লকআপের শৌচালয় থেকে পলাতক আসামিকে পুনরায় জালে তুলল পুলিশ

নিজস্ব প্রতিনিধি, চুড়াইবাড়ি, ৩০ জুন৷৷ মাদক আইনে ধৃত আসামি লকআপের বাথরুম থেকে পালিয়ে যাবার ৩২ ঘন্টার মাথায় পুনরায় জালে তুললেন খোদ জেলার পুলিশ সুপার৷ অকর্মণ্য ওসির দায়সারা মনোভাবের ফলস্বরূপ এক নিরীহ পুলিশকর্মী বরখাস্ত সহ স্বয়ং পুলিশ সুপার মাঠে নেমে পালিয়ে যাওয়া আসামিকে চুরাইবাড়ি থানাধীন হালাম বস্তি এলাকা থেকে গ্রেফতার করেন৷আগামীকাল ফারুক সহ তার সাঙ্গোপাঙ্গকে পুনরায় আদালতে প্রেরণ করবে কদমতলা থানার পুলিশ৷


ঘটনার বিবরণে প্রকাশ,গত ২৭ জুন রবিবার উত্তরের গোয়েন্দা পুলিশ ও কদমতলা থানার পুলিশ যৌথ ভাবে বাংলাদেশে পাচারের পথে বরগোল এলাকা থেকে ২২ প্যাকেটে মোট ৪ হাজার ৪ শো নেশাজাতীয় ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করে৷যার বাজার মূল্য প্রায় বাইশ লক্ষ টাকা৷সাথে আটক করা হয় আন্তরাষ্ট্রীয় দুই মাদক কারবারি ফারুক আহমেদ(১৮) এবং বিশাল শব্দকর(১৯)কে৷এ মর্মে কদমতলা থানার পুলিশ ৩৭ নম্বরের এনডিপিএস ধারায় একটি মামলা রুজু করে ও দুই মাদক কারবারীকে পুলিশ রিমান্ড চেয়ে জেলা আদালতে প্রেরণ করে৷মাননীয় বিচারপতি তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন৷


রিমান্ডে থাকা আন্তরাষ্ট্রীয় মাদক কারবারীদের জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে নজমুল হক(৩০) নামের অপর এক মাদক কারবারীকে জালে তুলে পুলিশ৷ কিন্তু গতকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার সকাল ৭ টা ১১ মিনিটের সময় মাদক আইনে ধৃত ফারুক আহমেদ রিমান্ডে থাকাকালীন অবস্থায় প্রাকৃতিক কাজ করার নাম করে বাথরুমের ভেন্টিলেটর দিয়ে পালিয়ে যায়৷পালিয়ে যাবার পর তাকে খোঁজে বের করতে কদমতলা থানার ওসি গোটা উত্তর জেল জুড়ে লোকদেখানোর নামে দিনভর তল্লাশি চালালে নিট ফল হয় শূন্য৷লক আপ থেকে মাদক আইনের মতো অভিযুক্তে অভিযুক্ত ধৃত আসামি পালিয়ে যেতেই গোটা রাজ্য জুড়ে কদমতলা থানার ভূমিকা নিয়ে সমালোচনানার ঝড় উঠে৷পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে খোদ উত্তর জেলার পুলিশ সুপার ভানুপদ চক্রবর্তী মাঠে নামেন৷ তৎক্ষণাৎ বরখাস্ত করা হয় কর্তব্যরত পুলিশ কর্মী ত্রিকোণা সিনহাকে৷


নিরীহ পুলিশ কর্মী বরখাস্ত হতেই গুনধর ওসি কৃষ্ণধন সরকারের বরখাস্তের দাবি উঠে নানা মহল থেকে৷কেউ কেউ অভিযোগ করে বলেন, কদমতলা থানার দ্বায়িত্বে কৃষ্ণধন সরকার প্রায় দুই বছর যাবৎ রয়েছেন৷তাহলে থানার লক আপের বাথরুমের ভেন্টিলেটর দিয়ে মানুষ গায়ের হবার মতো যে রাস্তা রয়েছে সেটি ওসি বাবু কিভাবে এড়িয়ে গেলেন৷তাছাড়া কৃষ্ণধন সরকারের নামে পূর্বেও টাকা গিলে থানা থেকে আসামি ছেড়ে দেবার মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে৷ সুতরাং মাদক আইনে ধৃতকে বাঁকা পথে পালাবার সুযোগ করে দেননিতো ওসি বাবু?প্রশ্ণের ঝড় বইতে থাকে৷
কেউ কেউ আবার বলতে শুরু করেন এটা চোর পুলিশ খেলা৷কদমতলা থানার পুলিশ বাবুরা হেলমেট বিহীন বাইক চালক ও মাস্ক বিহীন মানুষের পেছনে ফাইনের টাকা গুনতে ব্যস্ত,আসামির খবর কেবা রাখবে৷সানীয় জনগন এই ঘটনার সুষ্ট তদন্তের দাবি ও ওসি কৃষ্ণধন সরকারের বরখাস্তের দাবি তুলেন৷ অবশেষে বহু জল্পনা-কল্পনার পর ৩২ ঘন্টার মাথায় উত্তর জেলার পুলিশ সুপার ভানু চক্রবর্তী গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চুরাইবাড়ি থানাধীন হালাম বস্তি এলাকা থেকে পালিয়ে যাওয়া আসামি ফারুক আহমেদকে গ্রেফতার করেন৷ তবে পুলিশ সুপারের মতো একজন জেলা আধিকারিক পালিয়ে যাওয়া আসামিকে গ্রেপ্তার করার ফলে কদমতলা থানার ওসি বাবু যে ’অকর্মার ঢেঁকি’ তা একপ্রকার পরিষ্কার৷ তবে পুলিশ সুপারের এহেন ভূমিকায় গোটা উত্তর জেলা বাসীদের মনে রিয়েল হিরোর জায়গা করে নিয়েছেন৷ জানা গেছে আগামীকাল পালিয়ে যাওয়া আসামি ফারুক আহমেদ সহ তার সাঙ্গোপাঙ্গকে পুনরায় আদালতে প্রেরণ করা হবে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *