একত্রিত হয়ে ত্রিপুরার করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা করা হবে : মুখ্যমন্ত্রী

আগরতলা, ২৪ এপ্রিল (হি. স.) ৷৷ ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব বর্তমান কোভিড পরিস্থিতি মোকাবেলায় রাজ্য সরকারের সঙ্গে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন৷ তিনি বলেন, গত বছর কোভিড-১৯ মোকাবেলায় ডাক্তার, নার্স সহ বিভিন্ন পেশার মানুষ, বিভিন্ন ক্লাব ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা রাজ্য সরকারের সঙ্গে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ায় আমরা দ্রুত একটা ভাল অবস্থায় পৌঁছে গিয়েছিলাম৷ আশা করি এবারও আমরা ভাল অবস্থায় থাকব৷ মুখ্যমন্ত্রী শ্রীদেব আজ আই জি এম হাসপাতালে একটি নতুন ব্লাড ব্যাঙ্ক, ওপিডি রেজিস্ট্রেশান কাউন্টার এবং ১০ শয্যা বিশিষ্ট একটি ক্যাজুয়েলিটি ব্লকের উদ্বোধন করে উদ্বোধকের ভাষণে একথা বলেন৷ এর আগে মুখ্যমন্ত্রী শ্রীদেব তাঁর সরকারি বাসভবনের সামনে এন এইচ আই ডি সি এল-এর দেওয়া ১০টি নতুন অ্যাডভান্স লাইফ সাপর্োট অ্যাম্বুলেন্সের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন৷


এদিন আই জি এম হাসপাতালে নতুন তিনটি পরিষেবার উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব বলেন, বর্তমানে রাজ্যে ৪৫ বছরের ঊধর্ে ব্যক্তিদের কোভিডের টিকা দেওয়া হচ্ছে৷ এ-ক্ষেত্রে করোনায় একজনও মারা না যান সে বিষয়ে আমাদের সকলকে সতর্ক থাকতে হবে৷ তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঘোষণা দিয়েছেন আগামী ১ মে থেকে ১৮ বছরের ঊদর্ে ছেলে-মেয়েদেরও কোভিড টিকাকরণ করা হবে৷ সাথে তিনি যোগ করেন, মে ও জুন এই দুইমাস যারা বিপিএল ও অন্ত্যোদয় কার্ড হোল্ডার তাদের বিনামূল্যে চাল দেওয়া হবে৷ রাজ্য সরকারও প্রধানমন্ত্রীর পথ অনুসরণ করবে৷


তাঁর কথায়, বর্তমানে রাজ্যের স্বাস্থ্য অবস্থা ভাল পরিস্থিতিতে রয়েছে৷ আই জি এম হাসপাতালে ক্যাজুয়েলিটি ব্লক চালু করা হয়েছে৷ এখানে ১০টি শয্যা রয়েছে৷ আগে একটিও ছিল না৷ এখানে এই প্রথমবার সেন্ট্রালাইজড ই-রেজিস্ট্রেশন চালু করা হয়েছে৷ এতে নতুন দিক খুলে গেছে৷ তাতে, আগরতলা সহ ত্রিপুরাবাসী উপকৃত হবেন৷ নতুন ব্লাড ব্যাঙ্কে পর্যাপ্ত রক্ত সংরক্ষণ করা যাবে৷
তিনি বলেন, এবারও আমরা সকলে মিলে কোভিড প্রতিহত করব৷ করোনার সাক্রমন কোনভাবেই বাড়তে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখা হবে৷ যারা বাইরে থেকে আসবেন তাদের সকলকে টেস্ট করানো হবে৷ তিনি বলেন, এই মুহুর্তে দেশের ১০টি রাজ্যে কোভিডের সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি৷ তাই আমাদের সকলকে আরও সতর্ক হয়ে চলাফেরা করতে হবে৷ কেন্দ্র ও রাজ্যের কোভিড-১৯-এর নির্দেশাবলী সঠিকভাবে মেনে চলতে হবে৷
অ্যাডভান্স লাইফ সাপোর্ট অ্যাম্বুলেন্সের প্রসঙ্গ উত্থাপন করে মুখ্যমন্ত্রী শ্রীদেব তাঁর বাসভবন প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় বলেন, কোভিড-১৯ মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় সরকার ত্রিপুরাকে ৫০টি লাইফ সাপোর্ট অ্যাম্বুলেস দিয়েছিল৷ আজ এখানে থেকে এন এইচ আই ডি সি এল-এর দেওয়া ১০টি অ্যাম্বুলেন্স রওয়ানা হল৷
তিনি বলেন, প্রতিটি এম্বুলেন্স-র মূল্য প্রায় ২৭ লক্ষ টাকা৷ ভেন্টিলেটর ছাড়া এতে মোট ৫৪টি সুবিধা রয়েছে৷ এতে জাতীয় সড়ক সংলগ্ণ রোগীরা ছাড়াও রাজ্যের অন্যান্য স্থানের রোগীরাও উপকৃত হবেন৷ বিশেষ অতিথির ভাষণে বিধায়ক ডা. দিলীপ কুমার দাস বলেন, আই জি এম-এ একটি অক্সিজেন প্ল্যান্ট বসানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে৷ সম্মানিত অতিথির ভাষণে স্বাস্থ্য দফতর প্রধান সচিব জে কে সিনহা বলেন, কোভিড চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় দফতর প্রস্তুত রয়েছে৷
আই জি এম হাসপাতালের অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে স্বাস্থ্য দফতরের অধিকর্তা ডা. শুভাশিষ দেববর্মা, পরিবার কল্যাণ ও রোগ প্রতিরোধক দপ্তরের অধিকর্তা ডা. রাধা দেববর্মা, জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের মিশন অধিকর্তা ডা. সিদ্ধার্থ শিব জয়সওয়াল, পশ্চিম জেলার জেলাশাসক ডা. শৈলেশ কুমার যাদব, আই জি এম-এর সুপারিন্টেনডেন্ট ডা. অমিতাভ চক্রবর্তী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন৷ মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনের সামনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এন এইচ আই ডি সি এল-এর অ্যাক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর এ কে কুশহা, জেনারেল ম্যানেজার আর পি সিং, স্বাস্থ্য অধিকর্তা, পরিবার কল্যাণ ও রোগ প্রতিরোধক অধিকর্তা প্রমুখ৷