্ত্রীর মনে সন্দেহ দেখা দেয়৷ বাথরুমের দরজা ভেঙ্গে তিনি লক্ষ্য করেন বাথরুমের ভিতরে গামছা দিয়ে গলায় ফাঁসিতে ঝুলে রয়েছে তার স্বামীর দেহ৷ সঙ্গে সঙ্গে তিনি দা দিয়ে গামছা কেটে নিচে নামিয়ে ফেলেন৷ মহিলার ধারণা ছিল তাকে বাঁচানো যাবে৷ মহিলার চিৎকার শুনে লোকজন ছুটে আসেন৷ খবর দেওয়া হয় দমকল বাহিনীকে৷ দমকল বাহিনীর জওয়ানরা ছুটে এসে দেহটি উদ্ধার করে জিবি হাসপাতালে নিয়ে যায়৷ জিবি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন৷ তার মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়তেই এলাকায় গভীর শোকের ছায়া নেমে আসে৷ মৃত সাধন সরকারের স্ত্রী জানান তাদের পরিবারে কোন ধরনের ঝামেলা ছিল না৷ পুলিশ এ ব্যাপারে অস্বাভাবিক মৃত্যু জনিত একটি মামলা গ্রহণ করে এ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে৷তবে এর পেছনে অন্য কোন রহস্য আত্মগোপন করে রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ৷
রাজধানী আগরতলা শহর সংলগ্ণ আড়ালিয়া লোকনাথ আশ্রম সংলগ্ণ এলাকায় এক ব্যক্তি পারিবারিক মানসিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে শেষ পর্যন্ত গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে৷ ওই ব্যক্তির নাম রতন মিয়া৷ বর্তমানে সে জিবি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন৷ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে৷ জিবি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অগ্ণিদগ্দ রতন মিয়া জানায় দীর্ঘদিন ধরে স্ত্রী পুত্র ও পুত্রবধু তার উপর মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন শুরু করে৷ নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে শেষ পর্যন্ত সে অগ্ণিদগ্দ হয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে৷ রতন মিয়ার আর্ত চিৎকার শুনে আশপাশ এলাকার লোকজন ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান৷ বর্তমানে রতন মিয়া জিবি হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে৷ অবশ্য এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে রতন মিয়ার স্ত্রী জানায় তার ওপর শারীরিক নির্যাতনের কোন ধরনের ঘটনা ঘটেনি৷ তাদের দাবি খন্ডন করে অগ্ণিদগ্দ রতন মিয়া জানায় টাকা-পয়সা নিয়ে প্রতিনিয়ত ঐ পরিবারের লোকজনদের সঙ্গে তার ঝামেলা চলছিল নির্যাতন শুরু হয়৷ নির্যাতনের মাত্রা চরম আকার ধারণ করা হয়েছে অগ্ণিদগ্দ হয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে বলে জানিয়েছে৷

