করোনা-র চিকিৎসা সামগ্রী ত্রিপুরায় পৌঁছাতে ত্রাতার ভূমিকায় ভারতীয় বায়ুসেনা ও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ

আগরতলা, ২৮ মে (হি.স.) : দেশের মূল ভূখণ্ড থেকে অনেকটাই দূরে ত্রিপুরার অবস্থান। তবে ভৌগলিকগত অবস্থান করোনা মোকাবিলায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে সক্ষম নয়। কারণ, করোনা-র চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় সামগ্রী ত্রিপুরায় আনার জন্য ভারতীয় বায়ুসেনা এবং ভারতীয় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ দিবারাত্র খাটছেন। তার প্রমাণ মিলেছে, গত ১০ দিনে ভারতীয় বায়ুসেনার বিমানে ২৭০টি অক্সিজেন সিলিন্ডার, ২১০টি অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর এবং ৪৪টি ভেন্টিলেটর রাজ্যে এসেছে।

শুধু তা-ই নয়, অন্যান্য চিকিৎসা সামগ্রীও ভারতীয় বায়ুসেনা বিমানে ত্রিপুরায় পৌঁছে দিয়েছে। সবচেয়ে অবাক করার বিষয় হল, গত ২২ মে ভারতীয় বায়ুসেনার বিমান রাত ৯-টা ২০ মিনিটে চিকিৎসা সামগ্রী নিয়ে আগরতলা এমবিবি বিমানবন্দরে অবতরণ করেছে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষও সেই সব চিকিৎসা সামগ্রী ত্রিপুরা সরকারের হাতে তুলে দিয়ে সহায়তা করেছেন। করোনাকালে তাঁদের এই অবদানকে সমগ্র ত্রিপুরাবাসী কুর্নিশ জানাচ্ছেন।

করোনা-র দ্বিতীয় ঢেউয়ে সবচেয়ে মূল্যবান চিকিৎসা সামগ্রী হিসেবে প্রয়োজন পড়ছে অক্সিজেনের। ইতিমধ্যে ত্রিপুরায় অক্সিজেন প্ল্যান্ট বসানোর কাজ জোর কদমে চলছে। এছাড়াও বেসরকারিভাবে বোধজং নগরে অক্সিজেনের সিলিন্ডার তৈরির কাজ যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চলছে। ফলে, এখনও ত্রিপুরায় অক্সিজেন-ঘাটতির পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। কিন্তু করোনা-র সংক্রমণের ক্রমাগত ঊর্ধ্বমুখি প্রবণতায় ভবিষ্যতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যেতে পারে বলেও আশংকা করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে চিকিৎসা সামগ্রীর ঘাটতি এড়ানোর উদ্দেশ্যে বহিঃরাজ্য থেকে বিভিন্ন সামগ্রী আমদানির ব্যবস্থা করেছে ত্রিপুরা সরকার। কেন্দ্রীয় সরকারও এ-ক্ষেত্রে দরাজ হস্তে ত্রিপুরার সহায়তা করে চলেছে।

আকাশপথে সামগ্রী আমদানি বরাবরই সময় বাঁচায় এবং বিরাট উপকারি হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে অতীতেও। ফলে, ভারতীয় বায়ুসেনা এক্ষেত্রে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। করোনা-র দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হওয়ার পর থেকে আকাশপথে বিভিন্ন সামগ্রী ত্রিপুরায় এসেছে। টিকা থেকে শুরু করে ভেন্টিলেটর অনায়াসে চলে আসছে ত্রিপুরায়। গত ১৭ মে থেকে ভারতীয় বায়ু সেনার বিমানে অক্সিজেন সিলিন্ডার, অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর, ভেন্টিলেটর, পিপিই কিট, টেস্ট কিট ইত্যাদি সামগ্রী ত্রিপুরায় আসছে।

বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের রিপোর্ট অনুযায়ী, গত ১০ দিনে ২৭০টি অক্সিজেন সিলিন্ডার, ২১০টি অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর এবং ৪৪টি ভেন্টিলেটর ছাড়াও ৯২০টি টেস্ট কিট ও পিপিই কিট বায়ুসেনার বিমানে ত্রিপুরায় এসেছে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের দাবি, করোনা মোকাবিলায় ত্রিপুরার জন্য ভবিষ্যতেও সমস্ত রকম সহায়তা করা হবে। অধিক রাতে হলেও পরিষেবা প্রদানে কোনও ত্রুটি রাখা হবে না। আজও ভারতীয় বায়ুসেনার বিমানে চিকিৎসা সামগ্রী এসেছে।