ত্রিপুরায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাতের পর সাংবাদিকের পিঠে কাস্তে-হাতুড়ি তারা ক্ষতচিহ্ন এঁকে দিলেন দুস্কৃতি-রা

আগরতলা, ৬ মে (হি. স.) : রাজনৈতিক দল আশ্রিত দুষ্কৃতিকারী-রা কর্মরত সাংবাদিক-র উপর বর্বরোচিত হামলা করে-ই থেমে থাকেননি। তারা ওই সাংবাদিকের পিঠে কাস্তে-হাতুড়ি-তারা ক্ষতচিহ্ন এঁকে দিয়েছেন। দুস্কৃতি-দের হামলার ভয়াবহ কাহিনী আজ সাংবাদিক সম্মেলনে তুলে ধরেছেন ত্রিপুরার খোয়াই জেলায় তেলিয়ামুড়া মহকুমায় কর্মরত সাংবাদিক রাহুল দাস। নজিরবিহীন বর্বরোচিত ওই ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ফোরাম ফর ডেভেলপমেন্ট এন্ড প্রটেকশন অব মিডিয়া কমিউনিটি(এফডিপিএমসি)। সংগঠনের নেতৃবৃন্দ দোষীদের পুলিশ হেফাজতে রেখে বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার দাবি জানিয়েছেন। শুধু তাই নয়, দুস্কৃতিকারী-দের বিরুদ্ধে নাসা-য় মামলা নেওয়ার জন্য ত্রিপুরা সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

সাংবাদিক রাহুল দাস

গত ৩ মে কর্মস্থল থেকে বাড়ি ফেরার পথে সাংবাদিক রাহুল দাসের উপর হত্যার উদ্দেশে নৃশংস হামলা চালিয়েছিল রাজনৈতিক দল আশ্রিত কতিপয় দুঃস্কৃতি। ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার মাথায় ও পিঠে আঘাত করেছিল তারা। সাথে সাথেই তেলিয়ামুড়ার কর্মরত সাংবাদিকরা রাহুল দাসের চিকিৎসার উদ্যোগ নেওয়ার পাশাপাশি আসামীদের গ্রেপ্তারের দাবীতে থানার সামনে গিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন। কিন্তু কোন এক অজ্ঞাত কারণে ৫ মে দুপুর পর্যন্ত কোন আসামী গ্রেপ্তার না হওয়ায় আগরতলা থেকে সাংবাদিকদের এক প্রতিনিধি দল তেলিয়ামুড়ায় ছুটে যান। প্রতিনিধি দলের সদস্য-রা আসামীদের গ্রেপ্তারের দাবীতে থানার সামনে গণঅবস্থানে বসেন। চাপে পড়ে তেলিয়ামুড়ার থানার পুলিশ ঐদিন সন্ধ্যার আগেই ছয়জন আসামীকে গ্রেপ্তার করেন।

আজ আহত সাংবাদিক রাহুল দাস সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, আক্রমণকারী দুর্বৃত্তরা কংগ্রেস দল আশ্রিত এবং আক্রমণ চালিয়ে তার পিঠে কাস্তে-হাতুড়ি-তাঁরা ক্ষতচিহ্ন এঁকে দিয়ে তাকে রক্তাক্ত করেছে এবং তার মাথায় ধাঁরালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করেছে।

ওই ঘটনায় এফডিপিএমসি-র সাধারণ সম্পাদক সেবক ভট্টাচার্য ত্রিপুরা সরকারের কাছে দুটি দাবী উত্থাপন করেন। তিনি বলেন, গণতন্ত্রের কথিত চতুর্থস্তম্ভের একজন কর্মরত সাংবাদিকের উপর নজীরবিহীন আক্রমণ সংগঠিত হয়েছে। তাই আসামীদের পুলিশ হেফাজতে রেখে বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার মধ্য দিয়ে নজির সৃষ্টি করতে হবে। অন্যথা দুর্বৃত্তরা হুমকি দিয়ে মামলা দুর্বল করার অপকৌশল নিতে পারে, যা বর্তমানেও করে চলছে। সাথে তিনি যোগ করেন, গণতন্ত্রের চতুর্থস্তম্ভের এক সৈনিকের উপর নজিরবিহীন ও বর্বরোচিত হামলা সংগঠিত হয়েছে যা রাজ্য ও দেশের পক্ষে বিপদজনক। তাই, ‘নাসা’ প্রয়োগের দাবী জানাচ্ছে ফোরাম।

এছাড়াও সাংবাদিকদের উপর দীর্ঘকাল ধরে চলে আসা আক্রমণ প্রতিহত করতে অর্থাৎ গণতান্ত্রিক কাঠামোকে শক্তিশালী করার জন্য প্রতিটি মহকুমায় চিন্তাশীল ব্যক্তিত্ব , শিল্পী বুদ্ধিজীবী, তরুণ প্রজন্ম সহ সকল অংশের মানুষের কাছে ব্যপক জনমত গড়ে তুলতে আহ্বান জানিয়েছেন এফডিপিএমসি-র নেতৃবৃন্দ। সংগঠনের সভাপতি জয়ন্ত ভট্টাচার্য বলেন, সাংবাদিকের উপর হামলার বিরুদ্ধে সুশীল সমাজ-কে এগিয়ে আসতে হবে। সচেতন নাগরিক-দের প্রতিবাদী হতে হবে। কারণ, সাংবাদিক-রা মানুষের জন্যই সর্বক্ষণ নিজেদের উত্সর্গিত করে চলেছেন। সংগঠনের সদস্য তথা আগরতলা প্রেস ক্লাব-র সম্পাদক প্রণব সরকার বলেন, বিষয়টি ইতিমধ্যে মুখ্যমন্ত্রী-র গোচরে নেওয়া হয়েছে। আহত সাংবাদিক রাহুল দাস-কে উন্নত চিকিত্সার জন্য গি বি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। তিনি বলেন, সিপিএম পলিটব্যুরোর কাছে সমস্ত বিষয় পত্র মারফত জানানো হবে। হিন্দুস্থান সমাচার\সন্দীপ