Five Trinamool activists were arrested : দিল্লীতে লড়াই চললেও আমবাসায় ফের পাঁচ তৃণমূলী গ্রেপ্তার, জেলে প্রেরণ

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১০ আগস্ট৷৷ দিল্লীতে লড়াই চললেও আমবাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের পাঁচ কর্মীকে৷ সম্প্রতি আমবাসায় তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীদের সঙ্গে শাসক দলের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে৷ সেই সময় পুলিশ চৌদ্দজন তৃণমূল কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছিল৷ ঘটনার পর দিল্লীতে সংসদের ভেতরে ও বাইরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছিল তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদরা৷ এই সংঘর্ষের ঘটনায় পার্বতী রাজ্য ত্রিপুরার আমবাসাকে তুলে ধরা হয়েছিল জাতীয় রাজধানী দিল্লীতে৷


রাজ্যে রাজনৈতিক সংঘর্ষের ঘটনায় গ্রেফতার পাঁচ তৃণমূল কর্মীকে সাতদিনের জেল হেফাজতে পাঠিয়েছে আদালত৷ তাতে ত্রিপুরায় গণতন্ত্র নেই বলে সুর চড়িয়েছেন তৃণমূল নেতা তথা পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী মলয় ঘটক৷ এদিকে, তৃণমূল কর্মীদের গ্রেফতারের ঘটনায় টুইটারে অতি সরব হয়েছেন দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ৷ তাঁর বক্তব্য, ত্রিপুরায় বিজেপি ভয় পেয়েছে, তা প্রমাণিত হয়েছে৷


প্রসঙ্গত, ত্রিপুরায় রাজনৈতিক সংঘর্ষের ঘটনায় পাঁচ তৃণমূল কর্মীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে৷ তাঁদের আজ মঙ্গলবার ধলাই জেলা আদালতে সোপর্দ করেছে আমবাসা পুলিশ৷ পুলিশ জানিয়েছে, তমাল বসু, পঙ্কজ দেবনাথ, উত্তম কলই, লিটন মালাকার এবং মিঠুন বিশ্বাসকে গতকাল মধ্যরাতে গ্রেফতার করা হয়েছে৷
এ ঘটনায় তীব্র বিষোদগার প্রকাশ করেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় মুখপাত্র কুণাল ঘোষ৷ তিনি এক টুইট বার্তায় বলেন, যারা হামলা করল তারা ঘুরে বেড়াচ্ছে৷ আক্রান্তদের পুলিশ গ্রেফতার করছে৷ আজও বাড়ি থেকে তৃণমূল কর্মীদের পুলিশ গ্রেফতার করেছে৷ তাতে প্রমাণিত, বিজেপি ভয় পেয়েছে৷


গত শনিবার আমবাসা বেতবাগান এলাকায় তৃণমূল ও বিজেপি কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে৷ ওই সংঘর্ষে তৃণমূল কর্মীরা আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে৷ তৃণমূল নেত্রী জয়া দত্ত বিজেপি কর্মীর বাইক ভাংচুরের এক ভিডিও ব্যাপক ভাইরাল হয়েছে৷ ওই ঘটনার পর থেকেই তৃণমূলের অন্তকর্োন্দল নিয়ে নানা প্রশ্ণ উঠেছে৷ এমন-কি কয়েকজন তৃণমূল কর্মীকে চিহ্ণিত করে সামাজিক মাধ্যমে তাঁদের ছবি প্রচারিত হয়েছে৷ তাঁরা তৃণমূল কর্মী হিসেবেই এলাকায় পরিচিত৷
গতকাল মধ্যরাতে আমবাসা থানার পুলিশ ওই সংঘর্ষের ঘটনার সাথে জড়িত অভিযোগে পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে৷ এতে টুইটে গলা ফাটালেন কুণাল ঘোষ৷ টুইটে তাঁর বার্তা, রাত থেকে খবর আসছে আমবাসা এলাকার তৃণমূল কর্মীদের বাড়ি থেকে তুলে থানায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে৷ কাউকে ডেকে পাঠানো হচ্ছে৷ বলা হচ্ছে গ্রেফতার করা হচ্ছে৷ কোর্টে তোলা হবে৷ সম্পূর্ণ মিথ্যা মামলা, মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে তাণ্ডব চলছে৷ তিনি প্রশ্ণ তুলেন, কেন্দ্রীয় মানবাধিকার কমিশন এখন কোথায়?


সাথে তিনি আরও যোগ করেন, পুলিশি সন্ত্রাস চলছে আমবাসায়৷ যারা মারল, এতে কর্মীরা জখম হল, পুলিশ তাদের ধরেছিল৷ রাত থেকে আরও অন্তত পাঁচ কর্মীকে তুলে নিয়ে গেছে৷ তিনি বলেন, বিজেপির আক্রমণে পুলিশকর্মীর চোখ জখম হয়েছে৷ অথচ তারা মুক্ত৷ এতে প্রমাণিত ভয় পেয়েছে বিজেপি৷
এদিকে, আজ ধলাই জেলা আদালতে পুলিশ তাঁদের সোপর্দ করেছে৷ এ-বিষয়ে পিপি রতন দত্ত বলেন, ধৃত পাঁচজনকে আদালত ১৬ আগস্ট পর্যন্ত জেল হেফাজতে পাঠিয়েছে৷ তাঁর দাবি, পাঁচদিনের পুলিশ রিমান্ডের আবেদন জানানো হয়েছিল আদালতে৷ কিন্তু বিবাদি পক্ষের আইনজীবী আজ পুলিশ রিমান্ডের ওপর শুনানিতে প্রস্তুত নন, তাই সময় চেয়েছেন৷ তিনি বলেন, আগামী ১৬ আগস্ট আদালতে পুলিশ রিমান্ডের আবেদনের ওপর শুনানি হবে৷ তাই ১৬ আগস্ট পর্যন্ত ধৃতদের জেল হেফাজতে পাঠানো হয়েছে৷ সাথে তিনি যোগ করেন, পুলিশ ধৃতদের বিরুদ্ধে ভারতীয় ফৌজদারি দণ্ডবিধির ১২০ বি, ৩০৭, ৩২৬, ৩৯২ এবং ৪২৭ ধারায় মামলা রুজু করেছে৷


এদিকে পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা মলয় ঘটক বলেন, ত্রিপুরায় দলীয় কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হচ্ছে৷ কারণ, পরিস্থিতি এতটাই খারাপ, বিরোধীরা ওই রাজ্যে কাজ করতে পারবেন না৷ তিনি ক্ষোভের সুরে বলেন, তৃণমূল কংগ্রেস সমর্থকদের বাড়িতে গিয়ে হুমকি দেওয়া হচ্ছে৷ মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে জেলে ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে৷ কিন্তু তৃণমূলকে কোনওভাবেই দমানো যাবে না, সুর চড়িয়ে বলেন তিনি৷