কলকাতা, ১৫ মে (হি. স.) : চারিদিকে যেভাবে সব জিনিসের দাম বাড়ছে তাতে মোটেই স্বস্তিতে নেই আমজনতা। আগেই আকাশ ছুঁয়ে ছিল সরষের তেলের দাম, সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে পামতেল, সয়াবিন তেল, রাইস অয়েল, অলিভ অয়েল, তিলের তেলের দাম লাগাম ছাড়া ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে ৷
পেট্রোল এবং ডিজেলের পাশাপাশি ভোজ্যতেলেরও বিপুল দাম বৃদ্ধিতে রীতিমতো হাঁসফাঁস অবস্থা মানুষের। তেল কিনতে গিয়ে তার ঝাঁঝেই ঢোক গিলছে সকলে। একটি রিপোর্ট বলছে। এক বছরে ভোজ্যতেলের দাম ৩০ থেকে ৬০ শতাংশ বেড়েছে। পাম তেলের দাম রেকর্ড ছুঁয়েছে। সয়াবিন ও সয়া তেলের দামও আকাশ ছোঁয়া।
কী করছে রাজ্য সরকারের টাস্ক ফোর্স? এর সদস্য রবীন্দ্রনাথ পাল ‘হিন্দুস্থান সমাচার’-কে বলেন, “এর জন্য আমাদের কোনও দোষ নেই। করোনা সময়কালে বিশ্বজুড়ে ভোজ্যতেলের সরবরাহ ব্যাপক হ্রাস পেয়েছে। এছাড়াও ক্রুড পাম তেলের চাহিদা দিনে দিনে বেড়েছে। পাম তেল বেশি আসত মালয়েশিয়া থেকে। কাশ্মীরে সংবিধানের ৩৭০ ধারা লোপের পর থেকে ওদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের অবণতি হয়েছে। ওদেশ থেকে আমদানি প্রায় বন্ধ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল, মেক্সিকো থেকে সয়াবিন আসে। করোনায় এই চাষ মার খেয়েছে। চিনে সয়াবিনের চাহিদাও ক্রমাগত বাড়ছে। ব্রাজিল, আর্জেন্টিনাতে পামের চাষ এবার একেবারেই ভালো হয়নি, ফলে পাম তেলের দামে এর প্রভাব রয়েছে।“
অন্যদিকে বিয়ের মরসুমে ভোজ্য তেলের চাহিদা আরও বাড়বে ফলে দাম বাড়ার আশঙ্কাও রয়েছে। এছাড়া চলতি বছরে সরষের চাষও মার খেয়েছে। ফলে নতুন সরষে ক্ষেত থেকে ওঠার পরে যে তেলের দাম কমবে, এমন সম্ভাবনাও খুব বেশি নেই। ফলে এসবের জাঁতাকলের মাঝে পড়ে দাম বাড়তে পারে সরষের তেলের দাম।
মূলত আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের মূল্যবৃদ্ধির জেরেই এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে অনেকে মনে করছেন। দেশীয় বাজারেও চালান হচ্ছে কম। ফলে বাড়ছে চাহিদা ও দাম। এপ্রিল মে’ র আগে এই দাম কমার সম্ভাবনা তেমন নেই। এক্ষেত্রে আপনাকে আরও ২ মাস ভোজ্যতেলের জন্য বেশি টাকা গুনতে হবে।
উল্লেখ্য, মাস চারেক আগে ফুড সেফটি অ্যান্ড্র স্ট্যান্ডার্ডস অথরিটি অফ ইন্ডিয়া নতুন নির্দেশিকায় একেবারে খাঁটি ১০০ শতাংশ বিশুদ্ধ সরষের তেল বিক্রির কথা জানিয়েছিল। আগের নিয়মে ২০ শতাংশ পর্যন্ত অন্য কোন ভোজ্য তেল সরষের তেলের সঙ্গে মিশিয়ে বিক্রি করা যেত। এখন সেটা নিষিদ্ধ। এরপরেই দাম বাড়ে সরষের তেলের।