নয়াদিল্লি, ৫ জুলাই (হি. স.): ভারতে হিন্দু-মুসলিম এক এবং গো-রক্ষার নামে হিংসাত্মক ঘটনা নিয়ে রবিবার রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ(আরএসএস)-এর সরসঙ্ঘচালক ডাঃ মোহন রাও ভাগবতের বক্তব্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করলেন এআইএমআইএম এর প্রধান তথা হায়দ্রাবাদের সাংসদ আসাদউদ্দিন ওয়াইসি। সোমবার সকালে মোহন ভাগবতের বয়ানের প্রতিক্রিয়ায় তিনি টুইট করে লেখেন, ঘৃণা হিন্দুত্বের দান। আর সেই অপরাধীদের হিন্দুত্ববাদী সরকার আশ্রয় দিচ্ছে।
সোমবার একের পর এক টুইট করে ওয়াইসি লেখেন, আরএসএস-এর মোহন ভাগবত বলেছেন লিঞ্চিং যারা করে তাঁরা হিন্দুত্ব বিরোধী। এই অপরাধী আর গরু-মোষের মধ্যে কোনও পার্থক্য নেই, কিন্তু খুনের জন্য জুনেইদ, আখলাখ, পেহলু, আলিমুদ্দিন-এর নামই যথেষ্ট। ওয়াইসি লেখেন, ঘৃণা হিন্দুত্বের দান, সেই অপরাধীদের হিন্দুত্ববাদী সরকার আশ্রয় দেয়। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আলিমুদ্দিনের খুনিদের গোলাপ ফুল দেন, আখলাখের খুনির মরদেহতে তেরঙ্গা দেওয়া হয়।
আসাদউদ্দিন ওয়াইসি আরও লেখেন, আসিফের আসিফাদের খুনিদের সমর্থনে মহাপঞ্চায়েত ডাকা হয়, যেখানে বিজেপির মুখপাত্র সেখানে জিজ্ঞাসা করেন, ‘আমরা কি খুন করতে পারব না?” ঘৃণা, হিংসা আর খুন করা গডসের হিন্দুত্ববাদী ধারণার অটুট অংশ, মুসলিমদের লিঞ্চিং সেই ধারণারই অংশ।
প্রসঙ্গত, রবিবার গাজিয়াবাদে মুসলিম রাষ্ট্র মঞ্চের ব্যানারে আয়োজিত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নরসিমহ রাওয়ের উপদেষ্টা ডঃ খাজা ইফতিখার আহমেদের বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ছিলেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস)-এর সরসঙ্ঘচালক ডাঃ মোহন রাও ভাগবত । ওই কর্মসূচিতে তিনি বলেন, আরএসএস সংখ্যালঘু-বিরোধী বা ভারতে মুসলিমরা বিপদের মধ্যে আছেন বলে যে ভয় দেখানো হচ্ছে, তার বিরুদ্ধে সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। সংঘ প্রধান বলেন, যখন লোকজন হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে কথা বলেন, তখন আমরা বলি যে, প্রমাণিত হয়েছে যে আমরা গত ৪০ হাজার বছর ধরে একই পূর্বপুরুষের বংশধর। ভারতের মানুষের ডিএনএ একই রকম। হিন্দু ও মুসলমান দু’টি দল নয়। তাই ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কিছু নেই, আমরা ইতিমধ্যে ঐক্যবদ্ধ।’
তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক দলগুলি মানুষকে একত্রিত বা বিবাদ বৃ্দ্ধির ক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারে না। তবে প্রভাবিত করতে পারে। ভারতে সংখ্যাগুরুদের আধিপত্য বাড়ছে বলে যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে, সেই ভয়ও কাটানোর চেষ্টা করেন ভাগবত। তিনি দাবি করেন, সংখ্যালঘুদের উপর যখন অত্যাচার হয়, তখন সংখ্যাগুরুদের তরফেই প্রতিবাদের আওয়াজ তোলা হয়।
সংখ্যালঘুদের উপর গো-রক্ষকদের বিরুদ্ধে যে হামলার অভিযোগ ওঠে, তা নিয়েও মুখ খুলেছেন সংঘ প্রধান। তিনি জানান, গরুকে ভারতে পুজো করা হয়। কিন্তু গো-রক্ষার নামে হিংসাত্মক পথে যাওয়ার ঘটনা কখনওই মেনে নেওয়া যায় না। তিনি বলেন, ‘আইন নিজস্ব পথে চলবে। পক্ষপাতহীনভাবে ওদের (পুলিশকে) তদন্ত করতে হবে এবং অভিযুক্তদের শাস্তি দিতে হবে। কিন্তু যে গণহত্যায় জড়িত থাকে, সে কখনও হিন্দু হতে পারে ।’

