Vidyajyoti project : বিদ্যাজ্যোতি প্রকল্পে রাজ্যের ১০০টি বিদ্যালয়কে সিবিএসই-তে রূপান্তরিত করা হবে : শিক্ষামন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১০ ডিসেম্বর৷৷ বিদ্যাজ্যোতি প্রকল্পে রাজ্যের গ্রামীণ এবং শহর এলাকা মিলিয়ে মোট ১০০টি বিদ্যালয়কে সিবিএসই-তে রূপান্তরিত করা হবে৷ ইতিমধ্যেই ৫২টি বিদ্যালয়ের সিবিএসই অনুমোদন পাওয়া গেছে৷ বাকিগুলি আগামী কিছুদিনের মধ্যেই পাওয়া যাবে৷ আজ সচিবালয়ের কনফারেন্স হলে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে এই সংবাদ জানান শিক্ষামন্ত্রী রতনলাল নাথ৷
তিনি জানান, বিদ্যাজ্যোতি প্রকল্পে ১০০টি সুকলের পরিচালনার জন্য আগামীতে মোট ১৪০০ জন শিক্ষক ও কর্মী নিয়োগ করা হবে৷ তিনি জানান, বিভিন্ন স্তরের কর্মীদের মধ্যে থাকবে একাডেমিক কাউন্সিলার, স্পেশাল এডুকেটার, ফিজিক্যাল এডুকেশন টিচার, স্টাফ নার্স, মনোবি’ান, সমাজ বিজ্ঞান, ভূগোল, অর্থনীতি, লাইবেরিয়ান ইত্যাদি৷


এসব ক্ষেত্রের জন্য শিক্ষক, কর্মী নিয়োগ করা হবে৷ তিনি জানান, বর্তমানে এই ১০০টি বিদ্যালয়ের মধ্যে রয়েছে ৯২ হাজার ৭৩৩ জন ছাত্রছাত্রী এবং শিক্ষক শিক্ষিকা রয়েছেন ২৯৬৭ জন৷ তিনি জানান, বিদ্যাজ্যোতি প্রকল্পে পরিকাঠামোগত উন্নয়নের লক্ষ্যে গ্রামীণ এলাকার ৫৮টি বিদ্যালয়ের জন্য ১৪৬ কোটি টাকা এবং শহর এলাকায় ৪২টি বিদ্যালয়ের জন্য ১০৫ কোটি ৯ লক্ষ টাকা চাওয়া হয়েছে৷ তিনি জানান, এই বিদ্যালয়গুলি হবে স্পেশাল ক্যাটাগরির সুকল৷ রাজ্যের যেকোন প্রান্ত থেকে ছাত্রছাত্রী এগুলিতে ভর্ত্তি হতে পারবে৷ সুকলগুলি হবে সিঙ্গেল সিফটেড৷
বিদ্যাজ্যোতি প্রকল্পের অধীনে ১০০টি বিদ্যালয়ের জন্য পি আই-র ব্যবস্থা করার জন্য শিক্ষা দপ্তরকে জানানো হয়েছে৷ এছাড়াও প্রতিটি বিদ্যালয়ে থাকবে চিকিৎসকের সুুবিধা৷ এই সুকলগুলির নার্সারির ক্ষেত্রে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদেরও রাখা হবে৷ মন্ত্রী জানান, প্রতিটি সুকলে কলা-সংস্ক’তির চর্চার জন্যও শিক্ষক বা শিক্ষিকা থাকবেন৷ তিনি জানান, শহরের ২০টি সুকল হবে স্পেশাল এ’পার্টাইস সুকল৷ দুই বা তিনটি সুকল মিলিয়ে থাকবে একটি কমন হোস্টেলের সুুবিধা৷ থাকবে মাদার অন ক্যাম্পাস এর সুুবিধা৷ তিনি জানান, ষষ্ঠ এবং ষষ্ঠ শ্রেণীর উপরের শ্রেণীতে ছাত্র বা ছাত্রী ভর্তি হতে গেলে িিনং টেস্ট দিতে হবে৷ সুকলগুলিতে পড়য়া ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যতে বিদেশি ভাষা নিয়ে পড়ার সংস্থান রাখা থাকবে৷ জনজাতিদের ভাষায় পড়ার বিকল্প ব্যবস্থা থাকবে৷ তিনি জানান, সুকলগুলিতে শিক্ষক নিয়োগ হবে সিবিএসই নিয়ম অনুসারে৷ শিক্ষক এবং কর্মী নিয়োগ করা হবে যথাযথ টি আর বি টি এবং জে আর বি টি-র মাধ্যমে৷


