BRAKING NEWS

ঈদ-উল-ফিতর : করোনা বিধি মেনে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় মসজিদে নামাজ আদায়

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৪ মে৷৷ করোনা বিধি মেনেই রাজ্যেও মুসলিম ধর্মাবলম্বিদের ঈদ উৎসব পালিত হলো৷ রাজধানীতে অনুষ্ঠানটির হয় আগরতলা টাউন জামে মসজিদ৷টানা দু’’বছর ধরে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ জনিত কারণে ঈদ উৎসবে ভাটার টান৷ সরকারি যাবতীয় বিধিনিষেধ মেনে এবছরও সংক্ষিপ্ত আকারে মসজিদ গুলিতে ঈদের নামাজ আদায় করা হয়৷ রাজধানী আগরতলা শহরের প্রাণকেন্দ্র টাউন জামে মসজিদে বিশিষ্ট জনেরা ঈদের নামাজ পার্টির সামিল হন৷ এখানে ঈদের নামাজ আদায় করা হলেও যাবতীয় সামাজিক দূরত্ব এবং মাক্স পরিধান করে মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন৷ ঈদের নামাজ আদায়ের পর ইমাম জানান করুণা ভাইরাসের সংক্রমণ জনিত পরিস্থিতিতে যাবতীয় বিধি-নিষেধ মেনে ঈদের নামাজ আদায় করা হয়েছে৷ এবছর ঈদ উপলক্ষে আলিঙ্গনের কোন ব্যবস্থা রাখা হয়নি৷ শুভেচ্ছা বিনিময়ের মধ্য দিয়ে একে অপরের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন৷একমাস রোজা পালনের পর মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা বাড়িঘরে পরিবার পরিজনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উল্লাসে মেতে ওঠেন৷ এক্ষেত্রেও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার চেষ্টার কোন ত্রুটি হয়নি৷ কেননা করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করতে এছাড়া বিকল্প কোন পথ নেই৷


চড়িলাম সংযোজন ঃ হিজরী বর্ষপঞ্জি অনুসারে রমজান মাসের শেষে শাওয়াল মাসের এক তারিখে ঈদুল ফিতর উৎসব পালন করা হয়৷ শাওয়াল মাসের চাঁদ অর্থাৎ সূর্যাস্তের একফালি নতুন চাঁদ দেখা গেলে পরদিন হয় ঈদ৷ এই কথা থেকেই চাঁদ রাত কথাটির উদ্ভব৷ ঈদের সামাজিক অর্থ উৎসব, আর আভিধানিক অর্থ পুনর্গমন বা বারবার ফিরে আসা৷ তাই প্রতি বছরই মুসলমানদের জীবনে ফিরে আসে ঈদ৷ প্রথমটি উদযাপিত হয় দীর্ঘ একমাস রোজা থাকার পর৷ যাকে বলা হয় ঈদ-উল-ফিতর বা রোজার ঈদ৷ গোটা পৃথিবীতেই মুসলিম ধর্মালম্বীরা এই দিনটি খুবই আনন্দের সঙ্গে পালন করেন৷ সবাই এদিন সাধ্যমত ভালো পোশাক পরে৷ ঘরে ঘরে ভোজের আয়োজন হয়৷ যেখানে থাকি বাহারি রকমের খাবার যেমন পোলাও-কোর্মা, মাছ-মাংস মিষ্টি দই পায়েস সহ আরো কত কি৷ আত্মীয়-স্বজন পাড়া পড়শিরাও এই আনন্দের অংশীদার হন৷ দরিদ্ররাও এই দিনটিকে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করে৷ মুসলমানেরা এই দিন ঈদের দুই রাকাত নামাজ আদায় করেন৷ আত্মীয় স্বজনদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন৷ ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে সবাই কোলাকুলি, সহ সালাম ও শুভেচ্ছার হাত বাড়িয়ে আলিঙ্গনে ঈদকার্ড বিনিময় একটি জনপ্রিয় প্রথায় পরিণত হয়েছে৷ আর তথ্যপ্রযুক্তির যুগে এই সোশ্যাল মিডিয়াতে আনন্দ খুশি ও ঈদের আবেগ ভাগাভাগি করে থাকে৷ সমাজে ধনী ও সক্ষম ব্যক্তিরা নির্দিষ্ট হারে গরিবদের ফিতরা বা শর্তহীন অনুদান বিতরণ করে থাকে, যা ধর্মীয় দিক থেকে ধনীদের জন্য বাধ্যতামূলক৷ মুসলমানদের জীবনের ঈদের তাৎপর্য অনেকে৷ঈদ অর্থ খুশি এবং ফিতর এসেছে ফিতরা থেকে৷ সুতরাং ঈদুল ফিতরের অর্থ দাঁড়ায় দানখয়রাতের মাধ্যমে পবিত্র ঈদের উৎসবকে আনন্দে উদ্ভাসিত করে তোলা৷ জাকাত ফিতরার মাধ্যমে ধনী ও গরীবের মধ্যকার ভেদাভেদ দূরীভুত হয়৷ তারা একত্রে মিলেমিশে ঈদের আনন্দে গা ভাসিয়ে দেয়৷


কিন্তু এবার করোনার অতিমারির কারনে ঈদের পুরোপুরি আনন্দ ভোগ করতে পারেনি মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষ৷ সরকারি বিধি নিষেধকে মান্যতা দিয়ে ঈদের খুশিকে ত্যাগ করেছে৷ ঈদগাহ মাঠ ছিল ফাঁকা৷২৫জন মুসল্লীরা৷ কুশল আলিঙ্গন ছেড়ে দিয়ে কেবলমাত্র সালামের মাধ্যমে পরস্পর পরস্পরকে শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন৷ এদিন বিশালগড় কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দান, মুন্সিবাড়ি, নোয়াপাড়া, দুর্গানগর, নদীলাক,চন্দ্রনগর,রাউৎখলা,চড়িলাম,,আড়ালিয়া,ফকিরামুড়া,লক্ষ্মীবিল,ধবজনগর, এলাকার বিভিন্ন ঈদগাহ ময়দানে দুই রাকাত নামাজ আদায় করেন মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষ৷


তেলিয়ামুড়া সংযোজন ঃ করুণা অতি মারের কারণে এবার মুসলীম ধর্মাবলম্বী অংশের মানুষজনরা মহান ঈদ অনুষ্ঠান করেনি তেলিয়ামুড়া মসজিদে৷ শুক্রবার কাকভোর থেকে মুসলিম ধর্মাবলম্বী মানুষজনরা নিজেদের বাড়ি ঘরে ঈদ অনুষ্ঠান করে৷ শুক্রবার এমনিতেই ছিল তেলিয়ামুড়ার হাটবার৷ উপরন্ত ঈদের বাজার৷ এউপলক্ষে শুক্রবার তেলিয়ামুড়া প্রধান বাজারে ক্রেতা বিক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়৷ করুণা অতিমারি প্রতিরোধে রাজ্য প্রশাসন কিছু নিয়ম-নীতি জারি করেছিল৷ কিন্তু বাজারে আসা মানুষজনরা সরকারের বিধি-নিষেধ গুলিকে মান্যতা দিচ্ছেনা৷ অথচ তেলিয়ামুড়া মহকুমা প্রশাসন থেকে প্রতিনিয়তই মাইক যোগে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে মানুষজনকে সতর্ক করে সচেতন করে তোলার জন্য৷ কিন্তু পরিতাপের বিষয় হলো বাজারে আসা মানুষজনরা এখনো সচেতন হতে চাইছেনা৷ এদিকে এক মুসলিম ধর্মাবলম্বী ব্যক্তি জানান, করুণা অতি মারির কারণে এবং সরকারের নীতি নির্দিশিকাকে মান্যতা জানিয়ে রমজান মাসে ঈদ উৎসব ছোট পরিসরে নিজেদের বাড়িঘরে পালন করেন৷ কিন্তু বাজারে ক্রেতা বিক্রেতাদের মধ্যে যেমন সামাজিক দূরত্ব বজায় ছিল না তেমনি অনেক ক্রেতা মুখে মাক্স পরিধান না করে বাজারে আসে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *