Vandalism : সায়নী গ্রেপ্তার, বাইক বাহিনীর থানায় হামলা-মারপিট, তৃণমূলের ক্যাম্প অফিসে ব্যাপক ভাঙচুর, আহত বহু

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২১ নভেম্বর৷৷ মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে কটুক্তি এবং পথচারীকে প্রাণে মারার চেষ্টার অভিযোগে যুব তৃণমূল কংগ্রেস সভানেত্রী সায়নী ঘোষকে আজ পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে৷ সকালে তাঁকে আটক করার খবর পেয়ে বিজেপি কর্মীরা পূর্ব আগরতলা মহিলা থানার বাইরে মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে কটুক্তির জন্য বিক্ষোভ দেখাতে গিয়ে পরিস্থিতি রণক্ষেত্র হয়ে উঠে৷ পুলিশের সামনেই থানায় তৃণমূল কর্মীদের মারধর করেছে দুসৃকতিকারীরা৷ এখানেই থেমে থাকেনি দুসৃকতিকারীদের তান্ডব৷ সন্ধ্যায় পুনরায় পূর্ব আগরতলা মহিলা থানা এবং তৃণমূলের রাজ্য আহ্বায়ক সুবল ভৌমিকের বাড়িতে ক্যাম্প অফিসে ভাঙচুর চালিয়েছে তারা৷ চিত্তরঞ্জন এলাকাতেও তৃণমূলের অফিস ভাঙচুর এবং কর্মীরা আক্রান্ত হয়েছেন৷ আগরতলা শহর আজ রাজনৈতিক উত্তেজনায় কার্যত থমথমে হয়ে রয়েছে৷
প্রসঙ্গত, পুর ও নগর সংস্থার নির্বাচনকে ঘিরে রাজ্যে প্রচার এখন তুঙ্গে রয়েছে৷ এমনই পরিস্থিতিতে আজ দিনভর রাজধানী আগরতলা রাজনৈতিক দুর্বৃত্তপনায় থমথমে হয়ে রয়েছে৷ স্বাভাবিক ভাবেই অভিযোগের আঙুল শাসক দল বিজেপির বিরুদ্ধেই উঠেছে৷ আজ সকালে পুলিশ যুব তৃণমূল কংগ্রেস সভানেত্রী সায়নী ঘোষকে নোটিশ পাঠিয়েছে৷ এই নোটিশ পেয়ে তিনি থানায় হাজিরা দিয়েছেন৷ তিনি থানায় যাওয়ার পর একে একে তৃণমূল কর্মীরাও নেতাদের সাথে সেখানে উপস্থিত হয়েছেন৷ তৃণমূল সাংসদ সুষ্মিতা দেব অভিযোগ করেছেন, মিথ্যা মামলায় সায়নী ঘোষকে হেনস্থা করা হচ্ছে৷ তিনি পাল্টা মামলা করেছেন৷


এদিকে, সায়নী ঘোষকে থানায় ডেকে নেওয়ার খবর পেয়ে বিজেপির পতাকা হাতে নিয়ে একদল কর্মী পূর্ব আগরতলা মহিলা থানা চত্বরে জরো হন৷ তাদের দেখে থানায় উপস্থিত তৃণমূল কর্মীরা অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে৷ এরপরই ক্রমশ পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে৷ অভিযোগে জানা গিয়েছে, তৃণমূল কর্মীরা বিজেপি কর্মীদের উদ্দেশ্য করে উস্কানিমূলক মন্তব্য করেছেন৷ তাতেই পরিস্থিতি রণক্ষেত্রের রূপ নিয়ে নেয়৷ উত্তেজিত বিজেপি কর্মীরা থানায় ঢুকে পুলিশের সামনেই দুইজন তৃণমূল কর্মীকে মারধর করেছেন৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ ও টিএসআর বাহিনী পুরো থানাকে ঘেরাও করে রাখেন৷ সায়নী ঘোষ সহ তৃণমূল নেতাদের থানার অভ্যন্তরে নিরাপদ আশ্রয়ে রাখে পুলিশ৷ খবর পেয়ে এডিশন্যাল এসপি ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন৷


এই ঘটনাকে ঘিরে তৃণমূল মুখপাত্র কুনাল ঘোষ রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আঙুল তুলেছেন৷ তাঁর দাবি, শাসক দল বিজেপি গণতন্ত্রের হত্যা করে নির্বাচনী বৈতরণী পাড় হতে চাইছে৷ তাই মিথ্যা মামলায় সায়নী ঘোষকে জড়িয়ে এখন তৃণমূল নেতা কর্মীদের প্রাণে মারতে উদ্যত হয়েছে৷ এদিকে, পুলিশী হস্তক্ষেপে থানা চত্বরে উপস্থিত বিজেপি কর্মীরা তখনকার মত চলে যায়৷ বিকেল চারটে নাগাদ দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সায়নী ঘোষকে গ্রেপ্তার করে৷


এদিকে, সন্ধ্যায় একদল বাইক বাহিনী চিত্তরঞ্জন এলাকায় তৃণমূলের অফিস ভাঙচুর এবং কর্মীদের মারধর করেছেন৷ সেখান থেকে ছুটে গিয়ে তারা পুনরায় পূর্ব আগরতলা মহিলা থানা আক্রমণ করে৷ পুলিশ অত্যন্ত ধৈর্য্যের সাথে পরিস্থিতি মোকাবেলার চেষ্টা করেছে৷ কিন্তু, ওই বাইক বাহিনী সেখান থেকে বেরিয়ে তৃণমূলের রাজ্য আহ্বায়ক সুবল ভৌমিকের বাড়িতে দলের ক্যাম্প অফিসে হামলা করে৷ সেখানে ওই বাইক বাহিনীর হামলায় বেশ কয়েকজন তৃণমূল কর্মী আহত হয়েছেন৷ খবর পেয়ে পুলিশ ছুটে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে৷
এদিকে, রাতেই সায়নী ঘোষকে পূর্ব আগরতলা মহিলা থানা থেকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছে পুলিশ৷ সদরের এসডিপিও উমেষ যাদব জানিয়েছেন সায়নী ঘোষকে আগামীকাল আদালতে সোপর্দ করা হবে৷ তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় দন্ডবিধির ১৫২, ১৫৩, ৩০৭ এবং ১২০ (বি) ধারায় মামলা রুজু হয়েছে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *