অশোক সেনগুপ্ত
কলকাতা, ৯ ডিসেম্বর (হি. স.) : সাইকেল ব্যবহারকারীদের অধিকার রক্ষার্থে পুরভোটের আগে প্রধান ৯টি রাজনৈতিক দলের কাছে আবেদন করল আগামী ১৯ ডিসেম্বর কলকাতা মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। আমরা কলকাতা পুরসভা এলাকায় বসবাসকারী মানুষ। আমাদের নিত্য প্রয়োজনে কলকাতার রাস্তায় সাইকেল চালাতে হয়। গত করোনা মহামারীতে নতুন করে বহু মানুষ সংক্রমণ এড়াতে, যাতায়াতের উপায় হিসেবে সাইকেল বেছে নিয়েছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে নতুন করে সংক্রমণের সম্ভাবনা রয়েছে। এই অবস্থায় জনজীবনে সাইকেলের গুরুত্ব বাড়ছে।
২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা করেছিলেন যে সরকার কলকাতার রাস্তায় সাইকেলের জন্য উপযুক্ত পরিকাঠামো গড়ে তুলবেন। ইতিপূর্বে ২০১৯-এর ২৯ নভেম্বর একটা টেন্ডার ডেকে কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভলপমেন্ট অথরিটি উপযুক্ত পরিকল্পনার জন্য বিশেষজ্ঞ বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করে। নিযুক্ত সেই প্রতিষ্ঠানের তৈরি করা মাষ্টার প্ল্যান জমা পড়ে দফতরে। কলকাতার রাস্তায় দুর্ঘটনা সংখ্যা কমিয়ে মোটর গাড়ির অবাধ গতি বজায় রাখতে এই মাষ্টার প্ল্যানে নিরাপদে সাইকেল চালানোর জন্য পৃথক সাইকেল লেনের রোড ম্যাপ করা আছে।
আমরা সাইকেল ব্যবহারকারী নাগরিকরা আশা করছিলাম কলকাতা মেট্রোপলিটান অথরিটি কর্তৃক এই পরিকল্পনার দ্রুত বাস্তবায়ন ঘটবে কারণ সাইকেল লেনের জন্য খুব বেশি খরচ হয় না। সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের জন্য এই ব্যাপারটা আপাত স্থগিত হয়ে যায়। নির্বাচন ফল প্রকাশের পর আমরা আশা করছিলাম যে পুনঃনির্বাচিত সরকার এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশ জারি করবেন। কিন্তু দুঃখের সঙ্গে লক্ষ্য করলাম কলকাতার রাস্তায় সাইকেল লেনের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া তো হল না উল্টে কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে কলকাতা রাস্তায় নতুন করে সাইকেল নিষেধাজ্ঞা বলবৎ করার ঘোষণা হল।
কলকাতা পুলিশের এই ঘোষণা আমাদের খুবই আশাহত করেছে। কলকাতা শহরে সাইকেল ব্যবহারকারী মানুষের সংখ্যা কম নয়। এছাড়া হাওড়া, উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, হুগলী প্রভৃতি জেলা থেকে কয়েক লাখ মানুষ কাজকর্ম, রুজি রোজগারের জন্য সাইকেলে চেপে কলকাতা মহানগরে প্রবেশ করেন। বিপুল সংখ্যক অল্প আয়ের মানুষ ও তাদের পরিবারের ভরণপোষণ জীবন যাপন সাইকেল নির্ভর। আমরা আশা করব এই সমস্যা নিয়ে আপনার দল ও আপনাদের প্রার্থীরা চিন্তা ভাবনা করবেন ও সাইকেলজীবি নাগরিকের জন্য সচেষ্ট হবেন।“
যাঁরা (যে সব সংগঠন) আবেদনে সই করেছেন, তাঁরা হলেন অভিজিৎ পাল (টু হুইলস), অমলেন্দু সরকার (কলকাতা সাইকেল সমাজ), অমিত দাস (সাইক্লপস), দুঃখশ্যাম মন্ডল (কলকাতা সাইকেল আরোহী ও অধিকার রক্ষা কমিটি), গার্গী মৈত্র (সুইচঅন ফাউন্ডেশন), প্রতীক জৈন (সাইকেল নেটওয়ার্ক গ্রো), রাকেশ দাস (হাওড়া সাইকেল আরোহী), সমিত চক্রবর্তী (সাইকোস), সমরেশ দাস (এনটিএফএন), সতানজিব গুপ্ত (কলকাতার বাইসাইকেল মেয়র, বিওয়াইসিএস), শুভজ্যোতি সেন শর্মা (আর্গো সাইক্লিং টিম), সুরজ ভার্মা (পারসেক রেসিং পয়েন্ট কলাম), স্বরজিৎ রায় (হানড্রেড মাইলস)।