দিনভর ব্যস্ততার পর কলাইকুন্ডায় প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানালেন মুখ্যমন্ত্রী, সঙ্গে রাজ্যপাল

কলকাতা, ২৮ মে (হি. স.) : বৃহস্পতিবারই নবান্ন থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল অন্য কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব থাকলে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে হাজির থাকবেন না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এনিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন ওঠে।

শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী দক্ষিণ ২৪ পরগণার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের পর সোজা কলাইকুন্ডায় প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানালেন। জানান, ঘূর্ণিঝড়ে রাজ্যের ক্ষয়ক্ষতির হিসেব দিতে তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাদা ভাবে দেখা করবেন।প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে যোগ দিতে পৌঁছোন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। জেলাশাসক রশ্মি কোমল এবং পুলিশ সুপার দীনেশ কুমারও।

এর আগে, এদিন বেলা ১১টার কিছু পড়ে বিধ্বস্ত হিঙ্গলগঞ্জের উদ্দেশে কপ্টারে রওনা হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে মুখ্যসচিব-সহ অন্যান্য প্রশাসনিক কর্তারা। মিনিট কুড়ি বাদে পৌঁছে মুখ্যমন্ত্রী হিঙ্গলগঞ্জ কলেজে শুরু করেন জেলার প্রশাসনিক বৈঠক। বলেন, ছোটখাটো বিষয় নিয়ে ইস্যু করবেন না। দুর্গতদের ত্রিপল দিতে যেন কার্পণ্য না হয়। সবাইকে মাস্ক, ওয়াটার পাউচ দেওয়া হচ্ছে। বৈঠকে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী। ত্রাণশিবিরে যাঁরা আছেন, তাঁদের সমস্যা যেন না হয়। প্রশাসনিক কর্তাদের সতর্ক করেন মমতা।

ত্রাণবণ্টনের ক্ষেত্রে সরকারের নিজস্ব প্রকল্প ‘দুয়ারে ত্রাণ’-এর পরিকল্পনা ফের জানান মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, ৫৫টি বাঁধ ভেঙেছে বসিরহাট, হিঙ্গলগঞ্জ এলাকায়। বেশ কয়েকটি রাস্তাও বেহাল। এসবের দ্রুত মেরামত প্রয়োজন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত কেউ এলাকা ছেড়ে ফিরে যাবেন না, জনপ্রতিনিধিদের নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সঙ্গে বলেন, খাবার ও ত্রাণ নিয়ে কোনও বঞ্চনা চাই না। যাঁদের যা প্রয়োজন, তা দিতেই হবে। সকলে সেদিকে খেয়াল রাখবেন। কোনও অভিযোগ যেন  শুনতে না হয়।  প্রয়োজনীয় চিকিৎসা, ওষুধ দিতে হবে। বিশেষ নজর দিতে হবে গর্ভবতী ও প্রসূতিদের দিকে।

সংক্ষিপ্ত বৈঠক সেরে ১১টা ৫৩ নাগাদ হিঙ্গলগঞ্জ ছাড়েন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার যান দক্ষিণ ২৪  পরগনার নামখানা, সাগরে। মিনিট ৪৫ বাদে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাগরে পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী। কপ্টার থেকে নেমে হাত নেড়ে গ্রামবাসীদের আশ্বস্ত করেন। ঘূর্ণিঝড়ে বিধ্বস্ত এলাকার পরিস্থিতির বিস্তারিত রিপোর্ট নিয়ে জেলা প্রশাসনিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। কোন ক্ষেত্রে কতটা ক্ষতি, শুনলেন জেলাশাসকের থেকে। দরিদ্ররা যেন ঠিকমতো ত্রাণ পায়, দেখতে হবে। কেউ যেন বঞ্চিত না হয়, ফের সতর্ক করলেন মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠকে রয়েছেন সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা। বলেন, কাঁচা মাটি দিয়ে বাঁধ তৈরি করলে তা ভেঙে যাচ্ছে, টাকাও জলে চলে যাচ্ছে। ঘাসের মতো  শক্ত কিছু দিয়ে বাঁধ করলে তা শক্ত হবে। সেটা করা যায় কি না, দেখুন। জেলা প্রশাসনের কর্তাদের পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী। এ ব্যাপারে জেলাশাসক পিবি সেলিমের অভিজ্ঞতায় ভরসা রাখলেন তিনি।