শিক্ষামন্ত্রী জানান, রাজ্যের মোট ১০০টি সরকারি বিদ্যালয়কে সিবিএসই-তে রূপান্তরিত করার জন্য অনুমোদন চাওয়া হয়েছে৷ এই ১০০টি সুকলের মধ্যে পশ্চিম জেলার মধ্যে রয়েছে ২৩টি, ঊনকোটিতে রয়েছে ১০টি, দক্ষিণ ত্রিপুরায় ১১টি, সিপাহীজলায় ১১টি, উত্তর ত্রিপুরায় ১২টি, খোয়াই জেলায় ১১টি, গোমতী জেলায় ১১টি এবং ধলাই জেলায় রয়েছে ১১টি৷ তিনি জানান, এই সুকলগুলি পরিচালনার জন্য যে ১৪০০টি পদ সৃষ্টি করা হয়েছে তার জন্য রাজ্য সরকারের বছরে অতিরিক্ত ব্যয় হবে ৩৪ কোটি ১০ লক্ষ ১০ হাজার টাকা৷
সাংবাদিক সম্মেলনে প্রসঙ্গক্রমে শিক্ষামন্ত্রী জানান, বর্তমান রাজ্য সরকারের সময়কালে ১৩৫টি বাংলা মিডিয়াম সুকলকে ইংরেজী মাধ্যমে রূপান্তর করা হয়েছে৷ আগে যা ছিল মাত্র ১২৭টি৷ তিনি আরও জানান, রাজ্যের বর্তমানে শিক্ষা ব্যবস্থা উন্নয়নের চিত্র পরিলক্ষিত হয় পিজিআই ইনডেে’র মাধ্যমে৷ পিজিআই ইনডে’ ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে ত্রিপুরা গ্রেড ফাইভে ছিল সেখানে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে গ্রেড ফাইভ থেকে উন্নীত হয়ে গ্রেড ওয়ানে চলে এসেছে৷ যা পূর্বোত্তর রাজ্যগুলির মধ্যে প্রথম স্থান৷ এটি শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নের প্রতিফলন৷ এছাড়াও এখন পর্যন্ত রাজ্যের শিক্ষার মান উন্নয়নে শিক্ষাক্ষেত্রে ৩০টি রিফর্মস আনা হয়েছে৷ এর মধ্যে বিদ্যাজ্যোতি প্রকল্প হচ্ছে অন্যতম৷ তিনি জানান, রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে ড্রপ আউটের হার ছিল ৪.১২ শতাংশ৷ বর্তমান সরকারের সময় ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে তা নেমে ২ শতাংশ হয়েছে৷ উচ্চ প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে ২০১৬-১৭ তে ড্রপ আউট ছিল ৫.২৫ শতাংশ এবং ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে নেমে হয়েছে ৩.৫২ শতাংশ৷ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে ২০১৬-১৭ তে ছিল ৯৫.৮৮ শতাংশ যা ২০১৯-২০ তে বেড়ে হয়েছে ৯৮ শতাংশ৷ উচ্চ প্রাথমিক শিক্ষায় ভর্ত্তির ক্ষেত্রে ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে ছিল ৯৫.৭৪ শতাংশ যা ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে বেড়ে হয়েছে ৯৮.৪৮ শতাংশ৷
সাংবাদিক সম্মেলনে এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা দপ্তরের অধিকর্তা চাঁদনী চন্দ্রন এবং যুগ্ম অধিকর্তা কেশব কর৷