করোনায় রুখতে লকডাউন ঘোষণা পশ্চিমবঙ্গে

15/05/2021
কলকাতা, ১৫ মে (হি. স.) : প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচতে শেষ পর্যন্ত লকডাউনের পথে হাঁটল রাজ্য সরকার রবিবার থেকে ১৫ দিনের জন্য লকডাউন জারি করা হয়েছে। লকডাউনে সরকারি অফিস ও বেসরকারি অফিসের পাশাপাশি স্কুল-কলেজ সহ যাবতীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। পাশাপাশি বন্ধ থাকছে গণ পরিবহণ পরিষেবাও। শনিবার দুপুরে নবান্নে জরুরি সাংবাদিক বৈঠকে এ কথা জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়।  সরকারি ভাষ্যে লকডাউনের কথা না বললেও নির্দেশিকা সেই কাঠামোতেই করা হয়েছে।

দৈনিক সংক্রমণ ২১ হাজারের গণ্ডি ছুঁয়েছে। লকডাউন ছাড়া মারণ ভাইরাসের বেনজির তাণ্ডব রোখা যাবে না বলে ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানিয়ে দিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। আর সেই পরামর্শ মেনে শনিবারই রাজ্যে লকডাউনের ঘোষণা করল প্রশাসন?

সদ্য সমাপ্ত বিধানসভা ভোটের মধ্যেই রাজ্যে আছড়ে পড়েছিল করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গেই সংক্রমণ বেলাগাম হয়ে উঠেছে। দৈনিক সংক্রমণ ও মৃত্যু রেকর্ড ভেঙে রেকর্ড গড়ে চলেছে। প্রাণঘাতী ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে প্রথমে আংশিক লকডাউন জারি করা হয়েছিল। কিন্তু তাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় গত বৃহস্পতিবার অর্থা‍ৎ ৬ মে থেকে লোকাল ট্রেন সম্পূর্ণ বন্ধ রাখার নির্দেশ জারি করেছিল রাজ্য প্রশাসন। এমনকী মেট্রো ও সরকারি পরিবহণ পরিষেবাও ৫০ শতাংশ কমানো হয়েছিল। বাজার খোলার সময়সীমাও নতুন করে নির্ধারণ করেছিল।

কিন্তু খুব একটা সুফল মিলছে না। ফলে অন্তত সপ্তাহ দুয়েকের জন্য পূর্ণাঙ্গ লকডাউন জারির জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সুপারিশ করেছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। কেননা, রাজধানী দিল্লি, মহারাষ্ট্র সহ যে সব রাজ্যে পূর্ণাঙ্গ লকডাউন জারি হয়েছে, সেখানে করোনার সংক্রমণকে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে।

নবান্ন সূত্রে খবর, রাজ্যে কীভাবে পূর্ণাঙ্গ লকডাউন ঘোষণা করা হবে তা নিয়ে শনিবার সকালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে একপ্রস্থ আলোচনা করেন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি করোনা মোকাবিলায় গঠিত টাস্কফোর্সের সদস্যদের সঙ্গেও কথা বলেন। টানা লকডাউন ঘোষণা না করে সপ্তাহান্তে অর্থা‍ৎ প্রতি শনি ও রবিবার লকডাউন ঘোষণার বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হয়। করোনাভাইরাসের প্রথম ঢেউয়ের শেষের দিকে যেভাবে সপ্তাহের বিশেষ দিনগুলিতে রোটেশনভিত্তিক লকডাউন জারি করা হয়েছিল, সেই পথে হাঁটার বিষয়েও চিন্তাভাবনা করে। এরপর চূড়ান্ত ঘোষণা করে সরকার।