নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২০ এপ্রিল৷৷ অষ্টমী তিথির পূণ্য তিথিতে রাজধানী আগরতলা শহরের দুর্গাবাড়ি দিঘী এবং প্রতাপগড়ে রাম ঠাকুর সুকলসংলগ্ণ হাওড়া নদীতে পুণ্যার্থীরা পুণ্য স্নান করেন৷ কথিত আছে অষ্টমী তিথিতে স্নান করলে পূণ্য লাভ হয়৷ জগত সংসার ও সন্তানের মঙ্গল কামনা করে পুণ্যস্নান করেন পুণ্যার্থীরা৷ পিতৃ পুরুষের উদ্দেশ্যে এ দিন পুণ্য স্নান করে তিল তর্পণের রীতিনীতিও রয়েছে৷ ধর্মপ্রাণ মানুষের বিশ্বাস এই পণ্য লগ্ণে পুণ্য স্নান করে তর্পণ করলে পিতৃপুরুষ জল পান৷ আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় ধর্মপ্রাণ মানুষ আজও সেই বিশ্বাস নিয়ে পুণ্য স্নান করে থাকেন৷ মঙ্গলবার রাজধানী আগরতলা শহরের জগন্নাথ বাড়ি দিতেও দেখা যায় সেই দৃশ্য৷প্রতাপগড়ে রাম ঠাকুর সুকল সংলগ্ণ হাওড়া নদীতে ঐতিহ্যবাহী পুণ্যস্নান লক্ষ করা গেছে৷ এদিন নারী-পুরুষ শহরের মানুষ পুণ্য স্নান করতে যান৷ পুণ্যস্নানকে কেন্দ্র করে ধর্মপ্রাণ মানুষের মধ্যে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা পরিলক্ষিত হয়৷ পণ্য স্থানের মাহাত্ম্য সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানান পুরোহিত৷
ঐতিহ্যবাহী বাসন্তী পুজোর শুক্লপক্ষের মহা অষ্টমী তিথিতে অষ্টমীর স্নান হয় খোয়াই নদীর অন্নপূর্ণা ঘাটে৷ মঙ্গলবার কাক ভোর থেকেই পূণ্যার্থীদের উপচে পড়া ভিড় পরিলক্ষিত হয় মহা অষ্টমীর স্নান যাত্রা উপলক্ষ্যে৷ এদিন পূণ্য স্নানের জন্য পুণ্যার্থীরা খোয়াই নদীর অন্নপূর্ণা ঘাটে আসেন দূর-দূরান্ত থেকে৷ পুণ্যার্থীরা স্নানযাত্রা সেরে অনেককে গীতা পাঠও করতে দেখা গিয়েছে৷ এছাড়াও এদিন বহু পুণ্যার্থী তাদের পূর্বপুরুষদের আত্মার সদগতি কামনার্থে তিল জল দান করতেও দেখা যায়৷ এ প্রসঙ্গে এক পুরোহিতকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি জানান তেলিয়ামুড়া বাঁশ বাজার স্থিত অন্নপূর্ণা ঘাটে পুণ্যার্থীরা মহা অষ্টমীর পূর্ণ লগ্ণে গঙ্গা পূজো এবং স্নান করে পূর্বপুরুষদের উদ্দেশ্যে তিল জল দান করেন৷এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে অপর পূজারী বলেন করোনার ব্যাপার দেখার দায়িত্ব প্রশাসনের৷ তবে এখানে অনেক পুণ্যার্থী যেমন সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখছে না ঠিক তেমনি অনেকের মুখেই মাক্স নেই৷তবে রাজ্য সরকারের জারি করা করোনার নীতি-নির্দেশিকাকে একপ্রকার কলাপাতা বানিয়ে স্বমহিমায় চলছে মহা অষ্টমীর স্নানযাত্রা৷ এতে পূণ্যার্থীদের ঘরে ঘরে করোণা ভাইরাসের আগমন ঘটলেও অস্বাভাবিকের কিছুই থাকবে না৷
অষ্টমী তিথির পূণ্য লগ্ণে উদয়পুরের গোমতী নদীতেও মঙ্গলবার পুণ্যার্থীরা পুণ্য স্নান করেছেন৷দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে উদয়পুর গোমতী নদীতে অষ্টমী তিথিতে পুণ্যস্নান হচ্ছে৷পুরুষ মহিলা সহ সব অংশের মানুষ মঙ্গলবার সকাল থেকে গোমতী নদীতে পুণ্য স্নান করতে ভিড় করেন৷ বাসন্তী পূজার অষ্টমী দিন গোমতী নদীতে স্নান করে পিতৃ পুরুষদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে জল অর্পণ করেন সন্তানেরা৷এই অষ্টমী স্নান ধর্মপ্রাণ মানুষের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ৷যেখানে নদী আছে সেখানেই এই অষ্টমী তিথিতে পুণ্যস্নান হয়৷সেখানে পিতৃ পুরুষদের উদ্দেশ্যে জল দেওয়ার পাশাপাশি অস্থি বিসর্জন করা হয়৷ এ উপলক্ষে মেলাও বসে৷ আদি অনন্তকাল থেকেই বাসন্তী পূজার অষ্টমীর দিন এই অষ্টম স্থান শুরু হয়৷ এ বিষয়ে তথ্য জানান নদীতে পিতৃ পুরুষদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এসে এক মহিলা৷প্রতি বছর এই দিন বিভিন্ন জায়গায় কীর্তন মেলা উৎসব অনুষ্ঠিত হত৷ এবছর শুধু নদীতে পিতৃ পুরুষদের সম্মান জানিয়ে জল তর্পণ করা হয়৷ করোনা ভাইরাস সংক্রমণ জনিত পরিস্থিতির কারণেই এবছর অনেকটা সংক্ষিপ্ত আকারে ধর্মীয় অনুষ্ঠান করা হয়৷

