নিজস্ব প্রতিনিধি, চড়িলাম, ২০ জুন৷৷ থানায় মামলা তিন দিন পরেও গ্রেফতার করা হয়নি অভিযুক্তদের৷ খোঁজখবর নেয়নি মহিলা কমিশন কিংবা কোনো মহিলা সংগঠনও৷ নিরুপায় হয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছে নির্যাতিতা নাবালিকা গৃহবধূ৷
ঘটনার বিবরণে জানা যায় বৃহস্পতিবার বিশালগড় থানাধীন ২ নং চন্দ্রনগর এলাকার জনৈক নাসির উদ্দিন কর্তৃক ব্লেইট দ্বারা আঘাত প্রাপ্ত তার স্ত্রী থানায় মামলা করার তিন দিন পরেও অভিযুক্তদের কোন প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি মহিলা থানার পুলিশ৷ বরং এলাকায় বুক ফুলিয়ে ঘোরাঘুরি করছে অভিযুক্ত স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়িসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন৷ সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে গৃহবধূর বাবা দুলাল ভূঁইয়া অভিযোগ করেন, ২০২০ সালে লকডাউন চলাকালীন সময়ে বিশালগড় নদীলাগ এলাকার জালু মিয়ার ছেলে নাসির উদ্দিনের সাথে সামাজিক রীতি নীতি মেনে বিবাহ দেওয়া হয় গোকুলনগর রাস্তার মাথা সুকান্ত কলোনী এলাকার দুলাল ভূঁইয়ার নাবালিকা কন্যা পপি আক্তার এর সাথে৷ বিয়ের এক দুমাসের পর থেকে দুই লক্ষ টাকা পণের জন্য স্বামী নাসির নির্যাতন শুরু করে পপির উপর৷ একাধিকবার এই বিষয় নিয়ে বাবার বাড়িতে ছিল পপি৷ এলাকার জন প্রতিনিধিদের নিয়ে সালিশি সভাও করা হয় কয়েকবার৷ গত ১৪ জুন উভয় পক্ষের অভিভাবকদের উপস্থিতিতে সালিশি সভায় মীমাংসার পর পপি বেগমকে তার স্বামীর বাড়িতে পাঠানো হয়৷ কিন্তু স্বামীর বাড়িতে যাওয়ার পরদিনই ফের নগদ ২ লক্ষ টাকা পনের জন্য নির্যাতন শুরু করা হয় পপির উপর৷ এবং পপি যখন জানায় এ টাকা তার বাবার বাড়ি থেকে সে আনতে পারবে না তখনই তাকে ব্লইট দিয়ে আঘাত শুরু করে তার স্বামী নাসির উদ্দিন৷
পুরো ঘটনা সম্পর্কে বলতে গিয়ে নির্যাতিতা পপি বেগম জানায় একাধিকবার সালিশী সভায় সব সমাধান এর পরে আবারো পনের জন্য শাশুড়ির কথায় তার উপর নির্যাতন শুরু করে তার স্বামী নাসির উদ্দিন৷ সমস্ত ঘটনা জানিয়ে বিশালগড় মহিলা থানায় মামলা দায়ের করার তিন দিন পরেও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি পুলিশ৷
অপরদিকে স্বামীর বাড়ির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে গৃহবধূ পপির চারিত্রিক দিক নিয়ে৷ এ বিষয়ে এলাকার একজন বয়স্ক মহিলা এবং গোকুলনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বারকে প্রশ্ণ করলে তারা জানান, জন্মলগ্ণ থেকে পপি এবং তার পরিবারকে তারা চেনেন৷ কখনো পপি কিংবা তার পরিবারের বিরুদ্ধে কোন অসামাজিক কর্মকান্ড কিংবা চরিত্রহীনতার ঘটনা তারা শুনেননি৷
উল্লেখ্য, পণের দাবিতে গত ১৭ ই জুন স্বামী নাসির উদ্দিনের ব্লেইট দিয়ে আঘাতে ক্ষতবিক্ষত হয়েছিল ১৭ বছরের নাবালিকা গৃহবধূ পপি বেগম৷ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিশালগড় মহিলা থানায় অভিযোগ দায়ের করার পরও গ্রেফতার করা হয়নি কোন অভিযুক্তকে৷ দেখার পুলিশ কি আদৌ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করে কি না? নাকি আর পাঁচটা ঘটনার মতোই ধামাচাপা পড়ে যায় আক্রান্ত পপির অভিযোগ৷

