কলকাতা, ২৮ মে (হি.স.) : ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’-এ ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ক্ষতিপূরণের ঘোষণা করল রাজ্য সরকার। কৃষক, মত্স্যজীবী, হস্তশিল্পীদের জন্য সেখানে ন্যূনতম ৩০০ থেকে সর্বোচ্চ ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করা হয়েছে।
শুক্রবার দুই ২৪ পরগনায় ক্ষয়ক্ষতি পরিদর্শনে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরেই নবান্নের তরফে রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা ও নাগরিক প্রতিরক্ষা তহবিল থেকে ক্ষতিপূরণের কথা ঘোষণা করা হয়। ক্ষতিপূরণের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, ফসল নষ্টের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ১ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ পাবেন কৃষকরা। সর্বোচ্চ আড়াই হাজার টাকা। আর ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে যাঁদের ঘরবাড়ি ধূলিসাত্ হয়ে গিয়েছে, তাঁদের পরিবার পিছু ২০ হাজার টাকা করে দেবে সরকার। ঘরবাড়ি আংশিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলে, পরিবার পিছু ৫ হাজার টাকা দেওয়া হবে।
ঘূর্ণিঝড়ে গবাদি পশু মারা গিয়ে থাকলে, প্রত্যেক গরু এবং মহিষ পিছু ৩০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে, যাতে ওই টাকায় ফের গবাদি পশু কেনা যায়। এছাড়া ভেড়া, ছাগল এবং শুয়োর মারা গিয়ে থাকলে নতুন কেনার জন্য ৩ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। ক্ষেতে চাষের কাজে বা মালপত্র বহনের কাজে ব্যবহৃত ষাঁড় দুর্যোগে মারা গিয়ে থাকলে এক একটির জন্য ২৫ হাজার টাকা দেওয়া হবে।
বাছুর মারা গিয়ে থাকলে ১৬ হাজার টাকা করে মিলবে।
আয়তনে যাই হোক না কেন, দুর্যোগে পানের বরজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকলে ৫ হাজার টাকা করে পাবেন কৃষকরা। আর মত্স্যচাষীরা নতুন করে হাঁড়ি কেনার জন্য ৩০০ টাকা করে পাবেন। মাছ ধরার জাল কিনতে ২ হাজার ৬০০ টাকা করেও পাবেন। ঝড়ের দাপটে নৌকো সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হলে প্রতি নৌকার জন্য ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। নৌকা আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হলে ৫ হাজার টাকা করে পাবেন তাঁরা। এছাড়া হস্তশিল্পীদের যন্ত্রপাতি কিনতে মাথা পিছু ৪ হাজার ১০০ টাকা করে দেবে রাজ্য সরকার। কাঁচামাল কিনতেও মাথা পিছু ৪ হাজার ১০০ টাকা করে পাবেন তাঁরা। গুদামঘর, দোকান বা জিনিসপত্র মজুত রাখার জায়গা ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হলে ‘ইউনিট’ প্রতি ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে।
‘ইয়াস’-এর ক্ষতিপূরণও বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে রাজ্য সরকার। তার জন্য ব্লকে ব্লকে ‘দুয়ারে ত্রাণ’ শিবির খোলা হবে। সেখান থেকে আবেদনপত্র সংগ্রহ করতে পারবেন ক্ষতিগ্রস্তরা। সব কিছু খতিয়ে দেখে আগামী ১ জুলাই থেকে ৭ জুলাইয়ের মধ্যে সকলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ক্ষতিপূরণের টাকা জমা করে দেবে রাজ্য সরকার। এর আগে, আমফানের সময় ত্রাণের টাকা নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। এ বার তাই ত্রাণের বিষয়টি সরকারই তদারকি করছে।
আগামী ৩ জুন থেকে খুলছে ‘দুয়ারে ত্রাণ’ শিবির। আবেদনপত্র সংগ্রহ করা যাবে ৩ থেকে ১৮ জুন পর্যন্ত। ১৯ থেকে ৩১ জুনের মধ্যে ক্ষয়ক্ষতি পর্যালোচনা করে দেখা হবে। তার পর ১ জুলাই থেকে ৭ জুলাইয়ের মধ্যে সকলের অ্যাকাউন্টে ক্ষতিপূরণ বাবদ টাকা জমা দেবে রাজ্য সরকার।