BRAKING NEWS

ভোট পরবৰ্তী হিংসায় উত্তপ্ত শালতোড়ার গ্ৰাম

বাঁকুড়া,  ১৭ মে ( হি. স.) : ভোট-পরবর্তী হিংসায় উত্তাল হয়ে উঠল বাঁকুড়ার শালতোড়া বিধানসভার তেঁতুলারাখ গ্রাম। রবিবার রাতে তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে উভয়পক্ষের বেশ কয়েকজন জখম হয়েছেন। গুরুতর জখম হয়েছেন তৃণমূলের শালতোড়া ব্লক সহ-সভাপতি প্রকাশ মণ্ডল। সংঘর্ষে তার একটি হাত ভেঙেছে। মাথায় গুরুতর চোট নিয়ে তিনি বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। উভয় পক্ষের জখমদের শালতোড়া ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
সদ্য সমাপ্ত বিধানসভা নিৰ্বাচনে এই গ্ৰামের বুথে বিজেপি বিপুল ভোট পাওয়ায় তৃনমূল ক্ষোভে ফুসছিল।এদিন তার বহিঃপ্রকাশ ঘটে বলে বিজেপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে।অপরদিকে এই ঘটনায়  জখম প্রকাশের দাদা বিকাশ মণ্ডল শালতোড়া থানায় বিজেপির ১০ জন কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। এই ঘটনায় রাতেই অভিযুক্ত ৪ জনকে পুলিশ আটক করে থানায় নিয়ে আসে। বাকিরা পলাতক। এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত করা হয়েছে নির্বাচনের মুখে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া তৃণমূলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি কালিপদ রায়কে।
সোমবার অভিযোগকারী বিকাশ মণ্ডল বলেন, গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে দল বিরোধী কাজ ও দুর্নীতির অভিযোগে কালিপদ রায়কে ব্লক সভাপতির পদ থেকে সরানো হলে তখন থেকেই তিনি দলে অন্তর্ঘাত শুরু করেন। নির্বাচনের মুখে তিনি দল ছাড়েন। সেই রাগে তিনি এদিন তার আশ্রিত গুণ্ডাবাহিনী দিয়ে আমার ভাইয়ের উপর আক্রমণ চালিয়েছে। ভাইকে প্রাণে মেরে ফেলার চক্রান্ত ছিল তার। কিন্তু ভাইয়ের চিৎকারে কিছু লোক চলে আসায় দুষ্কৃতীরা চম্পট দেয়। তিনি বলেন, ভাই রাত সাড়ে ৭ টা নাগাদ শ্রীপুরিয়া গ্রামের বাড়িতে ফিরছিল। সেই সময় পথে তার উপর আক্রমণ হয়। এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের শালতোড়া ব্লক সভাপতি সন্তোষ মন্ডল বলেন, লকডাউন শুরু হওয়ায় বহু মানুষের রুজিতে টান পড়েছে। সে কারণে প্রকাশ মন্ডল কয়েকজন কর্মীকে নিয়ে তেঁতুলারাখ গ্রামের আদিবাসী পাড়ায় গিয়েছিলেন সাহায্য প্রার্থীদের তালিকা তৈরি করতে। সেই আক্রোশে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা  হামলা চালায়। অন্যদিকে শালতোড়ার বিজেপি বিধায়ক চন্দনা বাউরি বলেন, তৃণমূল মিথ্যা অভিযোগ করছে। ওরা এই কেন্দ্রে হেরে গিয়ে উন্মাদ হয়ে গেছে। আমার মত একজন রাজমিস্ত্রির জোগাড়েকে বিধায়ক বলে মেনে নিতে পারছেন না। তাই অজুহাত খুঁজে খুঁজে বিজেপি কর্মীদের উপর আক্রমণ করছে। ওখানে আমাদের কর্মীরাই মার খেলেন, জখম হলেন, আবার পুলিশের হাতে আটকও হলেন। সম্ভবত তাদের গ্রেফতার করা হবে।
চন্দনা বাউরি বলেন, আমাদের কর্মীরা থানায় অভিযোগ করতে যেতে পারছেন না। তৃণমূলের গুন্ডা বাহিনী থানায় যাবার সব রাস্তা আটকে রেখেছে। ওই গ্রামের বিজেপি কর্মী নিমাই মন্ডল বলেন, এই বুথে আমরা বিপুল ভোটে জিতেছি। সে কারণে ভোটারদের শিক্ষা দিতে রবিবার রাতে প্রায় শতাধিক বহিরাগত লোকজন এনে হামলার ছক কষেছিল তৃণমূল। করোনা পরিস্থিতিতে গ্ৰামে  বহিরাগতদের জমায়েত দেখে বাধা দিয়েছিলেন আমাদের কর্মীরা। তখন আমাদের কর্মীদের উপরে  আক্রমণ চালায় তৃণমূলের দুস্কৃতিরা। তপন কর্মকারেরর বাড়িতে চড়াও হয়ে তাকে মারধর করে। মহিলাদের হেনস্থা করা হয়। বাড়িতে ভাঙচুর করে পালিয়ে যায় তারা। শালতোড়া থানার পুলিশ গ্রামে টহলদারি শুরু করেছে। পরিবেশ থমথমে থাকলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। শালতোড়া থানার ওসি কৌশিক হাজরা এদিন জানান একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ঘটনার প্রকৃত  কারণ নিয়ে তদন্ত চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *