নারদ কাণ্ড— ফিরে দেখা

কলকাতা, ১৭ মে (হি. স.) : ২০১৪ সালের স্টিং অপারেশন নারদ কাণ্ড নিয়ে ফের সরগরম রাজ্য রাজনীতি। কিন্তু ঠিক কী ছিল স্টিং অপারেশনে?

 ২০১৪ সালে ম্যাথু স্যামুয়েল এবং তাঁর সহকর্মী অ্যাঞ্জেল আব্রাহাম প্রায় বাহান্ন ঘণ্টা ধরে আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত একটি স্টিং অপারেশন করেন। যা ২০১৬ সালে বাংলার বিধানসভা নির্বাচনের আগে প্রকাশ্যে আসে। গোপন ক্যামেরায় রেকর্ড করা ওই ভিডিওতে একাধিক নেতা-মন্ত্রীকে আর্থিক লেনদেন করতে দেখা গিয়েছিল।

স্টিং অপারেশনে ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, মদন মিত্র, মুকুল রায়, শুভেন্দু অধিকারী, কাকলি ঘোষ দস্তিদার, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, সুলতান আহমেদ, অপরূপা পোদ্দার, শঙ্কুদেব পণ্ডা, আইপিএস অফিসার এস এম এইচ মির্জাকে টাকা নিতে দেখা যায়। বিপুল পরিমাণ ওই অর্থের বিনিময়ে কাজ করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিতেও শোনা যায়। আর এই স্টিং অপারেশন সামনে আসার পরই রীতিমতো তোলপাড় হয় সর্বত্র। যদিও তৃণমূলের তরফে ভিডিওর সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। তবে বিরোধীরা তা মানতে নারাজ। বারবারই এই ইস্যুতে শাসকদল তৃণমূলকে খোঁচা দিতে থাকে বিরোধীরা।

এই পরিস্থিতিতে যদিও স্টিং অপারেশনে ব্যবহৃত টাকার উৎস নিয়ে কিছুটা হলেও বিপাকে পড়েন ম্যাথু। কলকাতা হাই কোর্টের তরফে বারবার এ বিষয়টি জানতে চাওয়া হয় তাঁর কাছে। তিনি দাবি করেন স্টিং অপারেশনে ব্যবহার হওয়া ৮৫ লক্ষ টাকা সাংসদ কে ডি সিংয়ের সংস্থার কাছ থেকে পেয়েছেন।

ম্যাথুকে যাচাই করতে কে ডি সিংয়ের সংস্থাকে নোটিস পাঠানো হয়। তবে ম্যাথুর দাবি খারিজ করে দেয় কে ডি সিংয়ের সংস্থা। তারপর থেকে নোটিস পাঠানো হলেও একাধিকবার হাজিরা এড়ান ম্যাথু।এরই মাঝে ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের আগে নারদ কাণ্ড অন্য মোড় নেয়।

তৃণমূলের তরফে দাবি করা হয় যাঁরা ঘাসফুল শিবির ছেড়ে বিজেপিতে নাম লিখিয়েছেন যেমন শুভেন্দু অধিকারী , মুকুল রায় তাঁদের স্টিং অপারেশনের ফুটেজ থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। যদিও তা মানতে নারাজ পদ্ম শিবির। এই আকচাআকচির মাঝেই সোমবার সকালে নয়া মোড়। গ্রেফতার ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, মদন মিত্র এবং শোভন চট্টোপাধ্যায়। নারদ মামলায় প্রথমবার চার্জশিট পেশ করতে চলেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই।

প্রসঙ্গত, সোমবার সাতসকালেই চেতলার বাড়ি থেকে গ্রেফতার হন ফিরহাদ হাকিম। সুব্রত মুখোপাধ্যায়, মদন মিত্র এবং শোভন চট্টোপাধ্যায়কেও গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে অপর দুই অভিযুক্ত শুভেন্দু অধিকারী এবং মুকুল রায়কে কেন গ্রেফতার করা হল না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *