গরীব অংশের মানুষের স্বার্থ সুরক্ষায় ত্রিপুরার মুখ্য সচিব-কে ৯ দফা দাবি পেশ বামপন্থী গণ সংগঠনের

আগরতলা, ১৪ মে (হি. স.) : কোভিড পরিস্থিতিতে রাজ্যের অর্থনৈতিক দিক দিয়ে পিছিয়ে পড়া গরীব অংশের মানুষের স্বার্থ সুরক্ষার জন্য ৯ দফা দাবিতে মুখ্য সচিবকে চিঠি দিল চারটি বাম গন সংগঠন। শুক্রবার চার বামপন্থী গণ সংগঠনের আহুত সাংবাদিক সম্মেলনে এ-বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানান সারা ভারত কৃষক সভার ত্রিপুরা রাজ্য কমিটির সাধারণ সম্পাদক পবিত্র কর। তাঁর কথায়, করোনা-র প্রকোপে গরীব অংশের মানুষের বেঁচে থাকার সমস্ত ব্যবস্থা ত্রিপুরা সরকার-কে সুনিশ্চিত করতে হবে।

মুখ্য সচিবকে দেওয়া চিঠিতে যে নয় দফা দাবি পেশ করা হয়েছে সে-বিষয়ে পবিত্র বাবু বলেন, সকলের জন্য সরকারি খরচে প্রতিষেধক প্রদান, আয়কর প্রদান করেন না এমন গরীব অংশের মানুষের জন্য যতদিন কোভিড অবস্থার উন্নতি না হয় ততদিন মাথা পিছু মাসে দশ কেজি চাল ও ৭৫০০টাকা প্রদান, রেগার বাইরে গিয়ে গ্রাম, শহর ও শহরতলীতে পরিবার পিছু দশ দিনের কর্ম সংস্থান সৃষ্টি, রাজ্যের বাইরে যে সমস্ত ত্রিপুরার শ্রমিক রয়েছেন এবং এই রাজ্যে যে সমস্ত বহিরাগত শ্রমিক রয়েছেন তাদের ঠিকানা, ফোন নম্বর জোগাড় করে একটি হেল্প ডেস্ক তৈরি করা, বিভিন্ন জেলা সদর ও প্রত্যন্ত এলাকায় প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম সহ কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্র করা, ডাক্তার সহ প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য কর্মী নিয়োগ, সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে কোভিড রোগীর বিনা পয়সায় চিকিৎসা, জুমিয়া পরিবারগুলিকে বীজ ও খোরাকির টাকা প্রদান করতে হবে। এছাড়া প্রত্যন্ত অঞ্চল সহ ত্রিপুরার বিভিন্ন জায়গায় পানীয় জলের সংকট চলছে। জলের সমস্ত উৎস সংস্কার করার দাবি-ও জানানো হয়েছে, বলেন তিনি।

আজ গনমুক্তি পরিষদের সভাপতি জীতেন্দ্র চৌধুরী বলেন, ভয়াবহ কোভিড পরিস্থিতিতে এডিসি এলাকায় জনগণের টাকা ব্যাপক লুটতরাজ চলছে। ভিলেজ কাউন্সিলের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও বিজেপি ও আই পিএফটি জোটের লোকেরা জোর করে অফিস দখল করে সরকারি অর্থ লুট করছে। এ নিয়ে নিয়মিত তিপরা মথা ও বিজেপি জোটের মধ্যে মারপিট চলছে। মানুষ আতঙ্কিত। এই লড়াই বন্ধ হওয়া উচিৎ বলে জীতেন্দ্র চৌধুরী দাবি করেন। কোভিড প্রসঙ্গে তিনি বলেন মানুষ মরছে আর নিরো বাঁশি বাজাচ্ছেন। এই মহামারী মোকাবিলায় সরকার কিছুই করেনি বলে তিনি অভিযোগ করেন।

এদিন সিআইটিইউ রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক শঙ্কর প্রসাদ দত্ত বলেন, পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য সরকার উদাসীন। অথচ কর্পোরেটদের সরকার ৬৪০০০কোটি টাকা ছাড় দিয়েছে। একই সাথে ভেকসিনের জন্য বাজেট বরাদ্দের টাকা খরচ করেন নি বলেও অভিযোগ করেন তিনি। রাজ্যের পরিস্থিতি উল্লেখ করে কৃষক নেতা পবিত্র কর বলেন, রাজ্যের অবস্থা ভয়াবহ। সরকার মানুষের প্রয়োজনে যেটা করার সেটা করছে না। সিদ্ধান্তহীনতায় ভূগছে সরকার। লক ডাউন প্রসঙ্গে পবিত্র কর বলেন, এটা সরকারের ওপর ছেড়ে দিয়েছি। মানুষের ভালোরজন্য তারা সিদ্ধান্ত নিন। সাংবাদিক সম্মেলনে ক্ষেত মজুর ইউনিয়নের রাজ্য সম্পাদকও দাবির প্রতি সহমত পোষণ করে বক্তব্য রাখেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *